নারী গৃহকর্মীর সঙ্গী হিসেবে সৌদি আরবে নেওয়া হচ্ছে পুরুষ কর্মীও। নারীর গৃহকর্মের পাশাপাশি তাদেরও অন্য কাজ দিয়ে সঙ্গে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কোনো রিক্রুটিং এজেন্সি এভাবে দুজন নারী ও দুজন পুরুষ পাঠাতে পারলে ওই এজেন্সি আরেকজন পুরুষকে ‘বোনাস কর্মী’ হিসেবে পাঠাতে পারবে। এ ক্ষেত্রে ওই ‘বোনাস কর্মীকে’ হতে হবে নারী কর্মীর নিকটাত্মীয় (স্বামী, বাবা, ভাই, সন্তান)। আগামী দু-এক দিনের মধ্যে এমন একজনকে প্রথম ‘বোনাস কর্মী’ হিসেবে সৌদি আরবে পাঠানো হচ্ছে। প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, সৌদি আরবে বাংলাদেশি নারী গৃহকর্মীদের যৌন নির্যাতনের শিকার হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। একই কারণে দেশে আসার পর তাদের সংসারও ভাঙছে। তাই প্রচুর চাহিদা থাকা সত্ত্বেও সৌদি আরবে নারী গৃহকর্মী পাঠানো যাচ্ছে না। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য নারী গৃহকর্মীর সঙ্গে তার স্বামী, বাবা, ভাই, সন্তান পুরুষ সঙ্গী হিসেবে যাচ্ছেন। চলতি মাসেই এ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। নারীর গৃহকর্মের পাশাপাশি পুরুষ সঙ্গীকে অন্য কাজ দিয়ে পাশে রাখার ব্যবস্থা করা হবে। এজন্য অতিরিক্ত কোনো খরচ করতে হচ্ছে না। এদিকে সৌদি আরবে নারীর সঙ্গে গিয়ে পুুরুষ সঙ্গীও বিপদে পড়তে পারেন— এমন সমস্যা সমাধানের জন্য দুজন নারী ও দুজন পুরুষের সঙ্গে তাদের রক্ত সম্পর্কের একজন পুুরুষকে ‘বোনাস কর্মী’ হিসেবে পাঠানো যাবে। এই বোনাস কর্মীকেও তাদের আশপাশে বা একই বাড়িতে কাজ দেওয়া হবে। এজন্য বোনাস কর্মীকে কোনো খরচ দিতে হবে না। কারণ যে বাড়িতে ওই বোনাস কর্মীকে নেওয়া হবে, ওই বাড়ির মালিক তাকে কর্মক্ষেত্র পর্যন্ত নেওয়ার জন্য ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা খরচ করছেন। এক কথায়, সৌদি আরবে দুজন গৃহকর্মীর পুরোপুরি নিরাপত্তা ও নির্ভরতার জন্য তিনজন নিকটাত্মীয় পুরুষ পাশে দাঁড়াতে পারবেন।
প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয় সূত্র মতে, কিশোরগঞ্জের মহসিন হোসেন মিয়া প্রথম ‘বোনাস কর্মী’ হিসেবে আগামী দু-এক দিনের মধ্যে সৌদি আরব যাচ্ছেন। মন্ত্রণালয় থেকে তাকে ছাড়পত্রসহ সব ধরনের সহযোগিতা করা হয়েছে। মহসিন মিয়াকে সৌদি আরব নিচ্ছে পেন্টাগন ইন্টারন্যাশনাল নামের একটি রিক্রুটিং এজেন্সি। এ ব্যাপারে পেন্টাগন ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী শাহাদাত হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘এ পর্যন্ত আমরা বহু প্রশিক্ষিত গৃহকর্মী সৌদিতে পাঠিয়েছি। এসব নারীর বাবা, ভাই, স্বামী বা সন্তানকেও সৌদিতে পাঠানো হয়েছে এবং হচ্ছে। প্রতি দুজন নারী গৃহকর্মীকে পাঠানোর কারণে আমরা একজন বোনাস কর্মী পাঠানোর সুযোগ পাচ্ছি। এই বোনাস কর্মীকে ওই নারীদের আশপাশে বা একই বাড়িতে বিভিন্ন কাজে নিযুক্ত করা হবে।’ বোনাস গৃহকর্মীর জন্য কোনো খরচ করতে হয় না জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সৌদি রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে বাংলাদেশি গৃহকর্মী পাঠানো প্রস্তাব দেওয়া হয়। সেই দেশের রিক্রুটিং এজেন্সি আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে।’