শনিবার, ১৪ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

এবারও তিস্তা প্রকল্পে সেচের বাইরে থাকছে ৪৯ হাজার হেক্টর জমি

পানি মিলছে প্রায় ৩ হাজার কিউসেক

নজরুল মৃধা, রংপুর

এবারও চলতি মৌসুমে তিস্তা সেচ প্রকল্পে ৪৯ হাজার হেক্টর জমি সেচের বাইরে থাকছে। বিগত বছরগুলোর মতো এবারও তিস্তার পানি দিয়ে শতভাগ সেচ দেওয়া সম্ভব হবে না। চলতি বোরো মৌসুমে অনেক জমিতে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় কৃষকদের সেচ দিতে হবে। এতে কৃষকদের বাড়তি ব্যয় হবে। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে দেশের সর্ববৃহৎ সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের মাধ্যমে সেচ কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। সেচ এলাকায় ৮৪ হাজার হেক্টর জমিতে সেচ সুবিধা দেওয়ার কথা থাকলেও এ বছর সেচ দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩৫ হাজার হেক্টর জমিতে। ফলে ৪৯ হাজার হেক্টর সেচ কমান্ডের বাইরে থাকছে। শুক্রবার সেচ খালে পানি সরবরাহ শুরু করা হয়।

জানা গেছে, সেচ প্রকল্পের আওতায় ২০১৪ সালে বোরো মৌসুমে নীলফামারী, রংপুর ও দিনাজপুর জেলার ৮৪ হাজার হেক্টর জমিতে সেচ দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ছিল। কিন্তু সেই বছর সেচ দেওয়া সম্ভব হয় মাত্র ১৮ হাজার হেক্টর জমিতে। ২০১৫ ও ২০১৬ সালে সেচ দেওয়া হয় ১০ হাজার হেক্টর জমিতে। ২০১৭ সালে মাত্র ৮ হাজার হেক্টর জমিতে সেচ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ২০১৮ সালে ৩৫ হাজার হেক্টর, ২০১৯ ও ২০২০ সালে তা বেড়ে ৪০ হাজার হেক্টরে দাঁড়ায়। সর্বশেষ ২০২১-২২ সালে ৫৩ হাজার হেক্টর জমিতে সেচ দেওয়া হয়। এবার কমে ৩৫ হাজার হেক্টরে সেচ দেওয়া সম্ভব হবে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়। পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, ব্যারাজের বেশ কয়েকটি ক্যানেলে উন্নয়ন কাজ চলমান। তাই বেশ কয়েকটি খালে এ বছর পানি দেওয়া সম্ভব হবে না। তবে আগামী মৌসুম থেকে এই প্রকল্প এলাকায় সেচের জমির পরিমাণ আরও বাড়বে। তিস্তা ব্যারাজ সেচ প্রকল্প সূত্র জানায়, প্রকল্প এলাকায় সেচ দেওয়া এবং নদীর প্রবাহমাত্রা ঠিক রাখতে তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে স্বাভাবিক প্রবাহমাত্রা থাকায় প্রয়োজন ২০ হাজার কিউসেক পানি। শুধু সেচ প্রকল্প চালাতেই প্রবাহমাত্রা থাকা প্রয়োজন প্রায় ১৪ হাজার কিউসেক এবং নদীর অস্তিত্ব রক্ষার জন্য প্রয়োজন ৬ হাজার কিউসেক পানি। কিন্তু শুকনো মৌসুমে তিস্তায় প্রয়োজনীয় পানি পাওয়া যায় না। শুষ্ক মৌসুমে বোরো আবাদের সময় ব্যারাজ পয়েন্টে বিগত কয়েক বছর ধরে পাওয়া যায় মাত্র দুই থেকে তিন হাজার কিউসেক পানি। যে সামান্য পরিমাণ পানি তিস্তা নদীতে পাওয়া যায় তার সবটুকুই সেচ চাহিদা মেটানোর লক্ষ্যে তিস্তা ব্যারাজ প্রকল্পের সেচ খালের মাধ্যমে কৃষিজমিতে সরবরাহ করা হচ্ছে। ব্যারাজের ৪৪টি গেট বন্ধ রেখে সেচ প্রকল্পে পানি সরবরাহ করায় মূল নদীতে পানির প্রবাহ বন্ধ হয়ে নদী ধু-ধু বালুচরে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে তিস্তা সেচ প্রকল্পে ১ হাজার ৪৭৫ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ চলছে।

 যা ২০২৪ সালের মধ্যে প্রকল্প বাস্তবায়ন হওয়ার কথা রয়েছে।

তিস্তা সেচ প্রকল্পের মুখ্য সেচ সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আবদুল হাকিম জানান, সেচ প্রকল্পের আওতাভুক্ত এলাকা হচ্ছে ৮৪ হেক্টর জমি। এবার বেশ কয়েকটি খালের উন্নয়ন কাজ চলায় সেচযোগ্য জমির পরিমাণ ধরা হয়েছে ৩৫ হাজার হেক্টর। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, খালগুলো সংস্কার হলে আগামীতে সেচের আওতা বাড়বে।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর