বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারে ১ কেজি গরুর মাংসের দাম ১ হাজার ১০০ টাকা। ১ কেজি মাংস রান্নার মসলার দাম ৩০০ টাকা এবং রান্না খরচ নেওয়া হয় আরও ২০০ টাকা। অর্থাৎ কারাগারে রান্না করা এক কেজি গরুর মাংসের দাম পড়ে ১ হাজার ৬০০ টাকা। এভাবে একটি টুথব্রাশের দাম রাখা হয় ১০০ টাকা, এক হালি পোলট্রি মুরগির ডিম ৮০ টাকা, ছোট রুই মাছের কেজি ৬০০ টাকা এবং এক কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম রাখা হয় ৩০০ টাকা। শুনতে অবাক লাগলেও বরিশাল কারাগারের সচ্ছল বন্দীদের এভাবেই চড়া দামে পণ্য কিনতে হয়। শুধু পণ্যের অতিরিক্ত দাম রাখাই নয়, বন্দী নির্যাতনেরও অভিযোগ রয়েছে কারা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। সুস্থ বন্দীদের অসুস্থ সাজিয়ে অর্থের বিনিময়ে মাসের পর মাস কারা হাসপাতালে রাখা হয়। সদ্য কারামুক্তিপ্রাপ্ত একাধিক কয়েদি ও হাজতি জানায়, কারাভ্যন্তরে কোনো খাবার এবং পণ্য পাঠাতে হলে কারা চত্বরের ক্যান্টিন থেকে চড়া দামে কিনতে হয়। কারাগারের ভিতরে অনেক হাজতি ও কয়েদি কর্তৃপক্ষের মানহীন খাবার গ্রহণ করেন না। তারা ভিতরে উন্নত মানের খাবার কিনে খায়। কারাভ্যন্তরে রান্না করা ১ কেজি গরুর মাংস খেতে গুনতে হবে ১ হাজার ৬০০ টাকা। এভাবে সব খাবার এবং পণ্যের দ্বিগুণ-তিনগুণ দাম রাখা হয় কারাগারের ভিতরে। কথায় কথায় নির্যাতনেরও অভিযোগ রয়েছে কারা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। গত ২৫ রমজান এক প্লেট ভাতের জন্য নয়ন নামে এক হাজতিকে মারধর করে কারারক্ষীরা। ওইদিন তার হাতে-পায়ে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে চোখে কয়েদি গামছা বেঁধে লাঠি দিয়ে পেটানো হয় তাকে। এ নিয়ে কারাগারে উত্তেজনা দেখা দিলে শেষ পর্যন্ত ক্ষমা চাইতে বাধ্য হন জেলার মো. শাহআলম। চেক প্রতারণা মামলার আসামি লিটন সরকারকে কারাগারের ভিতরে ভালো থাকা-খাওয়ার শর্তে তার কাছে অর্থ দাবি করা হয়। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে ১২ নম্বর সেলে রাখা হয় তাকে। সেখানে তার ওপর নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে গত ১০ জুন হারপিক খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায় সে। পরে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এভাবে নানা অজুহাতে বন্দী নির্যাতন হয় বরিশাল কারাগারে। গত ৭ জুন রাতে কারাগারের ২ নম্বর ওয়ার্ডের কয়েদি হানিফের কাছ থেকে একটি চাকু, প্রায় ৬ ফুট ক্যাবল এবং কিছু পরিমাণ গাঁজা উদ্ধার করা করেন জেলার। কিন্তু তার বিরুদ্ধে কারা আইনে ব্যবস্থা না নিয়ে মাত্র ৫ হাজার টাকায় বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে জেলারের বিরুদ্ধে। কারা হাসপাতালে কারাগারের অসুস্থ হাজতি-কয়েদিদের রাখার কথা থাকলেও প্রতি মাসে সাড়ে ৪ হাজার টাকার বিনিময়ে সেখানে মাসের পর মাস থাকছেন সুস্থ সচ্ছল বন্দীরা। এ কারণে অসুস্থ রোগীদের ঠাঁই হয় না কারা হাসপাতালে। কেমল গুরুতর অসুস্থ রোগীদের পাঠানো হয় শেরেবাংলা মেডিকেলে। এ ছাড়া কারাদন্ডপ্রাপ্ত কয়েদিদের অর্থের বিনিময়ে বিভিন্ন চালিতে কাজ করার পাস দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেন সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত কয়েদিরা। এসব বিষয়ে বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মো. শাহআলম বলেন, কিছুদিন আগে এক আসামি হারপিক খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি সুস্থ হয়ে ফিরে আসার পর আত্মহত্যা চেষ্টার কারণ জানা যাবে। এ ছাড়া কারাগারে খাবার কিংবা পণ্যের অতিরিক্ত দাম রাখা, বন্দী নির্যাতন এবং অর্থের বিনিময়ে সুস্থ আসামিদের কারা হাসপাতালে রাখার অভিযোগ অস্বীকার করেন জেলার।
শিরোনাম
- পাঙ্গাস পোনা শিকারের দায়ে জেলের কারাদণ্ড
- পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত ডিআইজি মিলন কারাগারে
- রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক
- নির্বাচনের আগেই হাসিনাকে দেশে এনে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের দাবি সারজিসের
- কলাপাড়ায় অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে ৫ জন হাসপাতালে
- দিনাজপুরে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর পরিবারের মাঝে উপকরণ বিতরণ
- মুন্সীগঞ্জে পদোন্নতির দাবিতে প্রভাষকদের ‘নো প্রমোশন, নো ওয়ার্ক’ কর্মসূচি
- এ রায় প্রতিশোধ নয়, ন্যায়বিচারের প্রতিজ্ঞা: চিফ প্রসিকিউটর
- ১৬ কোটি টাকার হাসপাতাল চার বছরেও চালু হয়নি
- আমি আসলে খুব কষ্ট পাচ্ছি : শেখ হাসিনার আইনজীবী
- বাংলাদেশ প্রতিদিনের খবরে সেই শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু
- শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান কামালের সব সম্পদ বাজেয়াপ্তের নির্দেশ
- ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনে ডিএমপির ২০৮৮ মামলা
- শাবিপ্রবিতে স্টুডেন্ট রাইটস ফোরামের ফ্রি হেল্থ ক্যাম্প
- আজ বাংলাদেশের মাটিতে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার শ্রেষ্ঠ ঘটনা ঘটেছে : আইন উপদেষ্টা
- শহীদরা ন্যায়বিচার পেয়েছেন: অ্যাটর্নি জেনারেল
- শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ড
- অস্কার গ্রহণ করলেন টম ক্রুজ
- শেখ হাসিনাসহ তিনজনের অপরাধ প্রমাণিত
- রাজস্থানের কোচ হিসেবে ফিরলেন কিংবদন্তি সাঙ্গাকারা
বরিশাল কারাগারে তুঘলকি কাণ্ড
রান্না করা ১ কেজি গরুর মাংস ১৬০০ টাকা! অর্থের বিনিময়ে সুস্থ আসামিরা হাসপাতালে
নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল
প্রিন্ট ভার্সন
এই বিভাগের আরও খবর
সর্বশেষ খবর