শুক্রবার, ১৯ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা
হালদা নদী

নমুনা ডিমের দেখা মিলছে অপেক্ষা মূল ডিমের

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

নমুনা ডিমের দেখা মিলছে অপেক্ষা মূল ডিমের

উপমহাদেশের অন্যতম প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র ও বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ হালদা নদীতে কার্প জাতীয় মাছ (রুই, কাতলা, মৃগেল ও কালবাউস) নমুনা ডিম ছেড়েছে। গতকাল নদীর কয়েকটি পয়েন্টে নমুনা ডিম ছাড়ে। কয়েক ডিম সংগ্রহকারী ২ থেকে ৩ গ্রাম ডিম সংগ্রহ করে। তবে তারা মা মাছের পুরোদমে ডিম সংগ্রহের অপেক্ষায় জাল-নৌকা নিয়ে প্রহর গুনছেন। জানা যায়, বুধবার রাতে ও গতকাল সকাল-দুপুরে বৃষ্টি হয়। ফলে নদীর চার থেকে পাঁচটি স্থানে কার্প জাতীয় মাছ নমুনা ডিম ছাড়ে। বুধবার রাত সাড়ে ১১টায় জোয়ারের সময় এবং রাত ৩টায় ভাটার সময় হালদা নদীর হাটহাজারীর উত্তর মাদার্শা ইউনিয়নের রামদাস মুন্সির হাট, মাছুয়াঘোনা, আমতুয়া ও গড়দোয়ারা ইউনিয়নের নয়াহাট এলাকায় বেশকিছু নমুনা ডিম পেয়েছেন সংগ্রহকারীরা। অমাবস্যার জো, মেঘের গর্জন ও বৃষ্টিতে পাহাড়ি ঢল নামলে মা মাছ পুরোদমে ডিম ছাড়বে। অতীতে এপ্রিলের শুরু বা মে মাসের মাঝামাঝিতে ডিম ছাড়লেও এবার তীব্র দাবদাহ, পানিতে লবণাক্ততা বৃদ্ধি ও ঘূর্ণিঝড়ের কারণে হালদার মা মাছ ডিম ছাড়তে দেরি করে।

প্রবীণ ডিম সংগ্রহকারী কামাল উদ্দিন সওদাগর বলেন, নদীর কয়েকটি পয়েন্টে নমুনা ডিম পাওয়া গেছে। তা পরিমাণে খুব কম। কয়েক দিন ধরে বৃষ্টি পড়ছে। সঙ্গে পাহাড়ি ঢল এলে মা মাছ পুরোদমে ডিম ছাড়বে। আমরা এখন পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি নিয়ে মূল ডিমের অপেক্ষায় আছি। এবার প্রায় ৫০০ নৌকা নিয়ে ৭০০ থেকে ৮০০ ডিম সংগ্রহকারী মা মাছের নিষিক্ত ডিম সংগ্রহ করব।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় হালদা রিভার রিসার্চ ল্যাবরেটরির সমন্বয়ক ও গবেষক অধ্যাপক ড. মনজুরুল কিবরিয়া বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে এবার মা মাছ উপযুক্ত পরিবেশ পায়নি। ফলে বিলম্বেই ডিম ছাড়ছে। গতকাল মাত্র সামান্য নমুনা ডিম পেয়েছেন সংগ্রহকারীরা। তবে বৃষ্টি হওয়ায় পানিতে লবণাক্ততার হার কমেছে। মা মাছের ডিম ছাড়ার জন্য এখন উপযুক্ত পরিবেশ আছে।

চট্টগ্রাম জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ফারহানা লাভলী বলেন, এখন নদীতে ‘জো’-এর মৌসুম চলছে। এ জো আরও চার-পাঁচ দিন থাকবে। এর মধ্যে বজ্রসহ বৃষ্টি হচ্ছে। তাই পাহাড়ি ঢল নামলে মা মাছ ডিম ছাড়বে। আশা করছি, কয়েক দিনের মধ্যেই মা মাছ পুরোদমে ডিম ছাড়বে।

চবি হালদা রিসার্চ ল্যাবরেটরি সূত্রে জানা যায়, হালদা নদীতে ২০২২ সালে ডিম সংগ্রহ করা হয়েছিল ৬ হাজার ৫০০ কেজি, ২০২১ সালে সংগ্রহ করা হয় ৮ হাজার ৫০০ কেজি, ২০২০ সালে সংগ্রহ করা হয় ২৫ হাজার ৫০০ কেজি।

সর্বশেষ খবর