চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) নির্বাচনে ভোটের মাঠে বড় দুই দলের কাউন্সিলর প্রার্থীদের ভোটের ‘ফ্যাক্টর’ হিসেবে রয়েছে ছোট রাজনৈতিক দলগুলো। ভোটের জয়-পরাজয়ের এসব বিষয়ে নানাভাবে টেনশনে রয়েছেন বড় দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কাউন্সিলর প্রার্থীরা। তবুও দুই দলের কাউন্সিলর প্রার্থীদের পাশাপাশি দলীয় নেতা-কর্মীরা প্রতিটি ওয়ার্ড-পাড়া মহল্লায় মেয়র পদে নৌকা-ধানের শীষের মতো কাউন্সিলর প্রার্থীদের জন্যও ভোট চেয়ে চষে বেড়াচ্ছেন।
নির্ঘুম প্রচারণায় থেমে নেই ছোটদলগুলোর মেয়র পদে নির্বাচন করা নেতা-কর্মীরাও। তবে মেয়র পদে ছোট দলগুলোর নিজস্ব প্রার্থী থাকলেও কাউন্সিলর পদে কোন প্রার্থী না থাকায়, তাদের ভোটার বা সমর্থকদের কাছে টানতে নানা কৌশলে কাজ করছেন কাউন্সিলর প্রার্থী ও দলীয় নেতা-কর্মীরা।
দলীয় ও নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামীলী-বিএনপির মতো দুই শীর্ষ রাজনৈতিক দলের সাথে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী হলেন চারটি ছোট রাজনৈতিক দল। ছোট চারটি রাজনৈতিক দলের মধ্যে রয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ এবং ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি)। এসব দলের মেয়র প্রার্থী থাকলেও নেই নগরীর ১৪টি সংরক্ষিত এবং ৪১টি সাধারণ ওয়ার্ডে কোন কাউন্সিলর প্রার্থী। শুধুমাত্র মেয়র পদে নির্বাচন করা নিয়ে তৃণমূলের নেতাদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের মাঝেও নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
সাবেক কাউন্সিলর ও সংগঠক জামাল হোসেন বলেন, বড় দলগুলোর ভোটযুদ্ধে থাকবে কাছাকাছি। বড় দলগুলোর মতো ছোট দলগুলোর মধ্যেও নিজস্ব ভোট ব্যাংক রয়েছে। কাউন্সিলর পদে এসব ভোটেও হবে নানা কলা-কৌশল। মেয়র পদে বড় দুই দলের মতো নিজ দলীয় প্রার্থী থাকলেও কাউন্সিলরে নেই কোন প্রার্থী। এতে ছোট রাজনৈতিক দলগুলোর দিকে ঝুকঁছে পুরুষ ও মহিলা কাউন্সিলর পদের প্রার্থীরা। তবে এখানে যোগ্য ও ত্যাগী কাউন্সিলর প্রার্থীদের মূল্যায়নের পাশাপাশি কিছু কিছু বিষয়ে টাকার খেলাও চলতে পারে বলে জানান তিনি। একই কথা বলেছেন একাধিক সাধারণ ভোটাররা।
ইসলামীক ফ্রন্ট বাংলাদেশের মেয়র প্রার্থী দলের দায়িত্বশীল নেতা ওয়াহেদ মুরাদ বলেন, নগরীর ৪১ ওয়ার্ড এবং থানায় সাংগঠনিক কমিটি থাকলেও প্রতিটি ওয়ার্ডেই উপযুক্ত প্রার্থীও ছিল। রাজনৈতিক কৌশলগত কারণে কাউন্সিলর প্রার্থী দেয়া হয়নি। এখানে দলের সিদ্ধান্ত মোতাবেক কাউন্সিলর প্রার্থীদের ভোট নিবেন নেতা-কর্মীরা। তবে মেয়র পদে নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সাংগঠকি অবস্থান এবং বাবার পরিচিতি ও সুনামও রয়েছেন। এই দুটিসহ নানাবিধ ঠিক মিলেই আশাবাদী তিনি।
ইসলামী আন্দোলন চট্টগ্রাম মহানগরের সভাপতি জান্নাতুল ইসলাম বলেন, প্রতিটি ওয়ার্ডেই কমিটি আছে, যোগ্য নেতাও আছেন। কিন্তু কাউন্সিলর পদে নির্বাচনে প্রার্থী দিইনি। কারণ এখানে মারামারিসহ নানাবিধ সমস্যা হবে, জোর করে কেন্দ্র দখল করবে, কেন শুধু শুধু প্রার্থী দিবো।
দলীয় ও নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, চসিকের নির্বাচনে এবার মেয়র পদে ৯ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এদের মধ্যে রয়েছেন দুই হেভিওয়েট দলের মধ্যে আওয়ামীলীগের মো. রেজাউলি করিম চৌধুরী, বিএনপির ডা. শাহাদাত হোসেন। অন্যদিকে ছোট চারটি দলের মধ্যে প্রার্থী রয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় শিল্প ও বানিজ্য সম্পাদক এবং চট্টগ্রাম মহানগর কমিটির সভাপতি জান্নাতুল ইসলাম, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় মহাসচিব এমএ মতিন, ইসলামিক ফ্রন্ট চট্টগ্রাম মহানগরের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ওয়াহেদ মুরাদ ও ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি) আবুল মনজুর।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল