মঙ্গলবার, ৩০ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

হাঁড়িভাঙা আম সংরক্ষণে গবেষণা দাবি

নজরুল মৃধা, রংপুর

হাঁড়িভাঙা আম সংরক্ষণে গবেষণা দাবি

রংপুরের ঐতিহ্য হাঁড়িভাঙা আম। এই আমের সুখ্যাতি দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিদেশেও। ইতোপূর্বে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে হাঁড়িভাঙা আমকে জিআই পণ্য ঘোষণার জন্য একাধিকবার চেষ্টা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ। তবে ওই প্রচেষ্টা কি পর্যায়ে রয়েছে তা সংশ্লিষ্ট কেউ বলতে পারেন না। তাই রংপুরের সচেতন মহল হাঁড়িভাঙা আমকে দ্রুত জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দাবি করেছেন। এ ছাড়া হাঁড়িভাঙা আম সংরক্ষণের জন্য নেই কোনো  পদ্ধতি, নেই কোনো গবেষণা। এই আম সংরক্ষণ প্রক্রিয়া চাষিরা পেলে স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও পাঠানো সহজ হতো।  জানা গেছে, এই আম পাকলে ৩/৪ দিনের মধ্যে খেতে হয়। তা না হলে নষ্ট হয়ে যায়। কৃষি বিভাগ এই আম সংরক্ষণের পদ্ধতি বের করতে পারলে কৃষকরা এই আম দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে পাঠাতে পারত। জেলা সুজনের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আকবর হোসেন, সাবেক পৌর চেয়ারম্যান কাজী মো. জুননুনসহ  একাধিক ব্যক্তি দাবি করেছেন জরুরি ভিত্তিতে হাঁড়িভাঙা আমকে জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতির। কেমন করে হাঁড়িভাঙা এলো রংপুরে এ নিয়ে চমকপ্রদ তথ্য রয়েছে। মিঠাপুকুরের খোড়াগাছ ইউনিয়নের তেকানি গ্রামের আমজাদ হোসেন জানান, প্রায় ৮০ বছর আগে তার বাবা নফল উদ্দিন এই গাছটি রোপণ করেছিলেন। শত বছর আগে মিঠাপুকুরের  বালুয়া মাসুমপুর এলাকার জমিদার ছিলেন তাজ বাহাদুর সিংহ। তার একটি ফলের বাগান ছিল। সেই বাগানে বিভিন্ন প্রজাতির ফল ছিল। পেশাদার কিছু আম ব্যবসায়ী তার বাগান থেকে আম নিয়ে পদাগঞ্জ হাটে বিক্রি করতো। সেখান থেকে তার বাবা এই হাঁড়িভাঙা আম ক্রয় করে আবাদ শুরু করেন। আমটি খুবই সুস্বাদু হওয়ায় তৎকালীন আমলে ৫ টাকা দিয়ে  একশ আম কিনে আনেন এবং আম খাওয়ার পর আমের আঁটি থেকে চারা গজায়। ভাঁঙা হাঁড়ির মাঝখানে গাছটি জন্মেছিল বলে গাছটির নামকরণ করা হয় হাঁড়িভাঙা। তখন থেকেই এই অঞ্চলে হাঁড়িভাঙা আমের যাত্রা শুরু হয়। সেই গাছটি এখন পর্যন্ত জীবিত রয়েছে এবং ফলও দিচ্ছে। আমজাদ হোসেন হাঁড়িভাঙ্গা আমের জনক হিসেবে তার বাবার স্বীকৃতি দাবি করেন। হাঁড়িভাঙ্গা আম ১ হাজার ৯০০ হেক্টরের বেশি জমিতে চাষ হয়।  প্রতি হেক্টরে প্রায় ১০/১২ মেট্রিকটন আমের ফলন হয়। যার মূল্য প্রায় ২০০ কোটি টাকার বেশি। 

জেলা বৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক ওবায়দুর রহমান ম ল বলেন, রংপুরে বর্তমান  জেলা প্রশাসকের আগের জেলা প্রশাসক হাঁড়িভাঙা আমের জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতির জন্য চেষ্টা করেছিলেন। বর্তমানে ওই ফাইল কি পর্যায়ে রয়েছে তা তার জানা নেই। এই আম ২০ জুন থেকে বাজারে পাওয়া যাবে।

 

 

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর