শুক্রবার, ২৯ জুলাই, ২০২২ ০০:০০ টা

দুই নেতায় তিন বছর পার

সিলেটে যুবলীগের কমিটি পূর্ণাঙ্গ হওয়ার আগে মেয়াদপূর্তি, হতাশ নেতা-কর্মীরা

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

দুই নেতায় তিন বছর পার

সিলেট জেলা ও মহানগর যুবলীগের নেতৃত্বে অচলাবস্থা ছিল দীর্ঘদিনের। এই অচলাবস্থা কাটাতে ২০১৯ সালের ২৭ জুলাই মহানগর ও ২৯ জুলাই জেলা যুবলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনের মাধ্যমে কাউন্সিলরদের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হন দুই ইউনিটের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। এরপর কেটে গেছে তিন বছর মেয়াদি কমিটির সময়। কিন্তু আলোর মুখ দেখেনি পূর্ণাঙ্গ কমিটি। অনুমোদনের অপেক্ষায় আট মাস ধরে কেন্দ্রে পড়ে আছে মহানগর শাখার কমিটি। আর জেলা শাখা এখনো কমিটি জমা দিতেই পারেনি। পূর্ণাঙ্গ কমিটি না হওয়ায় দলের পদপ্রত্যাশীদের মাঝে দেখা দিয়েছে ক্ষোভ ও হতাশা। দলীয় সূত্র জানায়, যুবলীগের তৎকালীন চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরীর উপস্থিতিতে ২০১৯ সালের ২৭ জুলাই সিলেট মহানগর যুবলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে কাউন্সিলরদের প্রত্যক্ষ ভোটে আলম খান মুক্তি সভাপতি ও মুশফিক জায়গীরদার সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। মহানগরের দুই দিন পর ২৯ জুলাই অনুষ্ঠিত হয় জেলা যুবলীগের সম্মেলন। ওই সম্মেলনে সভাপতি পদে শামীম আহমদ (ভিপি শামীম) ও সাধারণ সম্পাদক পদে মো. শামীম আহমদ নির্বাচিত হন।

যুবলীগ নেতা-কর্মীদের মতে, ওই সম্মেলনের মধ্য দিয়ে ঝিমিয়ে পড়া সিলেট যুবলীগের প্রাণের সঞ্চার ঘটেছিল। বিশেষ করে পদপ্রত্যাশী নেতা-কর্মীরা শুরু করেছিলেন তোড়জোড়। কিন্তু তাদের আগ্রহ-উচ্ছ্বাস মিইয়ে যেতে বেশি দিন লাগেনি। দায়িত্বশীল নেতারা পূর্ণাঙ্গ কমিটি ‘হচ্ছে’ ‘হয়ে যাবে’ ‘প্রস্তুত হচ্ছে’ ‘কাজ চলছে’ বলে সময়ক্ষেপণই করেছেন শুধু। কিন্তু তিন বছরেও তারা পারেননি পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করতে। সংশ্লিষ্টরা জানান, যুবলীগের প্রতিটি ইউনিট কমিটির মেয়াদ থাকে তিন বছর। এ হিসাবে সিলেট যুবলীগের কমিটির মেয়াদও শেষ। এদিকে, নির্দিষ্ট মেয়াদে দীর্ঘ তিন বছর সময় পেয়েও ১০১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে না পারায় যুবলীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে এখন হতাশা বিরাজ করছে। পদপ্রত্যাশীদের অনেকেই এখন ক্ষুব্ধ। তারা বলছেন, সামনের জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে অবিলম্বে সিলেট যুবলীগকে পুনর্গঠন জরুরি। মহানগর যুবলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশী এক নেতা বলেন, ‘সর্বস্তরের নেতা-কর্মীদের মধ্যে এখন কেবলই হতাশা, ক্ষোভ। সামনে গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় নির্বাচন। এ জন্য কেন্দ্রের হস্তক্ষেপে দ্রুততার সঙ্গে সিলেট যুবলীগকে পুনর্গঠন করে কর্মঠ, পরিশ্রমী, দায়িত্বশীল নেতৃত্ব গঠন করতে হবে।’ এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিলেট মহানগর যুবলীগের সভাপতি আলম খান মুক্তি বলেন, ‘সম্মেলনের পর দলকে গোছানোর কাজ শুরু করা হয়। কিন্তু করোনার কারণে দুই বছর পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন সম্ভব হয়নি। তবে পূর্ণাঙ্গ কমিটি না থাকলেও দলীয় কার্যক্রমে কোনো ঘাটতি ছিল না। তৃণমূল পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের নিয়ে দলীয় সব কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। এ ছাড়া করোনা ও বন্যার সময় সাধারণ মানুষের পাশেও ছিল মহানগর যুবলীগ। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসলে অনুমোদনের জন্য কেন্দ্রে পূর্ণাঙ্গ কমিটি জমা দেওয়া হয়। আট মাস ধরে কেন্দ্রে কমিটি অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। শিগগিরই কমিটি অনুমোদন দেওয়া হবে বলে কেন্দ্র থেকে জানানো হয়েছে।’ পূর্ণাঙ্গ কমিটি আসলে দলীয় কার্যক্রমে আরও গতি আসবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন আলম খান মুক্তি।

এদিকে, পূর্ণাঙ্গ কমিটির ব্যাপারে জানতে সিলেট জেলা যুবলীগের সভাপতি শামীম আহমদকে (ভিপি শামীম) ফোন দেওয়া হলে সাড়া পাওয়া যায়নি। সাধারণ সম্পাদক মো. শামীম আহমদের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর