বৃহস্পতিবার, ২০ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

অপরাধের আখড়া যখন ফুটপাথ

চট্টগ্রামে সংঘটিত হয় ১০ অপরাধ, চাঁদা দিতে হয় চার খাতে

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

অপরাধের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে নগরীর বিভিন্ন এলাকার শতাধিক ফুটপাথ এলাকা। মাদক ব্যবসা থেকে শুরু করে নামিদামি কোম্পানির নকল পণ্য বিক্রিসহ কমপক্ষে ১০ ধরনের অপরাধ সংঘটিত হয় এসব ফুটপাথকে ঘিরে। অভিযোগ রয়েছে- চার খাতে মাসোয়ারা দিয়ে অপরাধ নির্বিঘ্ন করছে ওই স্পটগুলোর হোতারা। প্রশাসন অপরাধের এ স্পটগুলো বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলা হলেও কার্যত ঘোষণার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকছে তাদের কার্যক্রম। তবে সিএমপি কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর বলেন, ‘ফুটপাথকে ঘিরে অপরাধ হচ্ছে জেনে এরই মধ্যে কিছু কিছু ফুটপাথ উচ্ছেদ করা হয়েছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় উচ্ছেদের পর তারা ফের দখলে নিচ্ছে ফুটপাথ। এক্ষেত্রে সিটি করপোরেশনের সহায়তা পেলে আমরা সফল হতে পারব।’নাম প্রকাশ না করার শর্তে সিএমপির এক উপ-কমিশনার বলেন, ‘ফুটপাথ উচ্ছেদ করতে গেলে স্থানীয় নেতারা বাধা দেয়। অনেক ক্ষেত্রে তারা পুলিশের সঙ্গে দুব্যবহারও করে। তাই ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও এসব স্পট বন্ধ করতে পারছে না পুলিশ।’

জানা যায়, ফুটপাথে সংগঠিত অপরাধের মধ্যে রয়েছে- মাদক বিক্রি, চোরাই মোবাইল বিক্রি, চোরাই জুতা বিক্রি, নামিদামি ব্র্যান্ডের নকল পারফিউম-বডি স্প্রে, বিশ্ববিখ্যাত কোম্পানির নকল জুতা, নামি কোম্পানির নকল হাত ঘড়ি, নকল মোবাইল বিক্রির দোকান ও কথিত ওষুধের দোকান। পাশাপাশি পকেটমার, অজ্ঞান পার্টি, ময়লা পার্টি, টানা পার্টি এবং চাঁদাবাজি চক্র সক্রিয় এসব স্পটকে ঘিরে। নগরীর অপরাধ প্রবণ ফুটপাথ স্পটগুলোর মধ্যে রয়েছে স্টেশন রোড, কোতোয়ালি মোড়, নিউ মার্কেট মোড়, জিইসির মোড়, বাদামতলী মোড়, শাহ আমানত ব্রিজ, বহদ্দারহাট, রাস্তার মাথা, ষোলশহর দুই নম্বর গেট, সিটি গেট, একে খান গেট, সল্টগোলা ক্রসিং, স্টিল মিল বাজার, ইপিজেড মোড়, বড়পুল, ছোটপুল, সিমেন্ট ক্রসিং, বন্দরটিলা বাজার, বন্দরটিলা আলী শাহ মসজিদ এলাকা, ফ্রিপোর্ট, আগ্রাবাদ এলাকা, এক্সেস রোড, আন্দরকিল্লা মোড়, চকবাজার, অক্সিজেন মোড়, পতেঙ্গা সৈকত এলাকা।  অভিযোগ রয়েছে এসব স্পটে অপরাধ কর্মকান্ড নির্বিঘ্ন করতে দৈনিক এবং মাসিক হারে চাঁদা দিতে হয় চার খাতে। এ খাতগুলোর মধ্যে রয়েছে হকার্স সমিতি, স্থানীয় চাঁদাবাজ, পুলিশ, রাজনৈতিক দলের কতিপয় নেতা। স্পটের হোতারা দৈনিক ৫০০ টাকা শুরু করে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা দিতে হয়। আবার কেউ কেউ মাসিক ১০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা দেন অবৈধ ব্যবসা নির্বিঘ্ন করতে।

চাঁদা বিষয়ে কথা হয় নগরীর স্টেশন রোড এলাকার চোরাই এক মোবাইল দোকানদারের সঙ্গে। তিনি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘প্রতিদিন ১ হাজার টাকা করে চাঁদা দিতে হয় কয়েকটি খাতে। চাঁদা দিতে না চাইলে ডিস্টাব করে।’ একই ভাবে চাঁদা দেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন নগরীর ইপিজেড এলাকার চোরাই মালামাল বিক্রির আরেক দোকানদার।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর