করোনাভাইরাস ঠেকাতে সর্বোচ্চ সতর্ক রাজশাহী। সিটি করপোরেশন ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। যার অংশ হিসাবে রাজশাহী থেকে ঢাকা রুটের বাস বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বন্ধ হয়েছে রাজশাহীর সব বিনোদন কেন্দ্র, সভা-সমাবেশ। বাস বন্ধ থাকায় চাপ বেড়েছে ট্রেনে। এছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটি থাকায় ফাঁকা হতে শুরু করেছে শহর।
করোনা ভাইরাস ছড়ানোর শঙ্কায় রাজশাহী থেকে ঢাকাসহ সব দূরপাল্লার রুটে বাস চলাচল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বাস মালিক ও শ্রমিক ইউনিয়নের যৌথ সিদ্ধান্তে বৃহস্পতিবার থেকে রাজশাহী থেকে ঢাকাগামী সব বাস বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফলে রাজশাহী থেকে শুক্রবার দূরপাল্লার কোনো বাস ছেড়ে যায়নি। সেইসঙ্গে কোনো বাস রাজশাহীতে আসেনি। তবে রাজশাহী বিভাগের অভ্যন্তরীণ রুটে বাস চলাচল স্বাভাবিক আছে। যেসব যাত্রী আগে থেকেই দূরপাল্লার টিকিট কেটে রেখেছিলেন, তাদের টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে বাস কাউন্টারগুলোতে।
রাজশাহী বাস মালিক সমিতির নেতারা জানান, করোনাভাইরাসের প্রভাবে ইতোমধ্যেই মানুষের চলাচল কমে গেছে। বাসের যাত্রীদের মাধ্যমে কারোনাভাইরাস ছড়াতে পারে এ বিবেচনায় রাজশাহী থেকে ঢাকা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, খুলনা ও বরিশাল রুটে বাস চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মাহাতব উদ্দিন জানান, করোনাভাইরাস আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কায় শ্রমিক ও যাত্রীদের নিরাপত্তার স্বার্থেই দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ হওয়ায় চাপ বেড়েছে ট্রেনে। রাজশাহী থেকে দেশের বিভিন্ন রুটে চলাচলকারী ট্রেনগুলোতে স্ট্যান্ডিং টিকিটও বিক্রি করা হয়েছে। স্ট্রেশন মাস্টার আবদুল করিম জানান, বৃহস্পতিবার বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ট্রেনে চাপ বেড়ে যায়। বাধ্য হয়ে তারা স্ট্যান্ডিং টিকিট বিক্রি করেছেন।
সারা দেশের মতো রাজশাহীর সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়েছে ১৭ মার্চ। ১৮ মার্চ বন্ধ হয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এবং রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। এছাড়া নগরীর অন্য কলেজের ছাত্রাবাসও এদিন বন্ধ হয়ে গেছে। এই অবস্থায় আবাসিক হল ও মেস ছাড়ছেন শিক্ষার্থীরা। এতে ফাঁকা হয়ে পড়ছে রাজশাহী শহর।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ায় এবং করোনা আতঙ্কে রাজশাহী শহর প্রায় জনশূন্য। অটোরিকশা নির্ভর এ শহরে তাই অটোরিকশাও কমে গেছে। একদিকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা চলে যাচ্ছেন, অন্যদিকে প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। এতে বিপাকে পড়েছেন অটোরিকশাচালকসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল