বুধবার, ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

সুন্দরবনে ধ্বংসযজ্ঞ চলছেই

তিন দিনে চারটি মাথাসহ ১০৯ কেজি হরিণের মাংস জব্দ, পাঁচ শিকারি আটক, রেড অ্যালার্টেও থামছে না শিকারিদের তৎপরতা

শেখ আহসানুল করিম, বাগেরহাট

সুন্দরবনে ধ্বংসযজ্ঞ চলছেই

পূর্ব সুন্দরবন বিভাগে বাঘ, হরিণসহ বন্যপ্রাণী হত্যা বন্ধে বাগেরহাটের শরণখোলা রেঞ্জে সব ধরনের পাস-পারমিট ইস্যু বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। পাশাপাশি ২৩ জানুয়ারি রেড অ্যালার্ট জারি করেছে বন বিভাগ। এর পরিপ্রেক্ষিতে সুন্দরবনে বৈধ পাস-পারমিট নিয়ে যেসব জেলে-বনজীবী গিয়েছিলেন তাদের বন থেকে বেরিয়ে আসতে নির্দেশ দিয়েছে বন বিভাগ। তারপরও থামছে না সুন্দরবনে বন্যপ্রাণী হত্যা। এরমধ্যে বাগেরহাটে গত তিন দিনে চারটি মাথাসহ ১০৯ কেজি হরিণের মাংস জব্দ এবং পাঁচ শিকারিকে আটক করা হয়েছে। গতকাল ভোররাতে রামপাল উপজেলার বগুড়া ব্রিজের কাছ থেকে তিনটি মাথা ও ৪২ কেজি হরিণের মাংসসহ দুই চোরা শিকারিকে আটক করেছে জেলা ডিবি পুলিশ। আটকরা হলেন- রামপাল উপজেলার গোবিনাথপুর গ্রামের জুমাতুল্লা শেখের ছেলে আবদুর রহমান শেখ (৫২) ও আবদুর রহমান শেখের ছেলে মোস্তাকিন শেখ (২৭)। এর আগে রবিবার দিবাগত রাতে শরণখোলা উপজেলার সুন্দরবন সংলগ্ন রসুলপুর বেড়িবাঁধের ওপর থেকে ২০ কেজি হরিণের মাংসসহ মিলন মোড়ল (৩৫) নামের এক পাচারকারিকে আটক করেছে বনরক্ষীরা। শনিবার রাতে বাগেরহাটের মোংলা উপজেলার দিগরাজ বাজার এলাকা থেকে ৪৭ কেজি মাংস ও একটি হরিণের মাথাসহ ৩ চোরা শিকারিকে আটক করে কোস্টগার্ড। বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দবন বিভাগ ও র‌্যার-৮ সদস্যরা ১৯ জানুয়ারি রাতে সুন্দরবন সংলগ্ন শরণখোলা সদরের রায়েন্দা বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে একটি পূর্ণ বয়স্ক বাঘের চামড়াসহ মো. গাউস ফকির নামে এই চোরা শিকারিকে গেফতার করে। তিনি শরণখোলা উপজেলার দক্ষিণ সাউথখালী গ্রামের রশিদ ফকিরের ছেলে। ক্রেতা সেজে সুন্দরবনের একটি বাঘের চামড়াসহ এক চোরা শিকারিকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর ২২ জানুয়ারি রাতে শরণখোলা রেঞ্জ এলাকা থেকে শিকার করে আনা ১৯টি হরিণের চামড়াসহ দুই চোরা শিকারি ও পাচারকারিকে গ্রেফতার করেছে জেলা ডিবি পুলিশ। বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার বাসস্ট্যান্ডের কাছ থেকে সুন্দরবনের চোরা শিকারি ও বন্যপ্রাণী পাচারকারি চক্রের দুই সদস্য মো. ইলিয়াস হাওলাদার (৩৫) ও মো. মনিরুল ইসলাম শেখকে গ্রেফতার করে তাদের বাসা থেকে দুটি ব্যাগে রাখা ১৯টি হরিণের চামড়া উদ্ধার করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এরপর নড়েচড়ে বসে বন বিভাগ। বাঘ, হরিণসহ বন্যপ্রাণী হত্যা বন্ধে অবশেষে শরণখোলা রেঞ্জে সব ধরনের পাস-পারমিট বন্ধ করে ২৩ জানুয়ারি রেড অ্যালার্ট জারি করে বন বিভাগ। 

বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন বলেন, জেলে-বনজীবীরা বৈধ পাস-পারমিট নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে সুন্দরবনে গিয়ে এখন বাঘ, হরিণ শিকার করে থাকে। সুন্দরবনের বাঘ, হরিণসহ বন্যপ্রাণী হত্যা বন্ধে শরণখোলা রেঞ্জে সব ধরনের পাস-পারমিট বন্ধ করে রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। সুন্দরবনের বাঘ, হরিণসহ বন্যপ্রাণী হত্যা ঠেকাতে প্রয়োজনে আরও কঠিন পদক্ষেপ নিতে বন বিভাগ পিছপা হবে না।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর