সোমবার, ১১ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা

বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমেছে মূল্যস্ফীতি ও রাজস্ব বেড়েছে

বাজেট বাস্তবায়ন অগ্রগতির প্রান্তিক প্রতিবেদন

নিজস্ব প্রতিবেদক

চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বরে) গত বছরের একই সময়ের চেয়ে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ প্রায় এক বিলিয়ন মার্কিন ডলার (৯৮ কোটি মার্কিন ডলার) কমেছে। সাধারণ ও খাদ্য মূল্যস্ফীতি উভয়ই গড়ে কমলেও খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। এ সময়ে আমদানি ব্যয় বেড়েছে ৩.২১ শতাংশ। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়ন ২.৩২ শতাংশ কমেছে। তবে এ সময়ে এনবিআর এর রাজস্ব আয় ১২.৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেলেও এনবিআর বহির্ভূত কর রাজস্ব আহরণ কমেছে। চলতি অর্থ বছরের প্রথম প্রান্তিকে রাজস্ব আয় ৫২ হাজার ২৭২ কোটি টাকা, যা লক্ষ্যমাত্রার ১৫.৪ শতাংশ। এ ছাড়া রপ্তানি আয়ও বেড়েছে ১.২৮ শতাংশ। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে গতকাল সংসদের বৈঠকে ‘বাজেট বাস্তবায়ন ২০১৮-১৯ : প্রথম প্রান্তিক (জুলাই-সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত বাস্তবায়ন অগ্রগতি ও আয়-ব্যয়ের গতিধারা এবং সামস্টিক অর্থনৈতিক বিশ্লেষণ সংক্রান্ত প্রতিবেদন’ উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। বৈদেশিক রিজার্ভের ব্যাপারে প্রতিবেদনে মন্ত্রী বলেন, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ মোটামুটি স্থিতিশীল রয়েছে, যা ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে ছিল ৩ হাজার ১৯৬ কোটি মার্কিন ডলার (৩১.৯৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার) যা দিয়ে ৬.৪ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব। তবে মন্ত্রীর দেওয়া তুলনামূলক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০১৭-১৮ অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বরে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল ৩ হাজার ২৯৪ কোটি মার্কিন ডলার। চলতি বছরে প্রথম প্রান্তিকে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৯৮ কোটি মার্কিন ডলার কমেছে। অর্থমন্ত্রী বলেন, গত বছরের প্রথম প্রান্তিকের তুলনায় চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে সাধারণ ও খাদ্য মূল্যস্ফীতি উভয়ই গড়ে কমেছে। স্বাভাবিক সরবরাহ পরিস্থিতি, সহায়ক মুদ্রানীতি এবং বিশ্ববাজারে খাদ্যপণ্য ও জ্বালানি তেলের কম মূল্যস্ফীতি পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে।

 অন্যদিকে ডলারের বিপরীতে টাকার মূল্যমান হ্রাস পাওয়ায় খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি গড়ে বিগত অর্থ বছরের একই সময়ের তুলনায় উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।

পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে সাধারণ মূল্যস্ফীতি ছিল ৬.১২ এবং খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ৭.৮৭। চলতি অর্থ বছরে প্রথম প্রান্তিকে তা কমে যথাত্রমে ৫.৬৮ ও ৬.৭৪ এ নেমেছে। তবে খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি ৩.৪৪ থেকে বেড়ে চলতি অর্থ বছরে ৪.০৭ এ দাঁড়িয়েছে। অর্থাৎ খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি বেড়েছে তুলনামূলক শূন্য দশমিক ৬৩ শতাংশ।

প্রতিবেদনে অর্থমন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, বর্তমান অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে অর্থনীতির খাত ভিত্তিক অগ্রগতির যে চিত্র তুলে ধরা হলো তাতে আশাবাদী হওয়ার পূর্ণ সুযোগ রয়েছে। যেমন এই প্রান্তিকে রাজস্ব আয়ে প্রবৃদ্ধি ও সরকারি ব্যয় বৃদ্ধি হয়েছে এবং ব্যক্তি খাতের ঋণপ্রবাহের প্রসার ঘটেছে। খাদ্য মূল্যস্ফীতিসহ সার্বিক মূল্যস্ফীতি সহনীয় পর্যায়ে ছিল। উন্নত অর্থনীতির দেশসমূহের প্রবৃদ্ধির ফলে রপ্তানি বৃদ্ধি পেয়েছে এবং প্রবাস আয়ে উচ্চ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। আবার চলমান মেগা প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে অগ্রগতি ও বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে উন্নতি সাধিত হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর