রবিবার, ২৭ জুন, ২০২১ ০০:০০ টা

খুলনায় যে কারণে গ্রামে গ্রামে ছড়াচ্ছে করোনা

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা

খুলনার রূপসা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গতকাল র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টে ২১ জনের মধ্যে ১৭ জন করোনা শনাক্ত হন। বাকি চারজনের নমুনা পুনরায় পরীক্ষার জন্য মেডিকেল কলেজ পিসিআর ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। এর আগের তিন দিনে ১৩৩ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৫৪ জন করোনা শনাক্ত হন। চিকিৎসকরা বলছেন, হঠাৎই খুলনার গ্রামে ও শহরতলিতে সর্দি-কাশি-জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে। যাদের নমুনা পরীক্ষা করলে ৫০ থেকে ৮০ ভাগেরই করোনা শনাক্ত হচ্ছে। উপসর্গ না থাকা ব্যক্তির নমুনা পরীক্ষা করলেও করোনা ধরা পড়ছে। এদিকে শনাক্ত হলে বিধিনিষেধ মানতে হবে এ কারণে অনেকে নমুনা পরীক্ষা না করে সর্দি-কাশির উপসর্গ দেখা দিলে ফার্মেসি থেকে ওষুধ কিনে সেবন করছেন। একই অবস্থা খুলনার বটিয়াঘাটা, ডুমুরিয়া, ফুলতলার প্রত্যন্ত এলাকাগুলোয়। রূপসা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার (রোগ নিয়ন্ত্রণ) ডা. নাসরিন সুলতানা জানান, হঠাৎই গ্রামে আক্রান্তের হার বেড়েছে। আক্রান্ত ব্যক্তি ও পরিবারের সদস্যদের কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করা সম্ভব না হওয়ায় করোনা ছড়াচ্ছে। অনেকে ভুল তথ্য দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করায় র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টে শনাক্ত হলেও তাদের খুঁজে পাওয়া যায় না। আবার এখানে কর্মক্ষেত্র হলেও অনেকে থাকেন শহরে।

রূপসা নদীর ঘাট, জেলখানা ঘাট ও হাটবাজার এলাকায় যাতায়াতের ফলে অজান্তে অনেকে করোনাভাইরাস বহন করছেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আইসোলেশন ওয়ার্ডে রোগীর সঙ্গে স্বজনরাও থাকছেন। তারা খাবার বা ওষুধের প্রয়োজনে মাঝেমধ্যেই বাজারঘাটে আসছেন। ফলে তাদের মাধ্যমেও করোনা ছড়াচ্ছে। জানা যায়, ২৫ জুন খুলনা জেলায় পিসিআর ও র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টে ৭৩০ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৩৩২ জন করোনা শনাক্ত হন। এর মধ্যে শহর এলাকায় ১৯৮ আর গ্রামে ১৩৪ জন। নমুনা পরীক্ষার ভিত্তিতে সংক্রমণের হার শহরে ২৮ ও উপজেলায় ১২ শতাংশ। স্বাস্থ্যকর্মীরা জানান, গ্রামের অস্থায়ী ঠিকানায় নমুনা পরীক্ষা হলেও শহরের বাসিন্দা হওয়ায় শনাক্তের পর অনেককে শহরের তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। জেলা সিভিল সার্জন ডা. নিয়াজ মোহাম্মদ বলেন, বর্তমানে শহরের পাশাপাশি গ্রামেও করোনা ছড়াচ্ছে।

এদিকে সারা দেশে কঠোর লকডাউনের খবরে খুলনার বাজারঘাটে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। গতকাল বড় বাজারসহ রূপসা, বটিয়াঘাটায় নির্ধারিত সময়ের পরও দোকান খুলে রাখতে দেখা যায়। মাস্ক ব্যবহার বা স্বাস্থ্যবিধি মানছে না কেউ। প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযানে জেল-জরিমানা করলেও স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে অনীহা দেখা গেছে।

সর্বশেষ খবর