মঙ্গলবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

ব্যক্তি প্রচারণার রাজনীতি খুলনায়

সামছুজ্জামান শাহীন, খুলনা

ব্যক্তি প্রচারণার রাজনীতি খুলনায়

করোনাভাইরাসের কারণে থমকে গেছে খুলনার রাজনীতি। খাদ্য সংকট মোকাবিলায় সরকারি ত্রাণ সহায়তার পাশাপাশি হতদরিদ্রদের পাশে দাঁড়িয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ত্যাগী নেতা-কর্মীরা। তবে এমন পরিস্থিতিতেও ব্যক্তিগত প্রচারণায় নেমেছে সুবিধাভোগী নেতারা। খাদ্য সহায়তার নামে ফটোসেশন, ফেসবুক প্রচারণা-এমনকি আগামী নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণাও দিয়েছেন অনেকে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এ ধরনের কর্মকান্ডে দলের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার ও অনিয়ন্ত্রিত প্রতিযোগিতা তৈরি হয়। এতে রাজনীতিবিদদের ওপর আস্থা হারিয়ে ফেলে সাধারণ মানুষ। জানা যায়, দেশে করোনার প্রভাব পড়তে শুরু করলে মার্চের মাঝামাঝি থেকে রাজনৈতিক কর্মকা- গতি হারায়। এরই মাঝে গা-ঢাকা দেয় খুলনার রাজনীতিতে সুবিধাভোগীরা। শহরজুড়ে বিলবোর্ড, ব্যানার-ফেস্টুনে যারা নিজেদের শীর্ষ নেতাদের ঘনিষ্ঠজন পরিচয় দিয়ে ঠিকাদারি সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ, চাঁদাবাজি, দখলবাজিসহ নানাভাবে টাকা উপার্জন করেছেন তারা রাতারাতি নিজেদের গুটিয়ে নেয়। তবে এ নিয়ে সমালোচনা তৈরি হলে ভিন্ন কৌশলে আবার তারা মাঠে নেমেছেন। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুজিত অধিকারী বলেন, হাইব্রিড নেতাদের অনেকে ত্রাণ বিতরণের নামে ব্যক্তিগত প্রচার-প্রচারণায় নেমেছে। মানুষের দুর্ভোগের চেয়েও তাদের কাছে নিজেদের প্রচারণাই মুখ্য। এ নিয়ে সমালোচনাও হচ্ছে।

জানা যায়, হতদরিদ্রদের সাহায্যের নামে খুলনার জলমা ইউনিয়নে চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে আগাম প্রচারণায় মাঠে নেমেছেন কয়েকজন। খাদ্যসামগ্রীর ব্যাগে তারা নিজেদের ছবি ও আগামী নির্বাচনে চেয়ারমান প্রার্থী হিসেবে নিজেদের ঘোষণা দিচ্ছেন। একই অবস্থা খুলনার তেরখাদা-দিঘলিয়া-রূপসা নির্বাচনী এলাকায়। ত্রাণ বিতরণের নামে সম্ভাব্য এমপি প্রার্থীর সমর্থনে ফেসবুক গ্রুপ তৈরি করে প্রচারণা শুরু করেছেন তার সমর্থকরা।

এ ছাড়া সর্বশেষ জাতীয় নির্বাচনে এমপি প্রার্থীর অনেকেই ব্যবসায়িক কাজে ঢাকায় অবস্থান করছেন। করোনা পরিস্থিতিতে তারা নির্বাচনী এলাকায় ভোটার কাছে আসেননি। বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির মহাসচিব শেখ আশরাফ-উজ্জামান বলেন, সুবিধাভোগী ও মৌসুমি রাজনীতিবিদরা এখন মাঠে নেই। যারা আছেন তারাও ব্যক্তিগত প্রচারণায় ব্যস্ত। সমন্বয় না থাকায় প্রকৃত অভাবী মানুষের কাছে ত্রাণ পৌঁছাচ্ছে না। এতে রাজনীতিবিদদের ওপর থেকে ভরসা হারাচ্ছে মানুষ।

নগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক অধ্যক্ষ তারিকুল ইসলাম মনে করেন, রাজনীতিতে যেখানে ব্যক্তির চেয়ে দল বড় সেখানে আমরা হাঁটছি উল্টো পথে। এ ধরনের কর্মকা- রাজনীতি ও সংগঠনের জন্য শুভকর নয়। এতে দলের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার ও অনিয়ন্ত্রিত প্রতিযোগিতা তৈরি হয়। সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)’র জেলা সম্পাদক অ্যাডভোকেট কুদরত-ই খুদা বলেন, রাজনৈতিক সমন্বয় না থাকায় প্রান্তিক মানুষ যারা দিন আনে দিন খায় তাদের অনেকেই খাদ্য সহায়তা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর