অতিরিক্ত মাত্রায় করোনাভাইরাসে সংক্রমিত সীমান্তবর্তী জেলা ও উপজেলাগুলোতে করোনা প্রতিরোধ সামগ্রী বিতরণ করেছে আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপকমিটি।
আজ বুধবার দুপুরে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর কার্যালয়ে বিভাগীয় প্রতিনিধির মাধ্যমে এসব সামগ্রী বিরতণ করা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের তার সরকারি বাসভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন।
এসময় আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানকের সভাপতিত্বে কার্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, এস এম কামাল হোসেন, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সবুর, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা, শিক্ষা ও মানবসম্পদ সম্পাদক সামছুন্নাহার চাঁপা, কেন্দ্রীয় কার্যকরী সদস্য সৈয়দ আবদুল আউয়াল শামীম, ত্রাণ উপকমিটি সদস্য ডা. হেদায়েতুল ইসলাম বাদল, আখলাকুর রহমান মাইনু, মাহবুবুর রহমান, হারুন অর রশিদ, শাহ মোস্তফা আলমগীর, মো. দুলাল, রফিকুল ইসলাম রনি, হাশেম রেজা, সফিক বাবু, জয়ন্ত গোপ, ইমরান, মাছুম ও আবদুল বারেকসহ উপকমিটি সদস্যরা।
করোনা প্রতিরোধ সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে উন্নতমানের পিপিই, মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, এন্টিসেপটিক সাবান, উন্নতমানের হ্যান্ডওয়াস, টুথ পাউডার, মশার কয়েল ইত্যাদি। এছাড়াও জাতীয় দাফন কাফন কমিটি এবং জাতীয় মহাশশ্মান কমিটিকে উন্নত মানের পিপিই বিতরণ করা হয়।
সীমান্তবর্তী জেলা ও উপজেলাগুলো হচ্ছে লালমনিরহাট, পঞ্চগড়, কুড়িগ্রাম, দিনাজপুর, যশোর, ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা, সাতক্ষীরা, খুলনা মহানগর, খুলনা জেলা, মানিকগঞ্জ, বাগেরহাট, নড়াইল ও মাগুড়া। এছাড়াও উপজেলার ছাগলনাইয়া, ফেনী সদর, পশুরাম, চৌদ্দগ্রাম, শ্রীবর্দী, ঝিনাইগাতী, হালুয়াঘাট, ধোবাউড়া, আখাউড়া, কসবা, ভোলারহাট, গোমস্তাপুর, শিবগঞ্জ, নওয়াবগঞ্জ, গাংনী ও লালিতাবাড়ী।
ভার্চুয়ালি অংশ নিয়ে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, মহান স্রষ্টার উপর ভরসা রেখে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অতীতে অনেক দুর্যোগ মোকাবিলা করেছে আওয়ামী লীগ এবং এখন করোনার অভিঘাতও সকলের সহযোগিতায় মোকাবিলা করব ইনশাআল্লাহ।
প্রধানমন্ত্রী পরিস্থিতি মোকাবিলায় যে পদক্ষেপ নিচ্ছেন তার উপর আস্থা রাখার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি আরও বলেন, রাজনীতি হচ্ছে মানুষের জন্য। তাই মানুষের মুখের হাসি ফোটানোর জন্য দিনরাত পরিশ্রম করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এসময় সভাপতির ভাষণে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, সারাবিশ্ব যখন করোনায় আক্রান্ত তখন মুখ থুবড়ে পড়েছিল, বাংলাদেশও তার থেকে বিচ্ছিন্ন ছিল না। বাংলাদেশও এই মরণব্যাধি করোনায় আক্রান্ত হয়। কিন্তু মানবতার সফল নেত্রী রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা বাংলাদেশে জীবন এবং জীবিকা উভয়কে একইসাথে পরিচালনা করে, সঠিক ভূমিকা পালন করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। শুধু সরকারই নয়, দলগতভাবেও আওয়ামী লীগ জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছে। শুরু থেকেই ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ উপকমিটির সদস্যরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম বলেন, করোনা সংক্রমণের ব্যাপকতায় সরকার আগামীকাল থেকে দেশব্যাপী কঠোর লকডাউনের ঘোষণা দিয়েছে। মহামারির এ আগ্রাসী রূপ ঠেকাতে এবং নিজের সুরক্ষায় সচেতনতার সর্বোচ্চ নজির স্থাপন করতে হবে। মানুষের জীবনের সুরক্ষায় সরকারের নেয়া সিদ্ধান্ত কঠোরভাবে প্রতিপালন করতে হবে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সব সময় দুর্যোগে মানুষের পাশে ছিল। আগামীতেও থাকবে।
আরেক সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অর্থনৈতিকভাবে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। ভারতের চেয়ে মাথা পিছু আয়ে বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে গেছে। শেখ হাসিনার দেশপ্রেম ও সততার কারণেই এটা সম্ভব হয়েছে।
তিনি বলেন, দুর্যোগ মোকাবিলায় বিশ্বের প্রথম প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সততায় বিশ্বের সেরা প্রধানমন্ত্রী। মানবিকতায় বিশ্বের প্রথম প্রধানমন্ত্রী। বিশ্বের সেরা সফল দ্বিতীয় সেরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি আরও বলেন, করোনার শুরু থেকেই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মাঠে ছিল। অন্য কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। যখন সন্তানের লাশ বাবা ধরতো না, মায়ের লাশ ছেলেরা জঙ্গলে ফেলে রেখে চলে যায় তখন এগিয়ে আসে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এমনকি বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের লাশ যখন বিছানায় পড়ে ছিল, তখনও তাদের মরদেহ দাফন ও সৎকারে অংশ নিয়েছে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
সূচনা বক্তব্যে আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী বলেন, করোনাভাইরাস যখন আমাদের দেশে দেখা দেয়, তখন থেকেই দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী হাসিনার নেতৃত্বে আমরা (ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপকমিটি) জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি। করোনা প্রতিরোধ সামগ্রী বিতরণ, খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করে আসছি। নেত্রীর নির্দেশে আমরা সব সময় মানুষের পাশে ছিলাম। যতদিন করোনা থাকবে, ততদিন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের প্রত্যেক নেতাকর্মী পাশে থাকবে। কেউ না খেয়ে মারা যাবে না।
দলের দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, মানুষের কল্যাণেই আওয়ামী লীগের সৃষ্টি হয়েছে। শুরু থেকে আজ পর্যন্ত জনগণ থেকে কখনোই দূরে সরে যায়নি আওয়ামী লীগ। অন্যকোন রাজনৈতিক দল মানুষের কল্যাণে রাজনীতি করে না। করোনাভাইরাস শুরু হওয়ার পর থেকে দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা জনগণের পাশে ছিল। সে কারণে অনেক জাতীয় নেতৃবৃন্দসহ তৃণমূলের নেতাকর্মীরা প্রাণ হারিয়েছেন।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক