রবিবার, ২২ মার্চ, ২০২০ ০০:০০ টা

নজরদারিতে একাধিক ব্যক্তি

করোনাভাইরাসের গুজব ছড়িয়ে অস্থিতিশীলতার চেষ্টা

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

নজরদারিতে একাধিক ব্যক্তি

করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবকে পুঁজি করে চট্টগ্রামে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির অভিযোগ উঠেছে একটি বিশেষ মহলের বিরুদ্ধে। এ বিশেষ মহল এর জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও মোবাইল অ্যাপভিত্তিক নানা ম্যাসেঞ্জার অ্যাপকে ব্যবহার করছে। বিশেষ মহলের সৃষ্ট গুজবে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে চট্টগ্রামের সাধারণ জনগণ। এ অবস্থায় গুজব সৃষ্টিকারীদের কয়েকজনকে নজরদারিতে রেখেছে পুলিশ। এর মধ্যে গ্রেফতার হয়েছেন দুজন। সিএমপির কমিশনার মাহাবুবর রহমান বলেন, ‘করোনাভাইরাস নিয়ে গুজব প্রতিরোধ করতে সিএমপির সাইবার ইউনিট কাজ করছে। এরই মধ্যে দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আরও কয়েকজন নজরদারিতে রয়েছে। তাদের যে কোনো সময় গ্রেফতার করা হবে।’ চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার রশিদুল ইসলাম বলেন, ‘করোনাভাইরাস নিয়ে গুজব ঠেকাতে প্রস্তুতি নিয়েছে জেলা পুলিশ। প্রত্যেক থানা পুলিশকে সতর্ক থাকতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে গুজব না ছড়াতে এবং করোনা নিয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করতে বিভিন্ন জায়গায় পুলিশের পক্ষ থেকে লিফলেট ও মাইকিং করা হচ্ছে।’ প্রশাসনের দাবি, করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবকে কাজে লাগিয়ে দেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করতে মাঠে নেমেছে একটি বিশেষ মহল। দেশে করোনাভাইরাস রোগী চিহ্নিত হওয়ার পর থেকেই সুপরিকল্পিতভাবে গুজব ছড়াতে মাঠে নেমেছে ওই মহল। এ কাজে তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, ইনস্ট্রাগ্রাম, টুইটার, মোবাইল ম্যানেঞ্জার অ্যাপস হোয়াটসঅ্যাপ, ইমু, ভাইবারসহ নানা অ্যাপসকে ব্যবহার করছে। এরই মধ্যে ২০ থেকে ৪০ সেকেন্ডের কয়েকটি ভয়েস রেকর্ড ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও ম্যাসেঞ্জার অ্যাপসে। এ ভয়েস রেকর্ডগুলোতে অসংখ্য রোগী চিহ্নিত এবং মৃত্যুর গুজব ছড়ানো হচ্ছে। এরই মধ্যে ভাইরাল হয়েছে কথিত রোহানকে উদ্দেশ করে একটি ভয়েস রেকর্ড। যাতে দাবি করা হয় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অসংখ্য রোগী চিকিৎসাধীন আসেন এবং করোনায় অনেকের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। অথচ এ ধরনের গুজবের কোনো সত্যতা পায়নি স্বাস্থ্য বিভাগ। এরই মধ্যে গত ১৭ মার্চ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে করোনাভাইরাস আক্রান্ত হওয়ার গুজব ছড়িয়ে র‌্যাবের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন কামরুল হাসান রুমি নামে এক ব্যবসায়ী। এর আগে ১৩ মার্চ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে করোনাভাইরাস আক্রান্ত হওয়ার গুজব ছড়িয়ে দেওয়ার অপরাধে আবু বক্কর মোহাম্মদ রেজা নামে এক প্রকৌশলীকে গ্রেফতার করে বোয়ালাখালী থানা পুলিশ। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, একটি বিশেষ মহল করোনা প্রাদুর্ভাবকে কাজে লাগিয়ে দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির প্রচেষ্টায় রয়েছে। এরই মধ্যে বেশ কিছু ব্যক্তিকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাদের নজরদারিতে রাখা হয়েছে।

যুবদল নেতা গ্রেফতার : করোনাভাইরাস নিয়ে ফেসবুকে গুজব ছড়ানোর অভিযোগে ইফতেখার আদনান নামে যুবদলের এক নেতাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গতকাল বিকালে তাকে গ্রেফতার করে সিএমপি’র পাঁচলাইশ থানা পুলিশ। গ্রেফতার হওয়া আদনান চট্টগ্রাম মহানগর যুবদলের সাহিত্য বিষয়ক সম্পাদক। তিনি নগরীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসক হিসেবে কর্মরত আছেন।

পাঁচলাইশ থানার ওসি আবুল কাশেম ভুইয়া বলেন, গ্রেফতার হওয়া ইফতেখার আদনান কয়েকদিন আগে ৩৫ সেকেন্ডের একটি ভয়েস রেকর্ড করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়। ওই ভয়েস রেকর্ডে বলা হয়  চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে প্রচুর করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছেন। তাদের মধ্যে ১৮ থেকে ১৯ জন মারা গেছেন। এ রেকর্ড ভাইরাল হওয়ার পর তদন্তে নামে পুলিশ। শনিবার বিকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। চট্টগ্রাম মহানগর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সাহেদ বলেন, ইফতেখার আদনান নামে যুবদলের এক নেতা রয়েছে। তিনি গ্রেফতার হয়েছেন কি না তা জানা নেই।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর