চার বছর আগে তালাক দেওয়া স্ত্রীকে পুনরায় ফিরিয়ে আনতে ব্যর্থ হয়ে স্ত্রীর ভাইকে কুপিয়ে হত্যা করেছেন সাবেক স্বামী। এ সময় স্ত্রীকেও কুপিয়ে আহত করা হয়েছে। ক্ষোভে আগুন লাগিয়ে দিয়েছেন শ্বশুরবাড়িতেও। পরে নিজে বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। সোমবার সন্ধ্যায় রংপুরের পীরগাছা উপজেলার কৈকুড়ী ইউনিয়নের মকরমপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত রোকন মিয়া ওই গ্রামের তয়েজ উদ্দিন মাস্টারের ছেলে। তার বোনের সঙ্গে একই উপজেলার সুবিদ গ্রামের দুদু মিয়ার ছেলে মিজান মিয়ার বিয়ে হয়েছিল। অভিযুক্ত মিজান মিয়া বর্তমানে পুলিশি প্রহরায় রমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সাত বছর আগে তয়েজ উদ্দিন মাস্টারের মেয়ে সুমি বেগমের সঙ্গে পার্শ্ববর্তী সুবিদ গ্রামের মিজান মিয়ার বিয়ে হয়। তাদের সংসারে পাঁচ বছরের একটি কন্যাসন্তান রয়েছে। বিয়ের চার বছর পর তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। বিচ্ছেদের পর পুনরায় সাবেক স্ত্রীকে ফিরে পেতে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেন মিজান। কিন্তু তাদের যোগাযোগের মধ্যে বাধ সাজে সুমির বড় ভাই রোকন মিয়া। ঘটনার দিন সোমবার সন্ধ্যায় উপজেলার চৌধুরানী বাজার থেকে সুমি ও তার ভাই রোকন বাড়ির উদ্দেশে রওনা হয়ে মকরমপুর সড়কের কাছে পৌঁছালে মিজান তাদের পথ রোধ করেন।
পরে মিজান তার হাতে থাকা ধারালো অস্ত্র দিয়ে ভাইবোনকে কুপিয়ে আহত করেন। রোকন ও সুমিকে কুপিয়ে মিজান তার সাবেক শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে বাড়ির পাকাঘর পুড়ে যায়। আগুন দেওয়ার পর নিজেও বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন মিজান। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শ্বশুরবাড়ির পূর্বদিকের সড়কের ওপর পড়ে থাকা মিজানকে উদ্ধার করে। তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হলে পরে তাকে পুলিশ প্রহরায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
এদিকে গুরুতর আহত সুমি ও রোকনকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে পীরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক রোকনকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত সুমিকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
পীরগাছা থানার ওসি সরেস চন্দ্র জানান, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। বিষপানে অসুস্থ মিজানকে পুলিশ পাহারায় রমেক হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তিনি জানান, এ ঘটনায় চারজনকে আসামি করে নিহতের ভাই তৌহিদুর রহমান একটি মামলা করেছেন।
