রংপুরের পীরগাছা উপজেলায় আর্সেনিক পরীক্ষার অপেক্ষায় রয়েছে ২৩ হাজার নলকূপ। প্রয়োজনীয় বরাদ্দ না আসায় নলকূপগুলো পরীক্ষার কাজ শুরু হয়নি। বিশুদ্ধ পানি না কি আর্সেনিকযুক্ত পানি পান করছে, তা জানতে পারছেন না স্থানীয় জনগণ।
সূত্রে জানা গেছে, ২৪ বছরর আগে ১৯৯৮ সালে রংপুরের পীরগাছা উপজেলায় অতিরিক্ত মাত্রায় আর্সেনিক ধরা পড়ে। সে সময় আক্রান্ত অনেকে কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেলেন। ওই সময় প্রায় ৭৫ হাজার পরিবারের ব্যবহৃত নলকূপের পানি পরীক্ষা করে ৮ দশমিক ০৫ মাত্রার আর্সেনিকের অস্তিত্ব পাওয়া গিয়েছির এবং প্রায় ৩০০ আর্সেনিকোসিস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা হয়। এলাকার নলকূপগুলোয় ৭০ ফুট লেয়ারের মধ্যেই আর্সেনিকের সন্ধান পাওয়া যায়। এ কারণে সংশ্লিষ্ট বিভাগ আর্সেনিক পাওয়া নলকূপগুলো সিলগালা করে দিয়ে বেশি গভীরতর ৩৬৫টি হস্তচালিত নলকূপ, ৬৩টি তারা পাম্প-১ এবং সাতটি তারা পাম্প-২ স্থাপন করে। ওই সব নলকূপ ও পাম্পের অধিকাংশ অকেজো অবস্থায় রয়েছে।
সূত্র মতে, পীরগাছা উপজেলায় ২৩ হাজারের ওপরে নলকূপ রয়েছে। এসব নলকূপের কয়টিতে আর্সেনিকের অস্তিত্ব রয়েছে, তা জানতে পরীক্ষার বিকল্প নেই। কিন্তু প্রয়োজনীয় বরাদ্দ না থাকায় পরীক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে না। বিভিন্ন সময়ে পীরগাছা উপজেলায় আর্সেনিকের অস্তিত্ব পাওয়া যাচ্ছে-এমনটাই দাবি স্থানীয়দের।
তবে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের কর্মকর্তা বলছেন, পীরগাছায় এখন আর আর্সেনিকের প্রকোপ নেই। ওই কর্মকর্তা বলেন, সম্প্রতি আর্সেনিক রয়েছে এমন অভিযোগ ওঠায় একটি এলাকার ২২টি নলকূপের পানি পরীক্ষা করে দেখা গেছে সেখানে আর্সেনিকের উপস্থিতি নেই।
পীরগাছা ছাড়াও মিঠাপুকুর ও কাউনিয়া উপজেলায় কয়েকটি ইউনিয়নে আর্সেনিকের অস্তিত্ব রয়েছে বলে জানা গেছে। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের মতে, অন্যান্য জেলার চেয়ে রংপুর জেলার পানি বিশুদ্ধ। আর্সেনিক নিয়ে ভয়ের কিছু নেই।
রংপুর জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী পঙ্কজ কুমার সাহা বলেন, আড়াই হাজার নলকূপের পানি পরীক্ষা করা হয়েছে। তবে উপজেলার ২৩ হাজারের বেশি নলকূপ পরীক্ষার পরিকল্পনা রয়েছে। এগুলো আগামী অর্থ বছর নাগাদ পরীক্ষা শুরু করা হবে। তিনি বলেন, এক সময় পীরগাছায় আর্সেনিকের প্রকোপ থাকলেও তা এখন নেই বললেই চলে। তবে সব নলকূপ পরীক্ষা করার পরেই প্রকৃত অবস্থা জানা যাবে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই