রবিবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

রিহ্যাব মেলায় চাহিদা বেশি ছোট ফ্ল্যাটের

যৌথভাবে প্লট কিনছেন মধ্যবিত্তরা

নিজস্ব প্রতিবেদক

রিহ্যাব আবাসন মেলার তৃতীয় দিন গতকালও দর্শনার্থীর পদচারণে মুখর ছিল মেলা প্রাঙ্গণ। সরকারি ছুটির দিন হওয়ায় সকাল থেকে রাত অবধি ছিল উপচে পড়া ভিড়। মধ্যবিত্ত শ্রেণির পদচারণ ছিল চোখে পড়ার মতো। অধিকাংশই খুঁজছিলেন কম দামে ছোট আকারের রেডি ফ্ল্যাট। ৩ হাজার স্কয়ার ফুটের বেশি বা ডুপ্লেক্স ফ্ল্যাটের খোঁজেও আসেন বিত্তশালী অনেকে। দর্শনার্থীদের একটা বড় অংশই এসেছিলেন সমিতির মাধ্যমে বা কয়েকজন মিলে যৌথভাবে নিষ্কণ্টক রেডি প্লট কেনার আশায়। মেলাতেই বুকিং দিয়েছেন কেউ কেউ। অনেকে আবার প্রকল্প দেখে বুকিং দেওয়ার জন্য ফোন নম্বর বিনিময় করে গেছেন। মেলায় অনেকেই আসছেন পরিবারের সদস্যদের নিয়ে। কেউ আসছেন বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে নিয়ে। কেউ খুঁজছেন ঢাকার মধ্যে তুলনামূলক কম দামে জমি, কেউ খুঁজছেন দাম বেশি হলেও এখনি বাড়ি করা যায় এমন নিষ্কণ্টক রেডি প্লট। প্লট বা ফ্ল্যাট দেখার পাশাপাশি অনেকে আসছেন নির্মাণসামগ্রীর খোঁজখবর নিতে।

গতকাল সরেজমিন রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে মেলা প্রাঙ্গণে দেখা যায়, সকালে মেলার প্রবেশদ্বার খোলার আগেই অনেক দর্শনার্থী হাজির হয়েছেন। মিরপুরের বাসিন্দা মহসিন মোল্লা নামের এক দর্শনার্থী বলেন, বেলা বাড়লে ভিড় বাড়বে। তখন কোম্পানির প্রতিনিধিরা বেশি সময় দিতে পারেন না। শুক্রবার রাতে এসে ভিড়ের কারণে বেশি স্টল না ঘুরেই ফিরে গেছেন। তিনি খুঁজছেন ৯০০ থেকে ১১০০ বর্গফুটের মধ্যে একটি ছোট রেডি ফ্ল্যাট বা স্টুডিও অ্যাপার্টমেন্ট। কিছু টাকা জমিয়েছেন, বাকিটা ব্যাংক ঋণের মাধ্যমে শোধ করে ফ্ল্যাটে উঠতে চান। দুপুর ১টার দিকে রূপায়ণ হাউজিং এস্টেটের স্টলের সামনে কথা হয় শুক্রাবাদের বাসিন্দা নওশিন আফরোজের সঙ্গে। খুঁজছেন ১২০০ থেকে ১৬০০ বর্গফুটের রেডি ফ্ল্যাট। তার পছন্দ ধানমন্ডি, বসুন্ধরা ও উত্তরা এলাকা। তিনি বলেন, বুকিং দিয়ে ফ্ল্যাটে ওঠা অনেক ঝামেলা। সময়মতো কাজ শেষ হয় না অনেকের। ৭০ লাখ টাকার মধ্যে রেডি ফ্ল্যাট খুঁজছি। দামে না মিললে ব্যাংক ঋণ নিয়ে কোনো প্রতিষ্ঠিত কোম্পানির প্লট বুকিং দেব।

মেলায় বসুন্ধরা গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান ইস্ট ওয়েস্ট প্রোপার্টি ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের (ইডব্লিউপিডি) স্টলের সামনে কথা হয় বাড্ডার বাসিন্দা শহিদুল হক ও জিয়াউল হকের সঙ্গে। সম্পর্কে তারা সহোদর। শহিদুল হক বলেন, পাঁচ বছর আগে তারা ২৫ জন মিলে একটা সমিতি করেন। সমিতির মাধ্যমে আগে একটা জমি কিনেছেন দক্ষিণখানের অনেক ভিতরের দিকে। ওই এলাকায় ডেভেলপার না পাওয়ায় এখনো ভবনের কাজ শুরু করতে পারেননি। মেলায় এসেছেন ডেভেলপার খোঁজার পাশাপাশি এখন যে টাকা জমেছে, তা দিয়ে ভালো  কোনো আবাসিক এলাকায় প্লট বুকিং দিতে। এদিকে মেলায় ফ্ল্যাট ও প্লট বুকিং দিলে দেওয়া হচ্ছে নগদ অর্থ ছাড়, তাৎক্ষণিক পুরস্কার, অল্প সময়ে ফ্ল্যাট বা প্লট হস্তান্তরসহ নানা সুবিধা। অন্যদিকে ফ্ল্যাট ও প্লট কেনার জন্য কম সুদে ঋণ সহায়তা দিচ্ছে মেলায় অংশ নেওয়া ব্যাংক ও বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান। ইডব্লিউপিডির  সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার (বিক্রয় ও বিপণন) মো. জহিরুজ্জামান বলেন, তারা বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার কিছু রেডি প্লট নিয়ে মেলায় এসেছেন। রেজিস্ট্রেশন ও হস্তান্তরের পরই বাড়ি করা যাবে। ১০ থেকে সর্বোচ্চ ১৫ দিনের মধ্যে রেজিস্ট্রেশন দেওয়া হবে। রাস্তাঘাট, পয়ঃব্যবস্থাপনা, সব ধরনের ইউটিলিটি থাকায় প্লট কিনেই যে কেউ বাড়ি করে থাকা শুরু করতে পারবেন। রূপায়ণ গ্রুপের সিনিয়র ম্যানেজার (মার্কেটিং অ্যান্ড মিডিয়া) মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, আমাদের স্টলে মধ্যবিত্তদেরই ভিড় বেশি। সবাই ১২০০-১৬০০ বর্গফুটের ফ্ল্যাট খুঁজছেন। বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা, উত্তরা,  মোহাম্মদপুর, মিরপুর এলাকার প্রকল্পগুলোয় মানুষের চাহিদা বেশি। নাভানা রিয়েল এস্টেট লিমিটেডের সিনিয়র মহাব্যবস্থাপক (বিক্রয়)  মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, অধিকাংশ গ্রাহকই রেডি ফ্ল্যাট খুঁজছেন। মেলায় ফ্ল্যাট বুকিং দিলে আমরা দেড় লাখ টাকার ফার্নিচার উপহার দিচ্ছি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর