বরিশালের ঈদ বাজারে করোনাভীতি উধাও হয়ে গেছে। করোনা সংক্রামণ হতে পারে ধরে নিয়েই কেনাকাটার ধুম পড়েছে বরিশালের ঈদ বাজারে। বিশেষ করে গত শুক্রবার এবং শনিবার সর্বাধিক ভিড় ছিলো বরিশালর সব ঈদ মার্কেটে। বাজারে আসা ক্রেতাদের অধিকাংশ মাস্ক পড়লেও দোকানীদের দেয়া হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার কিংবা শারীরিক দূরত্ব একেবারেই মানছে না কেউ।
বিক্রেতারা বলছেন, সরকারের স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনের সব চেষ্টাই করছেন তারা। কিন্তু কেউ শুনছেন আবার কেউ শুনছেন না তাদের কথা। এ ক্ষেত্রে নিরুপায় তারা। এদিকে ঈদ বাজারের ভিড় সামলাতে না পড়লেও সবাইকে মাস্ক ব্যবহারে বাধ্য করতে নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছে জেলা প্রশাসন। নিজের স্বার্থেই সবাইকে স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছেন জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দার।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে বেসামাল পরিস্থিতি। ব্যবসায়ীদের দাবির প্রেক্ষিতে সরকার স্বাস্থ্য বিধি প্রতিপালনের শর্তে সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত দোকান শপিংমল খোলা রাখার অনুমতি দিয়েছে। কিন্তু ক্রেতার ভিড়ে স্বাস্থ্যবিধি উবে গেছে। সব চেয়ে বেশী ভিড় হচ্ছে নগরীর চকবাজার, কাঠপট্টি, হেমায়েত উদ্দিন রোড সহ সদর রোডের বিভিন্ন ব্র্যান্ডের শপিংমলগুলোতে। গরীবের ঈদ বাজার হিসেবে পরিচিত হাজী মহসিন হকার্স মাকেট, সিটি হকার্স মার্কেট এবং জেলা পরিষদ পুকুর পাড়ের খোলা উন্মুক্ত স্থানেও প্রচুর ভিড় দেখা গেছে। রাত ৮টা পর্যন্ত দোকান খোলা রাখার নির্দেশনা থাকলেও রাত ১২টা, এমনকি একটা দেড়টা পর্যন্তও দোকান খোলা রাখা হচ্ছে। বাজারে ক্রেতাদের একাংশ মাস্ক ব্যবহার করলেও অনেককে মাস্কবিহীন ঘোরাফেরা করছেন। এমনকি নাবালক শিশুদের নিয়েও ঈদের কেনাকাটা করতে দেখা গেছে। ক্রেতাদের ভিড়ে শারীরিক দূরত্ব এখন কাগুজে সরকারী আদেশে পরিনত হয়েছে। অবহেলা আর তাচ্ছিল্যের কারনে ঈদ বাজার থেকে করোনা সংক্রামণ আরও বাড়তে পারে ধরে নিয়েই কেনাকাটা করছেন ক্রেতারা। নিজেরা স্বাস্থ্য বিধি উপেক্ষা করলেও সবার স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলা উচিৎ বলে মনে করেন তারা। আগের বছরের চেয়ে এবারের ঈদ বাজারে সকল পণ্যের অতিরিক্ত দাম রাখার অভিযোগ করেছেন ক্রেতারা।নগরীর চকবাজারের অভিজাত শাড়ি প্রতিষ্ঠান ময়ুরীর মালিক মো. হানিফ শেখ জানান, করোনা সংক্রামণের ভয় তাদেরও আছে। এ জন্য মাস্ক ছাড়া কাউকে দোকানে ঢুকতে দিচ্ছেন না তারা। দোকানের সামনে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু কেউ হাত ধোয়ায় আগ্রহ দেখাচ্ছে না। শারীরিক দূরত্ব রক্ষা করতে বললেও অনেকে শুনছেন না। স্বাস্থ্যবিধি রক্ষার অনুরোধ কেউ কেউ ভালোভাবে নিলেও অনেকে বিষয়টি আমলে নিচ্ছে না। তবে বলার কাজ বলে যাচ্ছেন তারা।
ঈদ বাজারে স্বাস্থ্যবিধি রক্ষায় প্রতিনিয়ত অভিযান চালাচ্ছে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত। জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিশাত ফারাবী বলেন, ঈদ বাজারে ভিড় সামলানো যাচ্ছে না। তবে যাতে সবাই অন্তত মাস্ক ব্যবহার করে সেই চেষ্টা করছেন তারা।
এদিকে করোনা সংক্রামন এড়াতে নিজেদের স্বার্থেই স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার উপর গুরুত্বারোপ করেছেন বরিশালের জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দার। এজন্য সবাইকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
বিডি প্রতিদিন/ ওয়াসিফ
