বৃহস্পতিবার, ২২ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা

চট্টগ্রামে করোনায় ‘ভয়ংকর’ এপ্রিল

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামে করোনায় ‘ভয়ংকর’ এপ্রিল

চট্টগ্রামবাসীর কাছে ১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিল এক ভয়াবহ-ভয়ংকর স্মৃতি। ওইদিন বিপর্যয়ের একটি সকাল প্রত্যক্ষ করেছিল সবাই। তিন দশক পর চট্টগ্রামবাসী দেখল করোনাভাইরাসের ভয়াবহতার আরেক এপ্রিল। এই এপ্রিল মাসের গত ১ এপ্রিল থেকে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৮৯ জন। এক দিনেই মারা যান ৯ জন। যা গত এক বছরের রেকর্ড। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, গত বছর চীনের উহান প্রদেশ থেকে যে ভাইরাস ছড়িয়েছিল, তার তুলনায় বর্তমান ভাইরাসের ভ্যারিয়ান্টটি অনেক বেশি শক্তিশালী। বর্তমানের ভাইরাসটি ব্রাজিল, সাউথ আফ্রিকা ও যুক্তরাজ্যের ভ্যারিয়েন্টের মত শক্তিশালী। তাই বর্তমানে মৃত্যুহারও বেশি। সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, চট্টগামে ১ থেকে ১০ এপ্রিল পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যান ২৬ জন। কিন্তু ১১ থেকে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত ১০ দিনেই মারা যান ৬৩ জন। ২০ দিনে মোট মারা যান ৮৯ জন। প্রতিদিন গড়ে মারা যান ৪ দশমিক ৪৫ জন। তাছাড়া অনেক ক্ষেত্রে বাসা ও উপজেলা পর্যায় এবং বেসরকারি হাসপাতালের মৃত্যু যোগ হয় না। গত ১১ এপ্রিল এক দিনেই সর্বোচ্চ ৯ জনের মৃত্যু হয়।  অন্যদিকে, চট্টগ্রামে প্রথম করোনা শনাক্ত হয় গত বছরের ৩ এপ্রিল। প্রথম মারা যান ৮ এপ্রিল। ওই বছর পুরো এপ্রিল মাসে মোট মারা যান ছয়জন। আর এ বছর এপ্রিল মাসের ২০ দিনেই মারা যান ৮৯ জন (যদিও গত বছরের এপ্রিল থেকেই সংক্রমণ শুরু হয়েছিল) এবং মোট আক্রান্ত হয়েছিল ৬৫ জন।  চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. অজয় দেব বলেন, সংক্রমণ বৃদ্ধির নানা কারণ আছে। তবে উল্লেখযোগ্য কিছু কারণ আছে। এর মধ্যে আছে, ঢিলেঢালা লকডাউন। অথচ গত বছরের লকডাউনটা এ বছরের তুলনায় অনেক কঠোর ছিল। ফলে মানুষও নিয়ম মেনে বাসা থেকে বের হয়নি। দ্বিতীয়ত, টিকা নেওয়ার পর অনেকেই রিলাক্সে ঘোরাফেরা করছেন। মনে করছে আর করোনা হবে না। অথচ দ্বিতীয় ডোজের দুই সপ্তাহ পরই শরীরে ইমিউনিটি তৈরি হয়। তৃতীয়ত, গত জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত মানুষ প্রচুর পরিমাণে পর্যটন শহর ভ্রমণ করেছে। এপ্রিলে এসে এর চরম খেসারত দেওয়া শুরু করছি। অতএব সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই। চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডের চিকিৎসক ডা. এইচ এম হামিদুল্লাহ মেহেদী বলেন, আক্রান্ত বাড়ছে মৃত্যুও বাড়ছে।

 তবে যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশে নতুন যে ভ্যারিয়েন্টটি পাওয়া গেছে, আমাদের দেশেও ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় এ জাতীয় রোগী পাওয়া গেছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। তবে তা নিয়ে গবেষণা চলছে। গবেষণার প্রতিবেদন প্রকাশ হলেই বলা যাবে।

সর্বশেষ খবর