সোমবার, ২ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

সোনারগাঁ সড়কে নিত্য যানজট

৫ কিলোমিটার যেতে দুই ঘণ্টা

সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি

সোনারগাঁ সড়কে নিত্য যানজট

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সংযোগ নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলা সদরের প্রধান সড়কে নিত্যদিনের যানজটে দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে নাগরিক জীবন। উপজেলার মোগরাপাড়া চৌরাস্তা থেকে বৈদ্যেরবাজার খেয়াঘাট পর্যন্ত মাত্র ৫ কিলোমিটার সড়কে চলাচলরত যাত্রীদের ১৫ মিনিটের গন্তব্যে এখন দেড় থেকে দুই ঘণ্টার বেশি সময় লাগছে। নিত্য যানজট নিরসনে কারও কোনো উদ্যোগ নেই বললেই চলে। প্রতিদিনের যানজট মানুষের ঘাড়ে রীতিমতো চেপে বসেছে। জনগুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন সোনারগাঁ উপজেলার বাসিন্দাদের পাশাপাশি কুমিল্লার হোমনা, মেঘনা ও পাশের আড়াইহাজার উপজেলার হাজার হাজার মানুষের চলাচল। স্থানীয় মোগরাপাড়া ও বৈদ্যেরবাজার এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, ব্যাটারি ও সিএনজি চালিত অটোরিকশার পাশাপাশি এ সড়কে বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠানের ভারী যানবাহন চলার কারণে যানজটের শিকার হচ্ছে সাধারণ মানুষ। তাদের দাবি, ভোগান্তি নিরসনে সড়কটি আরও প্রশস্ত করা অত্যন্ত জরুরি।

জানা গেছে, জনগুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ যাতায়াত করে। সড়কের পাশে কিছু কিছু অংশে বাঁশমুলির দোকান রয়েছে। তা ছাড়া দিন দিন ব্যাটারি ও সিএনজি চালিত অটোরিকশাসহ ভারী যানবাহন চলাচল বাড়ছে। এতে সড়কটিতে যানজটের ভোগান্তি মানুষের নিত্যসঙ্গী হয়ে দাঁড়িয়েছে। মাঝেমধ্যে যানজট প্রকট আকার ধারণ করলে নির্দিষ্ট সময়ের চেয়ে কয়েক গুণ বেশি সময় লাগে। সড়কের পাশেই রয়েছে সোনারগাঁ উপজেলা সদর হাসপাতাল, উপজেলা প্রশাসন কার্যালয়, থানা কার্যালয়, সাবরেজিস্ট্রি কার্যালয়, পল্লীবিদ্যুৎ কার্যালয়, কয়েকটি ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বিপণিবিতান, দুটি বাজারসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। প্রতিদিন যানজটের কারণে এসব প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং সেবা নিতে আসা মানুষের ভোগান্তি এখন চরমে। এ ছাড়া বাংলাদেশ লোক ও কারু শিল্প ফাউন্ডেশন ও পানাম নগরীতে ঘুরতে আসা দেশি বিদেশি পর্যটকরাও এ সড়কটি ব্যবহার করেন।

স্থানীয় কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দারা জানান, কয়েক বছর ধরে সোনারগাঁ উপজেলার বৈদ্যেরবাজার ও বারদী ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় বেশ কয়েকটি শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যা অবিরত এসব শিল্পপ্রতিষ্ঠানের পণ্যবাহী শত শত ভারী যানবাহন এ সড়ক ব্যবহার করে ঢাকা- চট্টগ্রাম মহাসড়কে ওঠে। যার ফলে প্রতিদিনই তীব্র যানজটের সৃষ্ট হয়। উপজেলার চান্দেরকীর্তি এলাকার ব্যবসায়ী হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘কোনো মুমূর্ষু রোগীকে জরুরি ভিত্তিতে ঢাকায় নিতে হলে এ সড়ক ব্যবহার করতে হয়।

 কিন্তু যানজটের কবলে পড়ে সময়মতো রোগী নিয়ে হাসপাতালে পৌঁছাতে না পারায় বিপদে পড়তে হচ্ছে অনেককে। জরুরি অনেক কাজে সময়মতো পৌঁছানো সম্ভব হয় না।’ মোগরাপাড়া চৌরাস্তার মুদি ব্যবসায়ী আবদুল আজিজ বলেন, ‘যানজটের কারণে পণ্যসামগ্রী আনা-নেওয়া করতে প্রতিদিনই সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। এ সড়কে যানজট নিত্যদিনের ঘটনা। কবে যানজটমুক্ত হবে কেউ জানে না।’

সোনারগাঁ থানার ওসি মাহাবুব আলম বলেন, ‘এ সড়কের যানজটে পুলিশও ভুক্তভোগী। সড়কটি সরু হলেও বিভিন্ন শিল্পকারখানার ভারী যানবাহন চলাচল করায় প্রতিনিয়ত যানজটের মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হচ্ছে। ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার সংখ্যাও বেশি। এটি নিয়ে কাজ চলছে। শিগগিরই যানজট সমস্যার সমাধান হবে।’

নারায়ণগঞ্জ সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহানা ফেরদৌস বলেন, ‘সোনারগাঁ উপজেলা সদরের প্রধান সড়কটি আরও প্রশস্ত করতে প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। শিগগিরই সড়কটির কাজ শুরু হবে।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর