বুধবার, ১৬ জুন, ২০২১ ০০:০০ টা

জরিমানা আদায় ঘিরে প্রতারণা, ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন খুলনায়

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা

খুলনায় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের বিরুদ্ধে একই নম্বরের রসিদ দিয়ে একাধিকবার জরিমানা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। আদায়কৃত জরিমানার টাকাও ব্যাংকে জমা হয়নি। বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। তবে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের কর্মকর্তারা বলছেন, একই রসিদ দিয়ে পুনরায় জরিমানা আদায়ের সঙ্গে তাদের কেউ জড়িত নন। তাদের পক্ষ থেকে এরই মধ্যে থানায় জিডি করা হয়েছে। বিষয়টি চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। জানা যায়, ৩ জুন দুপুরে মহানগরীর বয়রা বাজারে এলপি গ্যাস বিক্রেতা আয়ান ট্রেডার্সে অভিযান চালান জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের কর্মকর্তা। ওই দোকানে সরকার নির্ধারিত খুচরা মূল্যের চেয়ে বেশি দামে গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি করায় ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। বিক্রেতা সৈয়দ নাজমুল হুদা জানান, বেশি দামে সিলিন্ডার কেনা থাকায় তাকে নির্ধারিত মূল্যের থেকে কিছুটা বেশি দামে সিলিন্ডার বিক্রি করতে হয়েছে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দুটি গাড়ি দোকানের সামনে থামার পর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দোকানে ঢুকে ক্যাশ মেমো দেখে তাকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। ওই টাকা আশপাশের দোকান থেকে ধারে নিয়ে নগদ পরিশোধ করেন। এ সময় তাকে জরিমানা আদায়ের রসিদ দেওয়া হয়। ওই রসিদে দেখা যায় ‘ভোক্তা অধিকার অধিদফতরের সহকারী পরিচালক নাজমুল হাসান অভিযোগ নম্বর ২৪৯/২০২০-এর পরিপ্রেক্ষিতে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনের ৪৩ ধারায় রসিদ নম্বর ০০২৮০২৬-এ ওই ব্যবসায়ীকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন।’ কিন্তু ৪৩ ধারায় মেয়াদোত্তীর্ণ বেকারি পণ্য ও হোটেল-রেস্তোরাঁয় অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ সম্পর্কিত অপরাধ থাকায় পরে ওই ব্যবসায়ী ভোক্তা অধিকার অফিসে যোগাযোগ করেন। কিন্তু ওই তারিখে জরিমানার টাকা ব্যাংকে জমা দেওয়ার কোনো নথিপত্র না থাকায় প্রতারণার বিষয়টি জানাজানি হয়। ভোক্তা অধিকার অধিদফতরের বিভাগীয় উপপরিচালক মো. ইব্রাহীম হোসেন জানান, অভিযোগ নম্বর ২৪৯/২০২০ ও রসিদ নম্বর ০০২৮০২৬ ব্যবহার করে ২০২০ সালের ৮ সেপ্টেম্বর বয়রা বাজার এলাকার ‘মায়ের দোয়া’ নামের একটি হোটেলকে অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ থাকায় ৩ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। কিন্তু গত ৩ জুন একই রসিদ ব্যবহার করে ‘আয়ান ট্রেডার্স’কে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করার বিষয়টি তার জানা নেই। এদিকে ৯ জুন ভোক্তা অধিকার অধিদফতরের সহকারী পরিচালক নাজমুল হাসান সোনাডাঙ্গা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। নাজমুল হাসান বলেন, ‘দ্বিতীয় ভাউচারটিতে হাতের লেখা ও স্বাক্ষর আমার মতো করার চেষ্টা হয়েছে। ভাউচারেও কিছুটা পরিবর্তন আনা হয়েছে। ওই দিন আমি বা আমার প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে কোনো অভিযান চালানো হয়নি।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর