রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের বিভিন্ন নেতাকর্মীকে বেধড়ক মারধর করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সরকার পতনের পর থেকে কোন ছাত্রলীগ নেতাকে ক্যাম্পাসে ঢুকতে দেয়নি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। গত সোমবার ছাত্রলীগের সাথে সম্পৃক্ত ও বৈষম্যবিরোধী আআন্দোলনের বিরুদ্ধে অবস্থানকারী নেতাদের রুম থেকে তাদের বেড ও জিনিসপত্র হল থেকে বের করে আগুন লাগিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা। এসময় তাদের রুম থেকে বিভিন্ন অস্ত্র ও মাদকদ্রব্য পাওয়া যায়।
মঙ্গলবার সকালে ছাত্রলীগ নেতা আলতাবুর ক্যাম্পাসে প্রবেশ করলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা পাকড়াও করে গণধোলাই দেয়। পরে চুল কেটে গলায় জুতার মালা পড়িয়ে ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করেন শিক্ষার্থীরা। এছাড়াও প্রাক্তন ছাত্রলীগের নেতা এবং বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত সেকশন অফিসার তারিক আহমেদ রুদ্র এবং উজ্জ্বল আহমেদকে গণধোলাই দেয় শিক্ষার্থীরা। ছাত্রলীগ কর্মী তরিকুল ইসলাম তুরান ক্যাম্পাসে এসে রুমে ঢুকলে, রুমে তল্লাশি চালান শিক্ষার্থীরা। এসময় বিভিন্ন ব্রান্ডের মদ জব্দ করে গণধোলাই দেন তারা। কোটাবিরোধি আন্দোলনের সময় এসকল ছাত্রলীগ নেতাকে সরাসরি অস্ত্রহাতে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অবস্থান করতে দেখা যায়।
এছাড়াও গণধোলাইয়ের শিকার হয়েছেন শেকৃবি ভেটেরিনারি স্টুডেন্ট এসোসিয়েশনের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট রাহাত মোল্লা। প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীরা জানান, ব্যাক্তিগত আক্রোশের জেরে জুনিয়র শিক্ষার্থীদের দ্বারা তাকে মারধর করানো হয়েছে। এটা তাদের কর্মসূচি/প্ল্যান এর অংশ ছিলো না। তাদের ব্যানারকে কাজে লাগিয়ে একদল শিক্ষার্থী এটা করেছে।
এরপরই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়কবৃন্দ। এতে উল্লেখ করেন ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতন, ৫ আগস্ট ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থান এর পর থেকে ক্যাম্পাসে এক দল স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী তাদের ব্যক্তিগত আক্রোশ ও উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার জন্য ক্যাম্পাসে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করতে চাচ্ছে। যার দায় কোনভাবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এর সহযোদ্ধারা নিবে না।
আমরা স্পষ্টভাবে বলে দিতে চাই এই ধরনের অরাজক ও নৈরাজ্যপূর্ণ কাজের সাথে বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা জড়িত নয়, ক্যাম্পাসের কেউ যদি পরবর্তীতে এই ধরনের কর্মকাণ্ডে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যুক্ত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায় তার বিরুদ্ধে কড়া একশন নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক তৌহিদ আহমদ আশিক বলেন, ছাত্রলীগের যারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করেছে এবং সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অস্ত্র হাতে নিয়েছিলো শুধুমাত্র তাদেরকে কোনোভাবেই ক্যাম্পাসে ঢুকতে দেওয়া হবে না। অলরেডি তাদের বেডপত্র হল থেকে বের করে দেয়া হয়েছে। সাধারণ শিক্ষার্থীরা কঠোরহস্তে তাদের ক্যাম্পাসে প্রবেশ দমন করবে। এর বাইরে কেউ ব্যক্তিগত আক্রোশে মারধর করলে এর দায়ভার তাকেই নিতে হবে।
বিডি প্রতিদিন/এএ