শিরোনাম
বুধবার, ৪ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা
সংক্ষিপ্ত

জাবিতে আমরণ অনশনে ১৫৬ কর্মচারী, অসুস্থ ৭

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি

চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে টানা দ্বিতীয় দিনের আমরণ অনশনে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) দৈনিক মজুরিভিত্তিতে কর্মরত ১৫৬ কর্মচারী। গতকাল বিকাল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত এ অনশনে জ্ঞান হারিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন সাতজন। এর মধ্যে তিনজনকে সাভারের এনাম মেডিকেলে ভর্তি করানো হয়েছে বলে জানান অনশনকারী বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের পিয়ন ফরহাদ হোসেন। অসুস্থরা হলেন- বঙ্গমাতা হলের অ্যাটেনডেন্ট আবু রায়হান, শেখ হাসিনা হলের ক্লিনার রিফা সুলতানা ও মালি শরিফুল ইসলাম, বেগম সুফিয়া কামাল হলের নূর নাহার বেগম, শহীদ রফিক-জব্বার হলের নিরাপত্তারক্ষী সেলিম হোসেন, মেডিকেল সেন্টারের পিয়ন নিপা বিশ্বাস ও বঙ্গমাতা হলের অ্যাটেনডেন্ট অঞ্জলি। বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রের উপ-প্রধান মেডিকেল অফিসার ডা. রিজওয়ানুর রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘পাঁচজনের মধ্যে তিনজনকে এনাম মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে এবং একজনকে স্যালাইন দিয়েছি। অন্যজন এখন সুস্থ আছেন। অসুস্থদের সবাই খাবার না খাওয়ায় এসিডিটির সমস্যায় এমন হয়েছে।’ অনশনকারী তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘প্রায় ৮-১০ বছর ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ে দৈনিক ৪০০ টাকায় মজুরিভিত্তিতে চাকরি করছেন তারা।

 চাকরি দেওয়ার সময় তিন মাস পরে স্থায়ী করা হবে বলে আশ্বাস দেয় কর্তৃপক্ষ। এখন পর্যন্ত বাস্তব কোনো পদক্ষেপ দেখা যায়নি। বিভিন্ন সময়ে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে নতুন পদে বাইর থেকে লোক নেওয়া হয়েছে। এখন প্রশাসন আবারও আগের মতো বিজ্ঞপ্তি দিয়ে আবেদন করতে বলছে। আবেদন করলে আমাদের স্থায়ীভাবে নেওয়া হয় না। এখন আমরা আমরণ অনশনে আছি। চাকরির নিশ্চয়তা না দেওয়া পর্যন্ত এখানে থাকব।’

এদিকে আন্দোলনরতদের অনশন প্রত্যাহারের অনুরোধ জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবে এতে সাড়া দেননি অনশনকারীরা। বরং তাদের চাকরি স্থায়ী হওয়ার নিশ্চয়তা না দেওয়া পর্যন্ত আমরণ অনশন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

এদিকে আন্দোলনকারীদের প্রতি সংহতি জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ইউনিয়ন সংসদের সাধারণ সম্পাদক অমর্ত্য রায় বলেন, ‘অনশনকারীদের যৌক্তিক দাবি আদায়ে পাশে থাকবে জাবি ছাত্র ইউনিয়ন। আমরা আশা করব, যত দ্রুত সম্ভব প্রশাসন অনশনকারীদের সঙ্গে আলোচনা করে তাদের চাকরি স্থায়ী করার ব্যাপারে সিদ্ধান্তে উপনীত হবে। নইলে অনশনকারীদের দাবি আদায়ে আন্দোলনের ডাক দেবে ছাত্র ইউনিয়ন।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ফিরোজ-উল-হাসান বলেন, ‘সব মিলিয়ে নতুন হলগুলোয় প্রায় ৭০টি শূন্য পদ রয়েছে। আন্দোলনকারীদের বেশির ভাগই মালি, বাবুর্চি, পিয়ন ও ক্লিনার হিসেবে বর্তমানে কাজ করছেন। নতুন হলে এ ধরনের কোনো পদই নেই। তাছাড়া ১৫৬ জনকে একসঙ্গে কারও পক্ষে চাকরি স্থায়ী করা সম্ভব নয়। আমরা তাদের অনশন প্রত্যাহারের অনুরোধ জানিয়েছি। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী আবেদন করলে তাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। তারা চাকরির নিশ্চয়তা চায়, এটা কারও পক্ষে দেওয়া সম্ভব না।’

এদিকে গতকাল দুপুর ১২টায় অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় নবনির্মিত ছয়টি হল পরিদর্শনে এসে অনশনরতদের সঙ্গে কথা বলেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. দিল আফরোজা বেগম।

এ সময় তিনি কর্মচারীদের অনশন প্রত্যাহার করে নিজ নিজ কাজে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে নবনির্মিত হলে নিয়োগের ক্ষেত্রে তাদের অগ্রাধিকার দেওয়ার জন্য প্রশাসনকে অনুরোধ করেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর