শিরোনাম
শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

দুর্নীতিবাজ পুলিশ ও আমলাদের ধরা হচ্ছে না কেন

সংসদে আলোচনা

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকারদলীয় এমপিরা বলেছেন, প্রকাশ্য আদালতে রাজাকার সাঈদীর বিচার হয়েছে, বিচারে তার শাস্তি হয়েছে। এখন কিছু লোক হুমকি দিয়ে বলছে, ঘরে ঘরে সাঈদী বেরিয়ে আসবে। একজন বলছে, এটা এখন তীর-ধনুকের যুগ নয়, এখন একে ফোর-টি সেভেনের যুগ। এটি প্রচ্ছন্ন নয়, প্রকাশ্য হুমকি। এদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। বিরোধী দলের সদস্যরা বলেন, দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে শুধু রাজনীতিবিদদের ধরা হচ্ছে, কিন্তু জড়িত পুলিশ-আমলা-প্রশাসনের কর্মকর্তাদের ধরা হচ্ছে না। শুধু রাজনীতিবিদরা জেলে যাবে, প্রশাসনের জড়িতরা জেলে যাবে না- তা হতে পারে না।

ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বি মিয়ার সভাপতিত্বে গতকাল সংসদ অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তারা এ দাবি জানান। এ সময় স্পিকারের আসনে থাকা ডেপুটি স্পিকার বিষয়টি খতিয়ে দেখতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানান। আলোচনায় অংশ নেন সরকারি দলের সদস্য মুহাম্মদ শফিকুর রহমান, ফরিদুল হক খান, মুহাম্মদ ইকবাল হোসেন, মোসলেম উদ্দিন, এ কে এম ফজলুল হক ও জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য মুজিবুল হক চুন্নু। মুহাম্মদ শফিকুর রহমান তার বক্তব্যে সম্প্রতি মিজানুর রহমান আজহারী ও তারেক মনোয়ার নামক দুজন ব্যক্তির যুদ্ধাপরাধী দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর পক্ষ নিয়ে ওয়াজ মাহফিলে দেওয়া হুমকির বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধকালে জেনারেল জিয়াউর রহমান কোথায় যুদ্ধ করেছেন তার সুনির্দিষ্ট তথ্য দিতে বিএনপির প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, জিয়াউর রহমান কোথাও যুদ্ধ করেননি, শুধু খুনি মোশতাকের সঙ্গে ষড়যন্ত্রে ব্যস্ত ছিলেন।

 জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক বলায় বিএনপির সংসদ সদস্যদের কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, জেনারেল জিয়া কখনোই স্বাধীনতার ঘোষক নন, একজন পাঠক মাত্র। শেষের দিকে মুজিবনগর সরকারের কাছে ষড়যন্ত্র ধরা পড়ার পর মোশতাককে মন্ত্রিত্ব থেকে বাদ দেওয়া হয়। আর জিয়াউর রহমানকে নিষ্ক্রিয় করে রাখা হয়।

সরকারি দলের অন্য সংসদ সদস্য মুহাম্মদ ইকবাল হোসেন বলেন, বিএনপিতে দুটি ধারা। এক রাজনৈতিক, অন্যটি হচ্ছে বাণিজ্যিক। বাণিজ্যিক ধারার নেতৃত্ব দেন বর্তমানে এতিমের টাকা আত্মসাৎ করে কারাগারে সাজা ভোগ করা খালেদা জিয়া ও দুর্নীতি করে লন্ডনে পলাতক তারেক রহমানরা।

জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট হয়ে যাচ্ছে। দেখার কেউ নেই, সরকার কেন তা বন্ধ করতে পারছে না? তিনি বলেন, ক্যাসিনো কর্মকান্ড কি শুধু রাজনীতিবিদরা করেছে? এখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কেউ জড়িত নেই? শুধু যুবলীগের সম্রাট জড়িত, অন্য কেউ জড়িত নেই? জড়িত যেই হোক সবাইকে ধরতে হবে। শুধু রাজনীতিবিদদের সমালোচনা করা হয়। ঢাকার অভিজাত এলাকায় বড় বড় বাড়িগুলোর মধ্যে কজন রাজনীতিবিদের, আর কতগুলো আমলা-প্রশাসনের কর্মকর্তাদের- সে হিসাব নেওয়া হোক। তা দেখলেই সব পরিষ্কার হয়ে যাবে। শুধু আমরা রাজনীতিবিদরা জেলে যাব, প্রশাসনের জড়িতরা জেলে যাবে না- তা হতে পারে না।

দেশে ধর্ষণ বেড়ে যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বিরোধী দলের এই সদস্য বলেন, বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ডে এত লোক মারা যাচ্ছে, ধর্ষকরা কেন মারা যায় না? আমরা বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ডের কনসেপ্টকে সাপোর্ট করি না। কিন্তু ধর্ষণের বিষয়ে গুরুত্ব বোঝাতে আমি এ কথাটি বলেছি। এটা নিয়ে অনেক কথা হয়েছে। ধর্ষণের বিচারে যে আইন রয়েছে তা যথেষ্ট নয়। এ আইনের সংশোধন এনে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর