২০ অক্টোবর, ২০২০ ২১:৫৮
৬৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সেমিনারে বক্তারা

জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভূমিকা জনমনে আস্থার সৃষ্টি করেছে

নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভূমিকা জনমনে আস্থার সৃষ্টি করেছে

জাতীয় প্রেস ক্লাবের ৬৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সিনিয়র সদস্যদের নিয়ে কেক কাটছেন ক্লাব নেতৃবৃন্দ।

জাতীয় প্রেস ক্লাবের ৬৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সেমিনারে বক্তরা বলেছেন, ‘পূর্ববাংলা রুখিয়া দাঁড়াও’ সম্পাদকীয় লিখে ছিষট্টির সাম্প্রদায়িকতা বন্ধে শক্ত ভূমিকা নিয়েছিল জাতীয় প্রেসক্লাব। ৬৯-এর গণঅভুত্থানে, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে, নব্বইয়ের গণঅভুত্থানসহ প্রতিটি স্বৈরাচার বিরোধী ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনে জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভূমিকা জনগণের মনে একটি আস্থার জায়গা সৃষ্টি করেছে, এখানে এসে কথা বলা যায়, সবাই কথা বলতে পারেন। এখানে এখনও পাশাপাশি দুই সেমিনার কক্ষে ওলামা-মাশায়েখরা ও জয়বাংলা সাংস্কৃতিক জোটের নেতা-কর্মীরা অনুষ্ঠান করতে পারেন। স্বাধীনতা বিরোধীরা ছাড়া প্রেসক্লাব সব দল-মত ও পথের মত প্রকাশের স্বাধীনতা অবারিত। জনগণের এই আস্থার জায়গাটা প্রেস ক্লাব ধরে রেখেছে। 

মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের ৬৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে আয়োজিত ‘জাতীয় প্রেস ক্লাবের ৬৬ বছর ও বাংলাদেশের সাংবাদিকতা’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। 

সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি সাইফুল আলম। দু’টি মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়। প্রথম প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রখ্যাত সাংবাদিক ও মুক্তিযোদ্ধা সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের মহাসচিব হারুন হাবীব। প্রবীণ সাংবাদিক আমানুল্লাহ অসুস্থ থাকায় তার লিখিত অপর প্রবন্ধটি পাঠ করেন অনুষ্ঠানের সঞ্চালক ও ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত। 

বক্তব্য রাখেন প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি শফিকুর রহমান এমপি, প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সেক্রেটারি ইহসানুল করিম, বিএইউজের সভাপতি মোল্লা জালাল, বাংলাদেশের খবরের সম্পাদক আজিজুল ইসলাম ভুইয়া, বিএইউজের সাবেক সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, প্রেস ক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি ওমর ফারুক, প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক স্বপন কুমার সাহা ও কামরুল ইসলাম চৌধুরী, বিশিষ্ট সাংবাদিক সোহরাব হাসান, জাহিদুজ্জামান ফারুক, ডিইউজে সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ ও সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপু, ডিইউজের সাবেক সভাপতি কাজী রফিক, সাব এডিটর কাউন্সিলের মুহতাসিম বিল্লাহ, কবি জাহাঙ্গীর ফিরোজ, তরুণ তপন চক্রবর্তী, শাহনাজ বেগম প্রমুখ। 

করোনা মহামারি কারণে সকল আনন্দ আয়োজন বাতিল করে এবার সংক্ষিপ্তভাবে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করা হয়। সেমিনার শেষে প্রেস ক্লাবের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কেক কাটা হয়।

প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি শফিকুর রহমান বলেন, ২০১৪ সালে রাজাকার মুক্ত প্রেস ক্লাব গড়ে তোলার আন্দোলন গড়ে তুলেছি। ২০১৫ সালে প্রেস ক্লাবে একসাথে সাড়ে ছয় শ’ সাংবাদিককে সদস্যপদ দিয়েছি। দেশে এখন নয় কোটি মিডিয়া। ফেসবুক বুক টুইটার হোয়াটস অ্যাপ সবই মিডিয়া। এখন ফেসবুক দেখে সংবাদপত্র বের করার পরিবেশ তৈরি হয়ে গেছে।

সাইফুল আলম বলেন, গণতন্ত্র রক্ষা ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে জনগণের বিশ্বাস ও আস্থার জায়গাটা এখনও জাতীয় প্রেস ক্লাব ধরে রেখেছে। সাংবাদিকতা পেশার ও নেতৃত্বে বিষয়ে তিনি বলেন, অনেকের পকেট ভারি হয়ে যাচ্ছে কিন্তু আকৃতিতে তারা ছোট হয়ে যাচ্ছে। প্রেস ক্লাব পেশার মর্যাদা রক্ষায় অঙ্গিকারাবদ্ধ।

ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, যে অসাম্প্রদায়িক চেতনা নিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, জাতীয় প্রেস ক্লাব তা ধারণ ও লালন করছে। স্বাধীনতা বিরোধীরা ছাড়া সকল দলমতের ঊর্ধে থেকে প্রেস ক্লাব মত প্রকাশের স্বাধীনতার পক্ষে দাঁড়িয়েছে। তিনি আরো বলেন, করোনাকালে সংবাদপত্র শিল্প একটি টার্মওয়েলের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, ঠিক। তবে খুব শীঘ্রই এই অবস্থার অবসান হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

মোল্লা জালাল বলেন, বিশ্বের কোথায় বাংলাদেশের মতো এতো ধনী সাংবাদিক পাবেন না। আবার বাংলাদেশের মতো এতো নিপীড়িত, নিষ্পেষিত ও নির্যাতিত সাংবাদিকও বিশ্বের কোথাও পাওয়া যাবে না। জাতীয় প্রেস ক্লাবের ছিষট্টি বছরে আমাদের অর্জন দৃশ্যমান। কিন্তু এসময়ে বিসর্জনের পরিমাণ কত, সেটা আমাদের বিচেনায় রাখতে হবে।

আজিজুল ইসলাম ভূঁইয়া পাকিস্তান আমলে সাম্প্রদায়িকতার ভয়াবহতা বন্ধ করতে সেসময়ে বাংলা ইংরেজি সকল দৈনিক প্রকাশিত ঐতিহাসিক সম্পাদকীয় ‘পূর্ববাংলা রুখখিয়া দাঁড়াও’ প্রকাশে জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভূমিকা তুলে ধরেন।

বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর