ধর্ষণের কথা ফাঁসের ভয়ে নারী ইউপি সদস্যকে হত্যার অভিযোগে মো. আব্দুল লতিফ শেখকে (৬০) গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে মুন্সিগঞ্জ থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। আজ শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ানবাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
তিনি বলেন, ১৮ সেপ্টেম্বর বগুড়ার এক ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত মহিলা আসনের সদস্য নিখোঁজ হন। পরে ২২ সেপ্টেম্বর একটি ইটভাটার পাশে গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় তার অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। উক্ত ঘটনায় ভিকটিমের ভাই বাদি হয়ে গত ২৩ সেপ্টেম্বর বগুড়ার ধুনট থানায় একটি মামলা দায়ের করে। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনায় গোয়েন্দা নজরদারীর ধারাবাহিকতায় হত্যাকারী আব্দুল লতিফ শেখকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতার লতিফকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে র্যাব কর্মকর্তা জানান, হত্যাকাণ্ডের প্রায় ৭ মাস আগে ইউনিয়ন পরিষদে কম্বল বিতরণের একটি অনুষ্ঠানে ভিকটিমের সঙ্গে লতিফের পরিচয় হয়। পরে ভিকটিমের সঙ্গে লতিফ ঘনিষ্ঠতার চেষ্টা করেন। এ সময় তারা ইউনিয়ন পরিষদ ও আশেপাশের এলাকায় বিভিন্ন সময় সাক্ষাৎ করেন। এরপর ১৮ সেপ্টেম্বর লতিফ কৌশলে ভিকটিমকে ধুনটের মথুরাপুর এলাকার একটি ইট ভাটার পাশে নির্জন স্থানে নিয়ে যান। সেখানে আলাপ চারিতার কৌশলে ভিকটিমকে পানীয়ের সঙ্গে চেতনানাশক ওষুধ খাইয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। এ সময় ভিকটিম তাকে বাধা দেন। একপর্যায়ে লতিফ ভিকটিমকে ধর্ষণ করেন। পরে ভিকটিম ধর্ষণের বিষয়টি পরিবার এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে জানিয়ে দিলে কারাভোগের আশঙ্কায় ভিকটিমের গলায় ওড়না পেঁচিয়ে তাকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করেন। এরপর মরদেহটি একটি ইটভাটার পাশে রেখে পালিয়ে যান।
তিনি আরও বলেন, আসামি আব্দুল লতিফ শেখ ধর্ষণের কথা ফাঁসের ভয়ে ওই নারী ইউপি সদস্যকে হত্যা করে গ্রেফতারের আশঙ্কায় পালিয়ে গিয়ে প্রথমে ছদ্মবেশে শ্রমিক হিসেবে নোয়াখালীতে কিছুদিন কাজ করেন। এরপর মুন্সিগঞ্জে আত্মগোপন করেন লতিফ। লতিফের বিরুদ্ধে ২০০৯ সালে বগুড়ায়ও একটি ধর্ষণ মামলা রয়েছে এবং সে মামলায় তিনি ৭ মাস কারাভোগ করেছেন।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক