রবিবার, ৫ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা

১০ সেকেন্ডে থেমে গেছে ১৪ বছরের জীবন সংগ্রাম

স্বামীর মতো বিদেশের মাটিতে সন্তান হারিয়ে নির্বাক ইদ্রিসের মা

আজহার মাহমুদ, চট্টগ্রাম

ইদ্রিস মিয়ার বাড়ি চট্টগ্রামের হাটহাজারীর মেখল ইউনিয়নে। ২০০০ সালে ওমানে এক সড়ক দুর্ঘটনায় বাবা শাহেদ মিয়াকে হারান। পরিবারের বড় ছেলে হওয়ায় এরপর সংসারের হাল ধরতে হয়। শুরু হয় জীবন সংগ্রাম। ২০০৮ সালে পাড়ি জমান মধ্যপ্রাচ্যের দুবাইয়ে। বাড়তি উপার্জনের আশায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ২০১৪ সালে সেখান থেকে সাগরপথে চলে যান গ্রিসে। এরপর ভালোই চলছিল। কিন্তু গ্রিসের উত্তরাঞ্চলে ১০ সেকেন্ডের ওই ট্রেন দুর্ঘটনায় নিমেষে শেষ হয়ে গেছে ইদ্রিসের জীবন সংগ্রাম। মেখল ইউনিয়নের খলিফা পাড়ার মৃত শাহেদ মিয়ার বড় ছেলে মোহাম্মদ ইদ্রিস মিয়া (৩১)। তার ছোট দুই ভাই ও এক বোন আছে। তিনি গ্রিসের বিভিন্ন এলাকার মেলাতে শিশুদের খেলনা বিক্রি করতেন। সর্বশেষ ২০২০ সালে দেশে এসে বিয়ে করেছিলেন। দুর্ঘটনার আগে গত সোমবার তার মা ও মেজো ভাইয়ের সঙ্গে শেষবার মোবাইলে কথা হয়। গ্রিসের উত্তরাঞ্চলীয় শহর লারিসার কাছে মঙ্গলবার মধ্যরাতে যাত্রীবাহী ও মালবাহী ট্রেনের সংঘর্ষ হয়। এর মধ্যে যাত্রীবাহী ট্রেনটি রাজধানী এথেন্স থেকে উত্তরাঞ্চলীয় শহর থেসালোনিকি (Thessaloniki) যাচ্ছিল। গ্রিসে ইদ্রিসের রুমমেট ইকবাল হোসেনের বরাত দিয়ে ইদ্রিসের স্বজনরা জানান, ওই দুর্ঘটনায় যাত্রীবাহী বাসের সামনের বগিতে ছিল ইদ্রিস। ইদ্রিসের মেজো ভাই মোহাম্মদ ইলিয়াস বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, তার নিজের একটি চশমার দোকান আছে। ছোট ভাই জালাল উদ্দিন মধ্যপ্রাচ্যে থাকেন। ছোট বোন বিবাহিত। বাবার মৃত্যুর পর থেকে ভাইবোনদের নিয়ে ভালোভাবে বাঁচতে অনেক সংগ্রাম করেছেন ইদ্রিস। দুবাই থেকে অবৈধ পথে গ্রিসে গেলেও পরবর্তীতে তিনি গ্রিসের অস্থায়ী গ্রিনকার্ড পেয়েছিলেন। এর মধ্যে তিনবার দেশে এসেছিলেন। স্থায়ী গ্রিনকার্ড পাওয়ার অপেক্ষায় ছিলেন। এর মধ্যেই এই দুর্ঘটনা সব কেড়ে নিল।

 

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর