নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, মানুষের জন্য আজ শাসকদের কোনো দরদ নেই। আজকে দেশ ও দেশের মানুষের কোনো নিরাপত্তা নেই। মূলত কারাগারের ভেতরে আর বাংলাদেশের ভেতরে একই অবস্থা। যার প্রমাণ বেগম খালেদা জিয়া। আজ শনিবার বিকেলে নিজের লেখা ‘কারাগারে বাইশ মাস’ শীর্ষক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে নাগরিক প্রকাশ। এসএমএ কবীর হাসানের পরিচালনায় বিএনপির সিনিয়র যুগ্মমহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ, সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক, বইয়ের লেখক মাহমুদুর রহমান মান্না, শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া, নাগরিক ঐক্যের ডা. জাহেদ উর রহমান ও শাকিলউজ্জামান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে মৎস্যজীবী দলের সদস্য সচিব মো. আবদুর রহিম, ওমর ফারুক পাটোয়ারী, ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মেহবুব মাসুম শান্ত ও মো. আবুল হাসানসহ নাগরিক ঐক্যের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এসময় মাহমুদুর রহমান মান্না আরও বলেন, বেগম খালেদা জিয়া কি মুক্ত- নাকি বন্দী? শুধু কারাগারের ভেতরে দুর্নীতি হয় তা নয়- কারাগারের বাইরে আরো বেশি দুর্নীতি হয়। আজকে চিকিৎসা ব্যবস্থা এতো খারাপ যে মানুষ চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে ত্রাহি অবস্থা। আমরা চাই একটি মানবিক ও কল্যাণ রাষ্ট্র। আমরা সেই কল্যাণের রাজনীতি করি।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেন, বর্তমান সরকার রাজনীতির সকল শিষ্টাচার ভঙ্গ করেছে। রাজনীতিতে একটা শৃংখলা ও সম্মানবোধ ছিলো। কিন্তু এই সরকার সকল শৃংখলা ও নিয়ম নষ্ট করে ফেলেছে। এখন মাদকসেবীর যে সম্মান রাজনীতিবিদদের সেটাও নেই। মাহমুদুর রহমান মান্নার সাথে যে আচরণ করা হয়েছে- তা অত্যন্ত নিদারুণ, নিষ্ঠুর এবং নিন্দনীয়।
তিনি বলেন, মান্না ভাই যে বই লিখেছেন তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও প্রাসঙ্গিক। লেখকের যে অন্তর্দৃষ্টি সেটা প্রতিফলিত হয়েছে তার বইয়ে। তবে বইয়ের ভেতরে জিয়াউর রহমান ও স্বৈরাচার এরশাদকে নিয়ে যে তুলনা করা হয়েছে এটা ঠিক নয়। জিয়াউর রহমান ও এরশাদ কখনোই এক হতে পারে না। কারণ জিয়াউর রহমান একজন সেক্টর কমান্ডার। বাকশালের গুহা থেকে গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছেন জিয়াউর রহমান। তিনি জীবনের ঝুঁকি মোকাবিলা করে যুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়ে দেশ স্বাধীন করেছেন। তিনি বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা থেকে শুরু করে দেশের সকল উন্নয়নের রূপকার।
ড. শাহদীন মালিক বলেন, কোনো দেশের সরকার কর্তৃত্ববাদী হলে তারা আইনশৃংখলা বাহিনীর উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। ধাপে ধাপে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা একটা সংঘবদ্ধ অপরাধ চক্র গড়ে তোলে। আমরাও ধাপে ধাপে সেদিকেই এগোচ্ছি। এ নিয়ে আমি এখন খুবই আতঙ্কিত। আজকে একটা মামলায় জামিন করাতে গিয়ে কতো মানুষ যে নিঃস্ব ও ফতুর হচ্ছে তার যেন শেষ নেই। এ বিষয়ে আদালত কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক
