বৃহস্পতিবার, ১৮ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা
টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণসহ সাত দফা দাবি

জোয়ারের পানিতে ভাসছে উপকূল

দিনভর বাঁধ টিকিয়ে রাখার লড়াই

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা

জোয়ারের পানিতে ভাসছে উপকূল

টানা পাঁচ দিন স্বেচ্ছাশ্রমের পর খুলনার কয়রায় ভেঙে যাওয়া রিংবাঁধ মেরামত করেছেন গ্রামবাসী -বাংলাদেশ প্রতিদিন

টানা পাঁচ দিনের স্বেচ্ছাশ্রমের পর খুলনার কয়রায় ভেঙে যাওয়া রিংবাঁধ মেরামত করেছে গ্রামবাসী। গতকাল ভোরের আলো ফোটার আগেই প্রতিটি মসজিদ থেকে মাইকে গ্রামবাসীকে ঝুড়ি ও কোদাল নিয়ে বাঁধে আসার জন্য ঘোষণা দেওয়া হয়। নিজেদের রক্ষার তাগিদে ভাঙা বাঁধের কাছে জড়ো হয় হাজার হাজার মানুষ। নদীতে ভাটার টানে পানি নামতে শুরু করলে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে শুরু হয় মেরামত কাজ। দুপুরে নদীতে জোয়ার আসার আগ পর্যন্ত একটানা মাটি কেটে, বাঁধ উঁচু করার চেষ্টা চলে।

কয়রা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সভাপতি প্রভাষক বিদেশ রঞ্জন মৃধা বলেন, ১৩ আগস্ট দক্ষিণ বেতকাশির চরামুখা রিংবাঁধ ভেঙে চরামুখা, হলুদবুনিয়া, মেদেরচর, বীণাপানি ও দক্ষিণ বেতকাশি গ্রামের প্রায় ৬ হাজার বিঘা জমির চিংড়ি ঘের তলিয়ে যায়। পানির তোড়ে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার পাকা রাস্তা ধসে গেছে। তিনি বলেন, প্রথমে বাঁধে ভাঙা স্থানে কিছুটা দূর থেকে বাঁশ পুতে ও টিনের বেড়া দিয়ে পানির চাপ কমিয়ে ফেলা হয়। এরপর বস্তায় মাটি ভরে টিনের বেড়া ঘেঁষে মজবুত করে রাস্তা   তৈরি করে হাতে হাতে মাটি দিয়ে বাঁধ উঁচু করা হয়। এভাবেই আস্তে আস্তে সামনে অগ্রসর হয় বাঁধ নির্মাণ কাজ।

এদিকে কয়রার দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়নে নদীশাসন ব্যবস্থার মধ্যদিয়ে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধায়নে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণসহ ৭ দফা দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন গ্রামবাসী। গতকাল খুলনা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে দক্ষিণ বেদকাশি গোলখালীর বাসিন্দা আশরাফুল ইসলাম নূর এসব দাবির কথা ঘোষণা করেন।

দাবিগুলো হচ্ছে- দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়নের তিন পাশের শাখবাড়িয়া ও আড়পাঙ্গাশিয়া নদী এবং কপোতাক্ষ নদে নদীশাসন ব্যবস্থা টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ, সেনাবাহিনীর প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে বাঁধ নির্মাণ, জলবায়ু ও পুনর্বাসন তহবিলে গৃহনির্মাণ কর্মসংস্থানের সুযোগ, সাতক্ষীরা পওর ১৩, ১৪/১ ও ১৪/২নং পোল্ডার খুলনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের অন্তর্ভুক্ত, ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা-ঘাট সংস্কার, বাঁধ নির্মাণ ও সংস্কারে বরাদ্দ অর্থ ব্যয়ে স্বচ্ছতা ও নির্মাণ কাজে অনিয়মের অভিযোগ বিচার বিভাগীয় তদন্ত সাপেক্ষে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

এতে বলা হয়, চরামুখা খালেরগোড়া নামক স্থানে কপোতাক্ষ নদের বেড়িবাঁধ ভেঙে কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হলে ১৫ ও ১৬ আগস্ট ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত বিপুল সংখ্যক মানুষ স্বেচ্ছাশ্রমে চেষ্টা করে নোনা পানির জোয়ার-ভাটা আটকাতে পারেনি। এখনো সমগ্র ইউনিয়নটির অধিকাংশ এলাকাজুড়ে জোয়ার-ভাটা চলছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়-পাঁচটি গ্রামের অন্তত ২০ সহস্রাধিক মানুষ, ভেঙে

গেছে বহু মানুষের বসতঘর, ভেসে গেছে মৎস্যঘের-মাছের পুকুর, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সমগ্র ইউনিয়নের রাস্তা-ঘাট।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর