শুক্রবার, ৫ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা

সিলেটে ডেঙ্গু নিয়ে আতঙ্ক

দায়ীদের বিরুদ্ধে জেল জরিমানার হুঁশিয়ারি

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

সিলেটে ডেঙ্গু নিয়ে আতঙ্ক

সিলেটে দেখা দিয়েছে ডেঙ্গু আতঙ্ক। নগরীর বিভিন্ন স্থানে এডিস মশার লার্ভার সন্ধান পাওয়ার পর নগরবাসীর মধ্যে এই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সিটি করপোরেশনের বারবার সতর্কতার পরও কিছু ব্যবসায়ী টায়ার ও স্যানেটারি সামগ্রী দোকানের সামনে খোলা জায়গায় রাখায় বৃষ্টির পানি জমে বাসা বাঁধছে এডিস মশা। ইতোমধ্যে একাধিক স্থানে জমাকৃত পানিতে এডিস মশার লার্ভার সন্ধান পেয়েছে সিটি করপোরেশন ও সিভিল সার্জন অফিস। স্থানে স্থানে এডিস মশার লার্ভা পাওয়ায় সিলেটে ডেঙ্গু আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। এখন থেকে কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামনে জমানো পানিতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে জেল ও জরিমানা করার হুঁশিয়ারি দিয়েছে সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক)। কয়েক দিনের মধ্যে বাসা-বাড়িতেও অভিযান পরিচালনার কথা জানিয়েছেন সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. জাহিদুল ইসলাম।  সিসিক সূত্র জানায়, ২০১৮ সালে সিলেটে ৭০০’র বেশি ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছিলেন। এরপর থেকে সচেতনতামূলক ব্যাপক প্রচারণার কারণে ধীরে ধীরে কমে আসে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। তবে প্রতি বছর বর্ষায় সিলেট নগরীর দক্ষিণ সুরমার কদমতলী ও ভার্থখলা এলাকায় অভিযান চালালেই অস্তিত্ব মিলছে এডিস মশার লার্ভার। ওই এলাকার প্রতিটি টায়ার ও স্যানেটারি সামগ্রীর দোকানের সামনে দোকানের মালামাল রাখেন ব্যবসায়ীরা। টায়ার ও স্যানেটারি সামগ্রীতে জমে থাকা বৃষ্টির পানিতে প্রতি বছর ডিম পাড়ে এডিস মশা। সিটি করপোরেশন প্রতি বছর ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ওই এলাকার ব্যবসায়ীদের জরিমানা করে থাকে।

 কিন্তু এরপরও তাদের মধ্যে সচেতনতা তৈরি হয়নি।

সিসিকের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. জাহিদুল ইসলাম জানান, এবারও ওই এলাকার টায়ার ও স্যানেটারি দোকানগুলোর সামনে জমে থাকা পানিতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেছে। তিনটি স্থানে এডিস মশার লার্ভা পেয়ে সেগুলো ধ্বংস করা হয়েছে। ওই এলাকার ব্যবসায়ীদের চূড়ান্তভাবে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। এরপর কারো ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামনে জমে থাকা পানিতে এডিসের লার্ভা পাওয়া গেলে কোনো ধরনের ছাড় দেওয়া হবে না। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে জেল জরিমানার আওতায় আনা হবে সংশ্লিষ্টদের।

সিসিকের স্বাস্থ্য শাখা সূত্র জানায়, গত ৩১ জুলাই নগরীর কদমতলী এলাকায় অভিযান চালিয়ে তিনটি স্থানে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায়। এরপর মঙ্গলবার অভিযান চালিয়ে লার্ভা ধ্বংস এবং কদমতলী ও ভার্থখলা এলাকায় ফগার মেশিন দিয়ে মশক নিধন করা হয়। এর আগে, সিলেট রেলওয়ে স্টেশন, ভার্থখলা ও কদমতলী বাস টার্মিনাল এলাকা থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছিল সিভিল সার্জন অফিসের অভিযানিক দল। পরীক্ষায় এসব এলাকায় এডিস মশার লার্ভা শনাক্ত হয় বলে জানিয়েছেন সিভিল সার্জন ডা. এস এম শাহরিয়ার।

সিলেটের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. জন্মেজয় দত্ত জানান, ‘আমরা রুটিন কাজের অংশ হিসেবে বিভিন্ন এলাকা থেকে নমুনা সংগ্রহ করে ল্যাবে পাঠাই। পরীক্ষায় এডিস মশার অস্তিত্ব পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্ট এলাকার জনসাধারণকে সর্তক করে দেওয়া হয়। দক্ষিণ সুরমার যেসব এলাকায় এডিস মশার অস্তিত্ব শনাক্ত হয়েছে সেসব এলাকার লোকজনকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে।

সিসিকের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. জাহিদুল ইসলাম জানান, সিলেটকে ডেঙ্গুমুক্ত রাখতে অভিযান শুরু হয়েছে। প্রয়োজনে বাসা-বাড়িতেও অভিযান চালানো হবে। এখন থেকে কোথাও এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর