শনিবার, ১১ মার্চ, ২০১৭ ০০:০০ টা

ভুয়া দলিলে দখলের চেষ্টা পল্টন মহিলা কলেজ

ছাত্রী ভর্তিতেও নিরুৎসাহিত করার অভিযোগ

আকতারুজ্জামান

পুরানা পল্টন মহিলা কলেজের জমি আছে, ভবন আছে, শিক্ষক আছে। শুধু নেই ছাত্রী। একটি পক্ষ জাল দলিল তৈরি করে পুরনো কলেজটি দখলে নিতে চাইছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তারা কলেজে ছাত্রী ভর্তিতেও    অভিভাবকদের নিরুৎসাহিত করছে। তাই ১৯৬৪ সালে প্রতিষ্ঠিত এ কলেজ এখন ছাত্রী সংকটে পড়েছে। ২৬ জন শিক্ষক থাকলেও নেই শিক্ষার্থী। বিজ্ঞান, মানবিক, বাণিজ্য তিন শাখা মিলে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে ছাত্রী রয়েছে কাগজে-কলমে মাত্র ৯০ জনের মতো। প্রকৃত সংখ্যা আরও কম। গত বছর কলেজটি    থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল মাত্র ৩৫ জন।

দেশ স্বাধীনের আগে ১৯৬৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এই মহিলা কলেজ। প্রথমে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাঠদান চললেও পরে পল্টনে স্থানান্তরিত হয়। কলেজটিতে শুরু থেকেই একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে পাঠদান চলছে। সাফল্যের চিত্রও ছিল লক্ষ্য করার মতো। কিন্তু বর্তমানে যেন প্রায় অস্তিত্বই হারিয়ে ফেলছে অর্ধশত বছরেরও বেশি পুরনো এ কলেজ। ক্রমেই হারিয়ে যাচ্ছে এই রাজধানীর প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত পুরানা পল্টন মহিলা কলেজ। সম্প্রতি দেখা গেছে, বিজ্ঞান, মানবিক, বাণিজ্য তিন শাখা মিলে ছাত্রী রয়েছে মাত্র ৯০ জনের মতো। অথচ শিক্ষকই রয়েছেন ২৬ জন। কলেজ কর্তৃপক্ষ বলছে, একটি চক্র কলেজটি ভুয়া ও জাল দলিল দেখিয়ে দখল করতে চাইছে। ছাত্রী ভর্তিতেও অভিভাবকদের নিরুৎসাহিত করছে তারা। তবে এ চক্রের কারও নাম বলতে রাজি হয়নি কর্তৃপক্ষ। ভিতরে গিয়ে দেখা গেছে, সাজানো-গোছানো এ ছোট্ট পরিসরের কলেজে অন্তত ১২টি শ্রেণিকক্ষ রয়েছে। ছাত্রীদের জন্য রয়েছে হোস্টেলও। কলেজ কর্তৃপক্ষ জানান, ছাত্রীরা পড়ছে বিনা বেতনেই। কলেজ অধ্যক্ষসহ শিক্ষক রয়েছেন মোট ২৬ জন। প্রতিটি বিষয়ের শিক্ষকরা নিয়মিত ক্লাস ছাড়াও প্রাইভেট পড়ান। এত সুযোগ-সুবিধা সত্ত্বেও ছাত্রীদের দেখা মিলছে না এই কলেজে। স্বয়ং অধ্যক্ষ বলছেন, রাজধানীর প্রাণকেন্দ্রে  অবস্থিত এ কলেজে অন্তত দুই থেকে আড়াই হাজার শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত থাকার কথা। কিন্তু একটি চক্র ছাত্রীদের এখানে ভর্তি হতে নিরুৎসাহিত করছে। এ জন্য ক্রমেই কলেজের  প্রাণ ছাত্রীসংখ্যা কমছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেল, কলেজের জমিটি ছিল সুপ্রভা সেন নামে এক ব্যক্তির। নিঃসন্তান হওয়ায় রামকৃষ্ণ মিশনে এ জমি দান করেন তিনি। পরে সেগুনবাগিচা থেকে শূন্য দশমিক ৪৪ একরের (খতিয়ান নম্বর ৫২, দাগ নম্বর ২১০) এ জমিতে কলেজের কার্যক্রম চালু হয়। সম্পত্তিটি ঢাকা মহানগরের জরিপে কলেজের নামে রেকর্ডভুক্তও করা হয়।

সর্বশেষ খবর