বারবার আলটিমেটাম আর সময় বাড়ানোর মধ্যে টালবাহানা চলছে সাভারে চামড়াশিল্প নগরীতে ট্যানারি স্থানান্তরে। চলতি জুন মাসে শেষ হতে যাচ্ছে চামড়াশিল্প নগরীর প্রকল্পের মেয়াদ। এ সময়ের মধ্যে রাজধানীর হাজারীবাগ থেকে সাভারের চামড়াশিল্প নগরীতে স্থানান্তর হচ্ছে না একটি ট্যানারিও। ১৩ বছর ধরে এ নিয়ে জটিলতা চলছে। শেষ পর্যন্ত এ মেয়াদে ট্যানারি স্থানান্তরের আশা করেছিলেন অনেকেই। কিন্তু তা সম্ভব হচ্ছে না। মালিকরা ট্যানারি স্থানান্তরের জন্য ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় চাইছেন। প্রকল্পের চলতি অর্থবছর এডিপি বরাদ্দ ব্যয়ের অগ্রগতির হার মাত্র ৭ শতাংশ। মোট প্রকল্প ব্যয়ের অগ্রগতির হার মাত্র ৩৩ শতাংশ।
সংশ্লিষ্টরা জানান, সাভারে ২০০ একর জমিতে ২০৫টি প্লটে হাজারীবাগের ১৫৫টি ট্যানারি স্থানান্তরের কথা। এর মধ্যে ১২টি ছাড়া সব ট্যানারির অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ চলছে। এ কাজ শেষ করেই হাজারীবাগ থেকে যন্ত্রপাতি স্থানান্তর প্রক্রিয়া শুরু হবে। একই সঙ্গে স্থাপন করা হবে নতুন যন্ত্রপাতি। এ পর্যন্ত ১০টির মতো ট্যানারি যন্ত্রপাতি স্থাপন প্রক্রিয়া শুরু করেছে। অনেক ট্যানারিতে স্থাপনের জন্য নতুন যন্ত্রপাতি আমদানি প্রক্রিয়ায় রয়েছে। ১৭টি ট্যানারি বিদ্যুৎ সংযোগ চেয়ে আবেদন করেছে। বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. শাহীন আহমেদ বলেন, ট্যানারি স্থানান্তরের জন্য এখন সবাই কাজ করছেন। তবে স্থানান্তর করতে সময়ের প্রয়োজন হবে। আগামী জুলাই ও আগস্টের মধ্যে ১০ থেকে ১৫টি ট্যানারি যেতে পারে। জুনে মেয়াদ শেষ হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ প্রকল্পের মেয়াদ আরও বাড়াতে হবে। ট্যানারি মালিকদের যাওয়ার সুযোগ দিতে হবে। ট্যানারি মালিকরা জোরেশোরে কাজ করছেন। ডিসেম্বরের মধ্যে সবাই যেতে পারবেন। এ পর্যন্ত ট্যানারি স্থানান্তরের সুযোগ দেওয়ার দাবি জানান তিনি। প্রকল্প পরিচালক আবদুল কাইয়ুম জানান, এ পর্যন্ত শিল্পনগরীর ১৭টি ট্যানারি বিদ্যুৎ সংযোগ পেতে টাকা জমা দিয়ে আবেদন করেছে। এর মধ্যে একটি ট্যানারিতে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে। অন্যগুলো এ মাসের মধ্যে সংযোগ পাবে। তিনি আশা করছেন, জুনের মধ্যে ২০টির মতো ট্যানারি স্থানান্তর হতে পারে। অন্যান্য ট্যানারির কাজও দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। তবে ট্যানারির কাজ শেষ না হলেও চীনা প্রতিষ্ঠানের সিইটিপি নির্মাণ হলে প্রকল্প শেষ করা হবে। তিনি বলেন, ট্যানারি স্থানান্তর করার দায়িত্ব মালিকদের। তারা ট্যানারি না সরালেও হাজারীবাগের সব সুযোগ-সুবিধা বন্ধ করা হবে। প্রকল্প পরিচালক বলেন, কেন্দ্রীয় বর্জ্য শোধনাগারের (সিইটিপি) কাঠামো নির্মাণকাজ জুনের মধ্যে শেষ হবে। এ ছাড়া দুটি মডিউলের ইলেকট্রোমেকানিক্যালের কাজ জুনের মধ্যে শেষ করে চালু করা হবে। এ দুটি মডিউল চালু হলে ৪৮ থেকে ৫০টি ট্যানারির বর্জ্য পরিশোধন করা সম্ভব হবে।