আলোচনা, স্মৃতিচারণা, আবৃত্তি, সংগীত ও সেতারের সুরের মধ্য দিয়ে নাট্যনির্দেশক ইশরাত নিশাতকে স্মরণ করেছেন সাংস্কৃতিক কর্মীরা। ইশরাত নিশাতের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীতে গতকাল এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থিয়েটার সংগঠন দেশনাটক।
সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় এ আয়োজন। অনুষ্ঠানের শুরুতে তৌহিদ মিতুল নির্মিত তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। তথ্যচিত্রে ইশরাত নিশাতের জীবনের নানা দিক নিয়ে কথা বলেন নাট্যজন মামুনুর রশীদ, নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু, মাসুম রেজা, আজাদ আবুল কালাম, জুলফিকার চঞ্চল ও সংগীতশিল্পী বাপ্পা মজুমদার। এর আগে পরিবেশিত হয় রবীন্দ্রসংগীত।
আলোচনা পর্বে প্রয়াত এ নাট্যজনের যাপিত জীবন ও তার থিয়েটার জীবন নিয়ে কথা বলেন মামুনুর রশীদ, আতাউর রহমান, নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ, সাধারণ সম্পাদক হাসান আরিফ, গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশানের সেক্রেটারি জেনারেল কামাল বায়েজীদ, অনন্ত হীরা, জলের গানের রাহুল আনন্দ প্রমুখ। স্মৃতিচারণা করেন প্রয়াত নাট্যকর্মীর ছোট বোন নারিনা। মিলনায়তনে নাট্যজনদের কথামালায় নাট্যশালার লবি থেকে সেতারের সুর শোকে মুহ্যমান করে তুলেছিল নাট্যকর্মী ও সুহৃদদের। বক্তারা বলেন, একটি আন্দোলন, একটি সাহস, একটি চেতনা, একটি প্রতিবাদের নাম ইশরাত নিশাত। তার মতো নিবেদিত থিয়েটারকর্মী বর্তমান সমাজে খুবই বিরল। মৌলবাদ ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে তিনি ছিলেন নির্ভীকএক হাতিয়ার। স্বৈরাচার আমলে ‘যাত্রানাস্তি’ নামের একটি পথনাটক রচনার মধ্য দিয়েই নিজের নাট্যজীবন শুরু। এরপর মঞ্চনাটকে নির্দেশনা ও অভিনয়ে যুক্ত হয়ে পড়েন। দেশনাটকের জন্য তার নিরলস শ্রম, দলের সদস্যদের উদ্বুদ্ধ করা ও আগলে রাখা এসব এখন আনন্দ-বেদনার স্মৃতি। থিয়েটারের মঞ্চে তিনি যেমন গুরুগম্ভীর একজন মানুষ ছিলেন, তেমনি পারিবারিক ও ব্যক্তিজীবনে ছিলেন কোমল হৃদয়ের একজন মানুষ। তার প্রয়াণে নাট্যাঙ্গনে যে শূন্যতার সৃষ্টি হয়েছে তা পূরণ হওয়ার নয়। কথামালার ফাঁকে ফাঁকে আবৃত্তি পরিবেশন করেন বাচিকশিল্পী হাসান আরিফ। সংগীত পরিবেশন করে জলের গান।