শনিবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

২৫ বছর পর শুরু হচ্ছে সেই চার লেন সড়কের কাজ

বাড়বে পর্যটক, কমবে যানজট, ব্যয় হবে ৭২৭ কোটি টাকা

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

প্রায় আড়াই দশক ধরে সড়কটি নিয়ে চলছিল নানা পরিকল্পনা। কখনো চার লেন, কখনো ছয় লেনের। মাঝেমধ্যে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের লক্ষ্যে বিশেষজ্ঞ দলের সরেজমিন পরিদর্শন। এভাবেই চলছিল সিলেট বিমানবন্দর-কুমারগাঁও চার লেন সড়ক প্রকল্পের কার্যক্রম। অবশেষে সব অনিশ্চয়তা কাটিয়ে শুরু হতে যাচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ এ চার লেন সড়কের কাজ। আজ (শনিবার) বিকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন এমপি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকল্পের কাজ উদ্বোধন করবেন। ১৩ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কটি চার লেনে উন্নীতকরণে ব্যয় হবে ৭২৭ কোটি ৬৩ লাখ ২০ হাজার টাকা। সড়কটি চার লেন হলে সিলেটের পর্যটন খাতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। পাশাপাশি সিলেট নগরে যানজট কমবে।

চলতি বছরের ৪ জানুয়ারি ‘কুমারগাঁও-বাদাঘাট-এয়ারপোর্ট সড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ’ প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)-এ অনুমোদন পায়। ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করার কথা।

জানা গেছে, সিলেটের কুমারগাঁও-বাদাঘাট-এয়ারপোর্ট সড়কটি বর্তমানে দুই লেনের। প্রায় সাড়ে ১২ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে কুমারগাঁও-বাদাঘাট-এয়ারপোর্ট সড়কটি নির্মাণ করা হয় ২০১২-১৪ অর্থবছরে। পরে পাথরবাহী ট্রাক চলাচল, বিমানবন্দর অভিমুখীদের সুবিধা এবং পর্যটকবাহী যান চলাচলের জন্য সড়কটি চার লেনে উন্নীত করার দাবি ওঠে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৬ সালে প্রকল্প প্রস্তাব তৈরি করা হয়। পরের বছর চার লেন সড়কের সঙ্গে দুটি সার্ভিস লেন যুক্ত করে তৈরি হয় সংশোধিত প্রস্তাব। ২০১৯ সালের দিকে শুধু চার লেনের প্রস্তাব জমা পড়ে মন্ত্রণালয়ে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছিল না। গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি সম্প্রসারণের দাবি ওঠে সিলেটের রাজনৈতিক, সামাজিক ও ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের কাছ থেকে। জানা গেছে, ড. মোমেন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর কুমারগাঁও-বাদাঘাট-এয়ারপোর্ট সড়ক সম্প্রসারণ প্রকল্পে গতি আনার চেষ্টা করেন। ২০২০ সালের ৮ আগস্ট সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল সড়কটি পরিদর্শন করে। সড়কটির বাস্তব অবস্থা ও আগের প্রস্তাবিত নকশা পর্যবেক্ষণ করে তারা। সড়ক ও জনপথ বিভাগ সিলেট কর্তৃক তৈরি প্রস্তাবিত চার লেনের নকশায় ত্রুটি থাকায় অসন্তোষ প্রকাশ করেন প্রতিনিধি দলের প্রধান সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের তৎকালীন যুগ্মপ্রধান জাকির হোসেন। তিনি দ্রুত অভিজ্ঞ সার্ভেয়ার দল নিয়োগ করে ডিজিটাল সার্ভে করে সংশোধিত নকশা তৈরি করতে সওজ সিলেট কার্যালয়কে নির্দেশ দেন। কিন্তু ছয় মাসেও কাজ শুরু হয়নি। চলতি বছরের ৪ জানুয়ারি প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদিত হয়। সড়কটি চার লেনে উন্নীত হলে সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজার জেলার যেসব যাত্রী ওসমানী বিমানবন্দরে আসবেন তাদের আর সিলেট শহরে প্রবেশ করতে হবে না। ওই সড়ক দিয়ে তারা সহজেই পৌঁছে যাবেন বিমানবন্দরে। এ ছাড়া সিলেটের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র সাদাপাথর, বিছানাকান্দি ও রাতারগুল ভ্রমণের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যাবে এ সড়কটি। সড়কটি চার লেনে উন্নীত হওয়ার পর সিলেটের সর্ববৃহৎ কোয়ারি ভোলাগঞ্জ থেকে উত্তোলিত পাথর বহনকারী ট্রাকগুলোরও আর নগরে প্রবেশ করতে হবে না। এ সড়ক দিয়ে সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক হয়ে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে পৌঁছে যাবে। এ ছাড়া শেখ রাসেল আইটি পার্কের সঙ্গেও যোগাযোগ স্থাপিত হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর