মঙ্গলবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

২০ বছর ধরে কাভার্ড ভ্যানের গার্মেন্ট পণ্য চুরি করছিল ওরা

নিজস্ব প্রতিবেদক

২০ বছর ধরে কাভার্ড ভ্যানের গার্মেন্ট পণ্য চুরি করছিল ওরা

গত ২০ বছর ধরে গার্মেন্ট পণ্য চুরি করে আসছিল চক্রটি। অন্তত পাঁচ হাজার ট্রাক, কাভার্ডভ্যান থেকে পণ্য চুরি করেছে। গত মে মাসে এই চক্র আশুলিয়ার জয়ন্তী নিট ওয়্যার লিমিটেডের পণ্যবোঝাই কাভার্ড ভ্যান থেকেও পণ্য চুরি করে। ওইসব পণ্য ইংল্যান্ডে ক্রেতার হাতে পৌঁছানোর পর দেখা যায়- ১১ হাজার পিস পণ্য কম। এই ঘটনায় তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় মামলা করে জয়ন্তী কর্তৃপক্ষ। এর রেশ কাটতে না কাটতেই আবারও নেটওয়ার্ক ক্লোথিং লিমিটেডের পাঁচ হাজার পিস কাপড়। তাদের তৈরি শিশুদের পোশাক চট্টগ্রাম বন্দর হয়ে জার্মানিতে যাচ্ছিল। নেটওয়ার্কও তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় মামলা করে। দুটি ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ১১ জনকে গ্রেফতার করেছে। এই অভিযানে নেতৃত্ব দেন ডিবির তেজগাঁও বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) শাহাদৎ হোসেন সুমা। গতকাল বেলা সাড়ে ১১টায় ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব জানান অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) একেএম হাফিজ আক্তার। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ঘটনাটি চুরির হলেও এ ধরনের চুরি দেশের সুনাম ক্ষুণœ করছিল। পণ্য খোয়া যাওয়ায় গার্মেন্ট কারখানাগুলোকেও ক্ষতিপূরণ গুনতে হচ্ছিল। শুধু জয়ন্তীকেই ২৮ হাজার ৯০৮ ডলার জরিমানা দিতে হয়েছে ক্রেতাকে। ডিবির সাম্প্রতিক অভিযানে এই চক্রের প্রধান সাঈদ ওরফে সিলেটী সাঈদ গ্রেফতার হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে ২৪টি মামলা রয়েছে। তার বাড়ি মৌলভীবাজারে। সেখানে তিনি দ্বিতল ভবন, ইটভাটা ও ট্রাকের মালিক। দুই স্ত্রীও আছে তার। এক স্ত্রী লন্ডনে, অন্যজন বাংলাদেশে থাকেন। চট্টগ্রামের ছয় মামলায় দীর্ঘদিন জেল খেটে বেরিয়ে তিনি আবারও সক্রিয় হন। ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে সাঈদ জানিয়েছেন- চোর চক্র অন্তত পাঁচ হাজার ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান থেকে পণ্য চুরি করেছে। এ সময় খোয়া যাওয়া পণ্যের দাম কয়েক হাজার কোটি টাকা। হাফিজ আক্তার বলেন, ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম যাওয়ার পথে মহাসড়কে মূলত এই চুরির ঘটনা ঘটছে। বন্দরে যাওয়ার পথে পণ্যবাহী কাভার্ড ভ্যান থামিয়ে চোর চক্র মালামাল নামায়। পরে এগুলো তারা ছোটখাটো বায়িং হাউসকে বিক্রি করে দিত।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়েছে, জয়ন্তী নিট ওয়্যার তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় মামলা করে ১২ সেপ্টেম্বর। এর এক দিন পরই ডিবি কাভার্ড ভ্যানের চালক ইমরান, মহিউদ্দিন, মোবারক ও ইব্রাহীমকে গ্রেফতার করে। ওই মামলায় গাড়ির চালক ইমরান হোসেন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। ১৭ সেপ্টেম্বর আরও একটি অভিযান চালিয়ে উত্তরা থেকে ডিবি পুলিশ তৈরি পোশাকসহ রাজ্জাক, ইউসুফ ও মাঈনুলকে গ্রেফতার করে। তাদের দেওয়া তথ্যে, কুমিল্লার বুড়িচং-এর নিমসার এলাকায় একটি কাভার্ড ভ্যান থেকে তৈরি পোশাকসহ আল আমিন ও দুলালকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের কাছ থেকে ৪ হাজার ৭০৫ পিস পোশাক জব্দ করা হয়। এদের দেওয়া তথ্যেই গ্রেফতার হন সাঈদ। সাঈদ জানিয়েছেন- ২০০০ সাল থেকেই তিনি গার্মেন্ট পণ্য চুরি করে আসছেন। তদন্ত কর্মকর্তাদের তিনি বলেছেন, তাদের এই চোর চক্রে আরও ২০ থেকে ৩০ জন রয়েছেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর