আগে বরিশাল সিটি করপোরেশন এলাকায় কালেভাদ্রে মশক নিধন ওষুধ স্প্রে করা হলেও সাম্প্রতিক সময়ে ডেঙ্গু বিস্তার লাভ করায় করপোরেশনের মশক নিধন তৎপরতাও বেড়েছে।
তাই দুইভাবে মশক নিধন কার্যক্রম করছে বরিশাল সিটি করপোরেশন। ঝোপঝাড়-ড্রেন-নালা পরিষ্কারের পাশাপাশি প্রতিদিন প্রতিটি ওয়ার্ডে মশক নিধন হ্যান্ড স্প্রে করছে সিটি করপোরেশন। এছাড়া গুরুত্বপূর্ণ ড্রেনগুলোতে ফগার মেশিন দিয়ে স্প্রে করছে তারা।
বিসিসি সূত্র জানায়, বিগত মেয়রের ৫ বছর মেয়াদে মাত্র দুই বার কেনা হয়েছে মশক নিধন ওষুধ। ওই ওষুধ নিয়মিত স্প্রে হতো না নগরীর কোথাও। প্রতিটি ওয়ার্ডে মাসে একবার হ্যান্ড স্প্রে এবং ভিআইপি এলাকাগুলোতে ফগার মেশিন দিয়ে মধক নিধন করা হতো। তাও অনিয়মিত ছিল।
বর্তমান মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে প্রতিটি ওয়ার্ডে সপ্তাহে দু’বার এবং গুরুত্বপূর্ণ ড্রেনগুলোতে ফগার মেশিন দিয়ে মশক নিধন হতো প্রতিদিন। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা দেয়ায় নড়েচড়ে বসেছে কর্তৃপক্ষ। এখন প্রতিটি ওয়ার্ডে প্রতিদিন হ্যান্ড স্প্রে এবং গুরুত্বপূর্ণ ড্রেনগুলোতে প্রতিদিন ফগার মেশিন দিয়ে স্প্রে করা হচ্ছে বলে দাবি কর্তৃপক্ষের।
মশক নিধন কার্যক্রমের দায়িত্বে থাকা বিসিসি’র প্রধান পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা ভেটেরিনারি সার্জন মো. রবিউল ইসলাম বলেন, অন্যান্য জায়গায় মশক নিধনের জন্য কি ওষুধ দেয়া হয় সেটা তিনি জানেন না। তবে বরিশাল সিটি করপোরেশন মশক নিধনের জন্য এসিআই কোম্পানি থেকে সরাসরি দুই ধরনের ওষুধ কিনেছে। হ্যান্ড স্প্রে’র মাধ্যমে লারভিসাইট এবং ফগার মেশিন দিয়ে স্প্রে করা হয় এডালটিসাইট। লারভিসাইট মশার ডিম, বাঁচ্চা ও লার্ভা এবং এডালটিসাইট বড় বা উড়ন্ত মশা ধ্বংস করে করে।
এই ওষুধ মশা, বিশেষ করে ডেঙ্গু মশা নিধন করে কিনা বা এর কার্যক্ষমতা আছে কিনা জানতে চাইলে রবিউল ইসলাম বলেন, তারা মশার ডিম ও বাঁচ্চা এবং বড় মশা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করে দেখেছেন সিটি করপোরেশনের ওষুধ মশক নিধনে কার্যকর।
বিসিসি সূত্র জানায়, মশক নিধনের জন্য বর্তমানে দু’টি ফগার এবং ২৫টি হ্যান্ড স্প্রে মেশিন রয়েছে। প্রতিদিন সকালে ১৫টি এবং বিকেলে ১৫টি দল হ্যান্ড স্প্রে করছে নগরীর ৩০টি ওয়ার্ডে। হ্যান্ড স্প্রে’র কাজে নিয়োজিত রয়েছে ৪০ জন। এছাড়া দু’টি ফগার মেশিনে দুই শিফটে কাজ করছে ছয় জন। তাদের তদারকী করছেন তিনি (দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) এমনকি স্বয়ং সিটি মেয়রও।
সরাসরি মশক নিধন ছাড়াও মশা রোধে গত ডিসেম্বর থেকে নগরীর প্রতিটি ওয়ার্ডের ড্রেন, খাল, ঝোঁপ-জঙ্গল পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম চলছে। এই কার্যক্রমের আওতায় ১২০জন ঝোপ-জঙ্গল পরিষ্কার এবং ৮০জন ড্রেন-খাল পরিষ্কার করছে বলে জানিয়েছেন বিসিসির প্রধান পরিচ্ছনতা কর্মকর্তা মো. রবিউল ইসলাম।
সিটি করপোরেশনের এনেক্স ভবনের নিচ তলায় শনিবার দুপুরে গিয়ে এসিআই কোম্পানির দুই ব্যারেল লারভিসাইট এবং এডালটিসাইট দেখা গেছে। ওই ওষুধের মেয়াদ রয়েছে ২০২১ সাল পর্যন্ত।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন