১৩ আগস্ট, ২০২২ ১৭:২৪

ভরা মৌসুমে চালের দাম আবারও বাড়ছে

পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা দায়ী করছেন অটো রাইসমিলকে

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর

ভরা মৌসুমে চালের দাম আবারও বাড়ছে

ফাইল ছবি

বোরো ধানের ভরা মৌসুমে রংপুরসহ উত্তরাঞ্চলে চালের দাম আবারও নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়ছে। ক্রেতা ও খুচরা ব্যবসায়ীদের অভিযোগ হাতে গোনা কিছু অটো রাইসমিল ও মজুদদার সিন্ডিকেট করে চালের বাজার নিয়ন্ত্রণ করছেন। পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছেন বিদ্যুতের লোড শেডিং, জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি, পরিবহন খরচ বেশি হওয়ায় অটো রাইসমিলগুলো ঠিক মত চাল সরবরাহ করতে না পারায় দাম বেড়েছে।

রংপুর মাহিগঞ্জ বাজারসহ বিভিন্ন চাল বাজারের খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এক সপ্তাহ আগে মিনিকেট চালের (৫০ কেজি) বস্তা ছিল তিন হাজার টাকা, সেই চাল বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে তিন হাজার ২০০ টাকা, ব্রিধান-২৮ (৮৪ কেজি) বস্তা ছিল তিন হাজার ৩০০ টাকা, বর্তমানে তিন হাজার ৫০০ টাকা, ব্রিধান-৪৯ চালের বস্তা (৮৪ কেজি) তিন হাজার ৩০০ টাকা থেকে বেড়ে তিন হাজার ৫০০ থেকে তিন হাজার ৬০০ টাকা, পাইজাম (৫০ কেজি) দুই হাজার ১০০ টাকার স্থলে প্রতি বস্তা বিক্রি হচ্ছে দুই হাজার ৩০০ থেকে দুই হাজার ৪০০ টাকা, মোটা চাল বিভিন্ন প্রজাতির প্রতিকেজি ৫২ থেকে ৫৬ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। চালের এ অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির পেছনে কারসাজি রয়েছে বলে মনে করছেন পাইকারি বাজারের ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, ছোট ছোট হাসকিং মিল ও চাতালগুলো এখন আর চলে না। বড় অটো রাইস মিল মালিকরা কমদামে ধান কিনে মজুদ করে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে দাম নিয়ন্ত্রণ করছে। 

ব্যবসায়ীদের সূত্রে জানা গেছে, উত্তরাঞ্চলের প্রায় ২০০ অটোরাইস মিল মালিক নিজেদের ইচ্ছেমত মজুদের পাহাড় গড়ে তুলে চালের দাম নিয়ন্ত্রণ করছে। অটোরাইস মিলগুলো লাখ লাখ মণ ধানের মজুদ করে নিজেদের ইচ্ছেমত চালের দাম নির্ধারণ করছে। এছাড়া কিছু মজুদদার ব্যবসায়ীও চাল মজুদ করে দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। 

রংপুরের মাহিগঞ্জসহ দিনাজপুরের পুলহাট, বগুড়া, নওগাঁ ও রাজশাহী থেকে প্রতিদিন শত শত ট্রাক চাল ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যাচ্ছে। ক্ষুদ্র চাল ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, অটো রাইসমিলের মালিকরা চালের সরবরাহ কমিয়ে দিয়ে বেশি দামে চাল বিক্রি করছে।

ক্রেতা মাহামুদুল করিম বলেন, কদিন আগে যে চাল ২৭০০ টাকা বস্তা কিনেছে তা এখন ৩২০০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। তিনি এ জন্য বাজার মনিটরিং ব্যবস্থাকে দায়ী করছেন। 
 
মাহিগঞ্জ বাজারের পাইকারি চাল ব্যবসায়ী ফরুক চৌধুরী বলেন, জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি, বিদ্যুতের লোড শেডিং ও পরিবহন খরচ বাড়ায় অটো রাইসমিলগুলো ঠিকমত চাল সরবরাহ করতে পারেছ না, তাই চালের দাম বেড়েছে। 

রংপুর চালকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, চালের দাম বৃদ্ধির জন্য অটো রাইসমিলগুলো দায়ী। অটো রাইসমিল মালিকরা আগে থেকে ধানের মজুদ গড়ে তুলে বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে। ফলে অটোরাইস মিলগুলোর সাথে পাল্লা দিতে না পেরে ছোট ছোট ব্যবসায়ীরা অসহায় হয়ে পড়েছে।


বিডি প্রতিদিন/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর