ভারতে করোনার প্রকোপ বৃদ্ধির ফলে গত ২৬ এপ্রিল থেকে বাংলাদেশ-ভারত দুই দেশের সীমান্ত বন্ধ রয়েছে। তবে চিকিৎসাসহ বিভিন্ন প্রয়োজনে ভারতে যাওয়া বাংলাদেশিরা আগরতলা থেকে বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের নো অবজেকশন সার্টিফিকেট বা অনাপত্তিপত্র নিয়ে দেশে ফিরে আসছেন। বাংলাদেশে আটকে পড়া ভারতীয় নাগরিকরাও বিশেষ অনুমতি নিয়ে ভারতে ফিরে যাচ্ছেন। গতকাল বেলা ২টা পর্যন্ত গত ১৫ দিনে আখাউড়া চেকপোস্ট দিয়ে ৩৭২ জন বাংলাদেশি নাগরিক এবং বাংলাদেশে কর্মরত ভারতীয় নাগরিকরা দেশে প্রবেশ করেছেন। এত বিপুলসংখ্যক লোক আখাউড়া চেকপোস্ট দিয়ে বাংলাদেশে আসায় করোনার সংক্রমণের ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে আখাউড়া। ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট সূত্রে জানা গেছে, ভারতফেরত নাগরিকদের হাসপাতাল এবং প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হচ্ছে। জেলার ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহর, আখাউড়া ও বিজয়নগর উপজেলায় ৫টি প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে ১২২ জনকে রাখা হয়েছে। ১০০ জনকে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশে অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাসে কর্মরত ১৪ জনকে ভারতীয়দের দূতাবাসে পাঠানো হয়েছে এবং সশস্ত্র বাহিনীর ৩৩ জন সদস্যকে সিএমএইচে পাঠানো হয়েছে। আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা ডা. মো. রাশেদুর রহমান বলেন, ভারত থেকে বেশি লোক আসায় আমরা আখাউড়াবাসী স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে আছি। উপজেলা সূত্রে জানা গেছে, আখাউড়া পৌর শহরের সড়ক বাজারে নাইন স্টার হোটেলে রবিবার পর্যন্ত ২০ জন এবং রজনীগন্ধা হোটেলে ৫ জন কোয়ারেন্টাইনে আছে। কোয়ারেন্টাইনের বিষয়টি দেখভাল করার জন্য আখাউড়ায় জেলা প্রশাসনের দুজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত রয়েছেন। এ অবস্থায় বিষয়টির গুরুত্ব দিয়ে সম্প্রতি বৃহস্পতিবার দুপুরে আখাউড়া স্থলবন্দর পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খান। পরিদর্শনকালে তিনি আখাউড়া ইমিগ্রেশন অফিস ঘুরে দেখেন। জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খান বলেন, সম্প্রতি আখাউড়া স্থলবন্দর হয়ে ভারত থেকে যাত্রী প্রবেশের হার বেড়েছে। এ অবস্থায় ভারতফেরত যাত্রীদের বর্তমানে জেলার বিজয়নগর উপজেলায় ৫০ শয্যাবিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কোয়ারেন্টাইন করা হচ্ছে। আখাউড়া পৌরসভার মেয়র তাকজিল খলিফা কাজল বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে এমনিতেই আমরা সংক্রমণের ঝুঁকিতে আছি।
তার মধ্যে ভারতফেরত নাগরিকরা আখাউড়ায় থাকায় একটু বেশিই ঝুঁকি রয়েছে।
আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নূর-এ আলম বলেন, সরকারি সিদ্ধান্তের আলোকে যারা ভারতে আটকা পড়েছেন তাদের বাংলাদেশে ফেরার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে তাদের ১৪ দিনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। যারা গুরুতর অসুস্থ তাদের হাসপাতালে পাঠানো হয়। জেলা প্রশাসনের দুজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কোয়ারেন্টাইনের বিষয়টি সার্বক্ষণিক তদারকি করছেন। যারা কোয়ারেন্টাইনে থাকবেন তাদের পাসপোর্ট আমরা সংরক্ষণ করছি। কোয়ারেন্টাইন শেষ হওয়ার ছাড়পত্র প্রদর্শন করার পর তাদের পাসপোর্ট ফেরত দেওয়া হবে।