কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার ধামশ্রেণী ইউনিয়নের সুরিরডারা গ্রামে স্বামীহীনা মহেছেনার পাশে দাঁড়িয়েছে র্যাব-১৩। ওই গ্রামের ইমাম আলীর স্ত্রী তিনি। স্বামী ছেড়ে গেছেন প্রায় ছয় বছর আগে। এরপর দুই ছেলে নিয়ে স্বামীর বাড়িতেই বসবাস করছিলেন মহেছেনা। ৫/৬ মাস আগে বড় ছেলে দ্বিতীয় বিয়ে করে চলে যান অন্যত্র। সাথে নিজের করা ঘরটি ভেঙ্গে নিয়ে গেলেও ছেলেকে রেখে যান মা মহেছেনার কাছে।
গৃহহীন মহেছেনার আশ্রয় হয় ছোট ছেলের গোয়াল ঘরে গরুর সঙ্গে। এই তীব্র শীতেও দশ বছর বয়সী নাতিসহ গরুর সঙ্গে একই ঘরে বসবাস করছেন ষাটোর্ধ মহেছেনা। মহেছেনার বাড়িতে গোয়াল ঘরের একদিকে একটি মাচা আর একদিকে শোয়ার বিছানা। মাঝখানের কোণায় গরু রাখার স্থান। গোবর-মূত্রের গন্ধ নিয়ে সেই ঘরেই বসবাস করছেন তিনি। যেন নিজ ভূমিতে পরবাসী মহেছেনা।
ছোট ছেলে বাড়িতে থাকলেও স্বল্প আয়ের কারণে মায়ের জন্য আলাদা ঘর তৈরি করে দেওয়ার সামর্থ্য নেই তার। বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় ছেলের গোয়াল ঘরেই আশ্রয় হয়েছে তার। মহেছেনার উক্ত ঘটনাটি র্যাব-১৩ এর অধিনায়কের দৃষ্টিগোচর হয়। মানবিক বিবেচনায় কালক্ষেপণ না করে র্যাব ফোর্সেস এর পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক বসবাসের জন্য একটি ঘর নির্মাণ করে দেয়া হয়। মঙ্গলবার সকালে মহেছেনাকে ঘর বুঝিয়ে দেয়া হয়। দুপুরে এসব তথ্য র্যাব -১৩ এর পক্ষ থেকে জানানো হয়।
ঘর পেয়ে মহেছেনা খুশি হয়ে বলেন, শীতের খুব কষ্ট হচ্ছিল। ঘর পেয়ে একটু শান্তিতে থাকতে পারব। আল্লাহ র্যাবের ভাল করুক। এদিকে ধামশ্রী ইউনিয়নের সদ্য পরাজিত চেয়ারম্যান রাকিবুল হাসান বলেন, আমরা ওই মহিলার খোঁজ নিতে পারিনি। র্যাব ঘর করে দিয়েছে, এটা খুব ভাল উদ্যোগ। ওই মহিলা যাতে অন্যান্য সরকারি সুবিধা পায় এ জন্য চেষ্টা করব।
অধিনায়কের পক্ষে র্যাব-১৩ এর সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মাহমুদ বশির আহমেদ জানান, জঙ্গিমুক্ত, মাদকমুক্ত এবং সন্ত্রাসমুক্ত স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে র্যাবের যে অঙ্গীকার এর পাশাপাশি র্যাব তার মানবিক মূল্যবোধের জায়গা থেকে অসহায়, দুঃস্থ ও দারিদ্র পীড়িত মানুষের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। এতে কিছুটা হলেও মহেছেনার জীবনের দুর্দশার অবসান ঘটবে বলে র্যাব ফোর্সেস কামনা করছে।
বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর