বুধবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা

চট্টগ্রামে বাড়ছে ডায়রিয়া রোগী

গ্রীষ্মের দাবদাহে ওষ্ঠাগত প্রাণ

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের শিশু স্বাস্থ্য ওয়ার্ডে কাগজে-কলমে শয্যা আছে ৬৪টি। কিন্তু প্রতিনিয়তই গড়ে ভর্তি থাকে ১২০ থেকে ১৩০ জন। তবে গত কয়েকদিনের তীব্র দাবদাহে এ সংখ্যা আরও বেড়েছে। কেবল চমেক হাসপাতাল নয়, চট্টগ্রামের সরকারি-বেসরকারি সব হাসপাতালের একই অবস্থা। প্রতিটি হাসপাতালেই শিশু ও বৃদ্ধ রোগী বেশি। বাড়ছে গ্রীষ্মের খরতাপ, বাড়ছে উষ্ণতা। সঙ্গে বাড়ছে পানিবাহিত ডায়রিয়াসহ নানা রোগ। গত এক সপ্তাহ ধরে চট্টগ্রামসহ সারা দেশে চলছে তীব্র দাবদাহ। চট্টগ্রামে গতকাল তাপমাত্রা ছিল ৩৫ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তীব্র গরমে শিশু ও বৃদ্ধদের কাহিল অবস্থা। তাছাড়া বিভিন্ন বয়সের মানুষও নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। জানা যায়, চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে শিশু বিভাগে শয্যা আছে ৩০টি। এর মধ্যে ভর্তি থাকে ৪০ থেকে ৫০ জন। চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালে শিশু স্বাস্থ্য বিভাগে কেবিনসহ শয্যা আছে ৩০০টি। এর মধ্যে প্রতিদিন নতুন করে রোগী ভর্তি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ জন। শয্যার বাইরেও ভর্তি থাকে রোগী।  চট্টগ্রাম ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শয্যা আছে ৮৩টি।  এগুলো ভর্তি থাকে রোগী। হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের মধ্যে অধিকাংশই ডায়রিয়ার। গতকাল দুপুরে চমেক হাসপাতালের শিশু বিভাগে গিয়ে দেখা যায়, শয্যার বাইরে মেঝেতেও রোগী ভর্তি রাখা হয়েছে। পটিয়া উপজেলার আশিয়া গ্রাম থেকে আসা ফাহিমা জান্নাত বলেন, গরমে আমার দুই বছর বয়সী শিশুর মারাত্মক ডায়রিয়া হয়। তাই বিলম্ব না করে গতকাল হাসপাতালে নিয়ে আসি। এখন একটু আগের চেয়ে ভালো।   চমেক হাসপাতালের শিশু স্বাস্থ্য ওয়ার্ডে রেজিস্ট্রার ডা. শ্রাবণী দাশগুপ্ত বলেন, প্রতিদিনই নতুন করে ডায়রিয়া ও শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগী ভর্তি হচ্ছে। শয্যার বাইরেও রোগী ভর্তি করাতে হয়। রোগী বেশি হলেও সবাইকে সর্বোচ্চ মানের সেবা প্রদান করা হচ্ছে। চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালে শিশু স্বাস্থ্য বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. ফাহিম হাসান রেজা বলেন, এখন অতিমাত্রায় গরমের কারণে শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। তাই এখন শিশুদের বাসা থেকে বের না করা, ঘামলে তা দ্রুত মোছে দেওয়া এবং কোনো সমস্যা দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে নিতে হবে। চট্টগ্রাম ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. মো. ইসমাঈল বলেন, হাসাপতালের শিশু বিভাগে ৮৩টি শয্যা আছে। এখন প্রতিটি শয্যায় রোগী ভর্তি আছে। চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী বলেন, ডায়রিয়াসহ নানা রোগ নিয়ে সতর্ক আছি। এ নিয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রতিটি উপজেলায় গঠন করা হয়েছে মেডিকেল টিম। প্রস্তুত আছে ২৮৪ জনের চিকিৎসক টিম। খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। বন্ধের সময়ও চলবে জরুরি চিকিৎসা। চিকিৎসকরা বলছেন, তীব্র গরমে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হলে শরীরে অতিমাত্রায় পানিশূন্যতা দেখা দিতে পারে। এ কারণে মারাত্মক দুর্ঘটনাও ঘটতে পারে। তাই পানিবাহিত এ রোগ নিয়ে সতর্ক ও সচেতন থাকা জরুরি। একই সঙ্গে  লক্ষণ দেখা দিলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর