স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে ‘বীরঙ্গনা’ স্বীকৃতি পেলেন বরিশালের হাজেরা বেগম। রবিবার জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে হাজেরা বেগমের হাতে মুক্তিযোদ্ধা সম্মানী ভাতার ৮২ হাজার টাকা তুলে দেন জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দার। বরিশাল মহানগরে হাজেরা বেগম একমাত্র নারী যিনি বীরঙ্গনা স্বীকৃতি পেয়েছেন। স্বীকৃতি ও ভাতার টাকা পেয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন হাজেরা বেগম।
জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, মাত্র ১৮ বছর বয়সে পাক সেনাদের হাতে নির্যাতিত হয়েছিলেন বীরঙ্গনা হাজেরা বেগম। তিনি বরিশালের উজিরপুর উপজেলার গুঠিয়া ইউনিয়নের দাসেরহাট গ্রামের দিনমজুর মৃত কামিন উদ্দিন চৌকিদারের মেয়ে। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তিনি গ্রামের বাড়ি থেকে বড় বোনের শ্বশুর বাড়িতে যাওয়ার জন্য বরিশালের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন। পথে বাবুগঞ্জ উপজেলার রহমতপুরে পাক বাহিনীর ক্যাম্পে ধরে নিয়ে হাজেরা বেগমকে নির্যাতন করা হয়।
বীরাঙ্গনার স্বীকৃতি পাওয়ার পর জেলা প্রশাসনের সভাকক্ষে একাত্তরের সেই ভয়াল স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পরেন হাজেরা বেগম।
তিনি বলেন, ৫ বছর আগে বরিশাল মহানগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের মাধ্যমে তিনি বীরাঙ্গনার স্বীকৃতি পাওয়ার আবেদন করেন। পরে তার আবেদন যাছাই-বাছাই শেষে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্প্রতি তাকে বীরাঙ্গনার স্বীকৃতি দিয়ে গেজেট প্রকাশ করে (নম্বর ৩৮১)। একই সঙ্গে ২০২০-২১ অর্থ বছরের জুলাই থেকে হাজেরা বেগমের অনুকূলে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা বরাদ্দ দিয়ে তা ছাড় করা হয়েছে।
তিন ছেলে ও এক মেয়ের জননী হাজেরা বেগম বরিশাল নগরীর ৩ নম্বর ওয়ার্ডের পুরানপাড়া এলাকার বাসিন্দা মো. জালাল হোসেনের স্ত্রী।
জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক সাংগঠনিক কমান্ডার এনায়েত হোসেন চৌধুরী বলেন, হাজেরা বেগমকে স্বীকৃতি দেয়ায় মুক্তিযোদ্ধারা খুশি হয়েছে। তার অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দার বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে নারীদের অসামান্য ত্যাগ ও কীর্তিগাথা নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে। হাজেরা বেগমের মতো মহিয়সী নারীদের পাশে রাষ্ট্র সবসময় থাকবে। জাতি তাদের শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরনে রাখবে।
বিডি প্রতিদিন/আল আমীন