২১ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ১৯:৩২

স্বাস্থ্যের গাড়িচালক মালেক ১৪ দিনের রিমান্ডে

আদালত প্রতিবেদক

স্বাস্থ্যের গাড়িচালক মালেক ১৪ দিনের রিমান্ডে

ফাইল ছবি

রাজধানীর তুরাগ থানার অস্ত্র ও বিশেষ ক্ষমতা আইনের দুই মামলায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গাড়িচালক আবদুল মালেক ওরফে বাদলকে ১৪ দিন রিমান্ডে নেওয়ার অনুমতি দিয়েছেন আদালত। আজ সোমবার ঢাকা মহানগর হাকিম শহিদুল ইসলাম রিমান্ডের এ আদেশ দেন।

এর আগে তুরগ থানা পুলিশ আসামি আবদুল মালেককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে হাজির করে দুই মামলায় সাত দিন করে মোট ১৪ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন। এসময় আসামির আইনজীবীরা রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। উভয় পক্ষের শুনানী শেষে আসামির জামিন আবেদন নাকচ করে বিচারক রিমান্ডের আদেশ দেন। 

রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, আসামি আবদুল মালেক স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের স্বাস্থ্য ও শিক্ষা বিভাগের মহাপরিচালকের গাড়িচালক। এছাড়াও তিনি বাংলাদেশ সরকারি গাড়িচালক সমিতির সভাপতি হিসেবে ২০-২৫ বছর যাবৎ দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তিনি তার কর্মস্থলে খুবই প্রভাবশালী। তিনি দীর্ঘদিন যাবৎ জাল টাকার ব্যবসাসহ নিজ কর্মস্থলে সাংগঠনিক পদবীকে কাজে লাগিয়ে বদলি ও নিয়োগ বাণিজ্য করে অবৈধভাবে বিপুল পরিমাণ বিত্ত-বৈভবের মালিক হন। তাই মামলার মূল রহস্য উদঘাটন, অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রের উৎস, জাল টাকার উৎস, পলাতক আসামিদের পূর্ণাঙ্গ নাম-ঠিকানা সংগ্রহসহ গ্রেফতার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য পেতে আবদুল মালেককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিন করে ১৪ দিনের রিমান্ডে নেওয়া প্রয়োজন। রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু দুই মামলাতেই সাত দিন করে ১৪ দিনেরই রিমান্ড মঞ্জুরের প্রার্থনা করেন।

সূত্র জানায়, প্রথম স্ত্রী নারগিসের নামে তুরাগ থানায় দক্ষিণপাড়া রমজান মার্কেটের উত্তর পাশে ছয় কাঠার ওপর সাত তলা (হাজী কমপ্লেক্স) আবাসিক ভবনে ২৪টি ফ্ল্যাট। ওই ব্লিডিংয়ের পাশেই রয়েছে ১০ কাঠার একটি প্লট। প্রথম স্ত্রীর মেয়ে বেবির নামে রয়েছে দক্ষিণ কামারপাড়া ৭০ রাজাবাড়ী হোল্ডিংয়ে ১৫ কাঠা জায়গার ওপর ইমন ডেইরি ফার্ম নামে একটি বিশাল গরুর খামার। কলাবাগানের হাতিরপুলে পৈতৃক সাড়ে ৪ কাঠা জমির ওপর ১০ তলা নির্মাণাধীন ভবন। স্বাস্থ্য অধিদফতরের ড্রাইভার্স অ্যাসোসিয়েশনের নামে একটি সংগঠন তৈরি করে সেই সংগঠনের সভাপতি হয়েছেন মালেক। কেবল ড্রাইভারদের নিয়োগ-বদলি ও পদোন্নতির নামে হাতিয়েছেন বিপুল পরিমাণ অর্থ। স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালককে (প্রশাসন) জিম্মি করে ডাক্তারদের বদলি, পদোন্নতি, তৃতীয়, চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের নিয়োগের নামে বিপুল পরিমাণ অর্থ আদায় করেছেন মালেক। 
ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে মেয়ে নওরিন সুলতানাকে কম্পিউটার অপারেটর, ভাই আবদুল খালেককে অফিস সহায়ক, ভাতিজা আবদুল হাকিমকে অফিস সহায়ক, বড় মেয়ের স্বামী রতনকে ক্যান্টিন ম্যানেজার, আত্মীয় কামাল পাশাকে অফিস সহায়ক, ভায়রা মাহবুবকে ড্রাইভার এবং ভাগ্নে সোহেল শিকারীকে ড্রাইভার পদে স্বাস্থ্য অধিদফতরে চাকরি দিয়েছেন তিনি। বর্তমানে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক ডা. এ এইচ এম এনায়েত হোসেনের গাড়িচালক হিসেবে তিনি কর্মরত। তবে নিজে গাড়িচালক হয়েও মহাপরিচালকের পাজেরো গাড়িটি হরহামেশাই ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করতেন। এছাড়া বিভিন্ন ব্যাংকে বিপুল পরিমাণ অর্থও জমা আছে তার। গ্রেফতারের সময় মালেকের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন, পাঁচ রাউন্ড গুলি, দেড় লাখ বাংলাদেশি জাল নোট, একটি ল্যাপটপ ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় র‌্যাব-১ এর পুলিশ পরিদর্শক (শহর ও যান) আলমগীর হোসেন বাদী হয়ে মামলা দু'টি দায়ের করেন।

 

বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর