বৃহস্পতিবার, ১ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা

তুচ্ছ ঘটনায় খুনোখুনি চট্টগ্রামে

এক মাসে চার খুন, বিকৃত মানসিকতা, বিষণ্ণতাকে দায়ী মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামে তুচ্ছ ঘটনাগুলো পরিণত হচ্ছে খুনে। কখনো ভাইয়ের হাতে বোন, স্বামীর হাতে স্ত্রী কিংবা বন্ধুর হাতে খুন হচ্ছে বন্ধু। মে মাসে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম নগরী এবং জেলায় চারটি খুনের ঘটনা ঘটেছে। আগের মাসগুলোতেও গড়ে একাধিক খুনের ঘটনা ঘটেছে। ফলে দীর্ঘ হচ্ছে তুচ্ছ ঘটনায় লাশের সারি। সংশ্লিষ্টদের দাবি বিকৃত মানসিকতা, বিষণ্ণতা এবং আত্মকেন্দ্রিকতার কারণে তুচ্ছ ঘটনা জন্ম দিচ্ছে খুনের মতো জঘন্য ঘটনা।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ও অপরাধ বিজ্ঞানী ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘বর্তমানে কিছু কিছু যুবকের মধ্যে পারিবারিক, সামাজিক, রাজনৈতিক কিংবা ধর্মীয় কোনো আদর্শ নেই। তারা হয়ে পড়েছে বিকৃত মানসিকতার। হয়ে গেছে মানসিকভাবে বিষণ্ণ এবং আত্মকেন্দ্রিক। পারিবারিক বন্ধন থেকে বের হওয়ার কারণেই মূলত নৈতিকতাবোধ লোপ পেয়েছে। তাই তারা পরিণত হয়েছে হিংসাত্মকে। ফলে তুচ্ছ ঘটনাগুলো পরিণত হচ্ছে খুনের মতো মারাত্মক অপরাধে।’ সিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম ও অপারেশন) এ এস এম মাহাতাব উদ্দিন বলেন, ‘তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে খুনের বিষয়টি আমাদেরও নজরে এসেছে। মূলত সামাজিক অস্থিরতার কারণেই এ ধরনের খুনের ঘটনা ঘটছে। এ পর্যন্ত যতগুলো অপরাধ সংঘটিত হয়েছে প্রত্যেকটার আসামিকে গ্রেফতারের আওতায় আনা হয়েছে।’ জানা যায়, চট্টগ্রামে ঠুনকো ঘটনার জেরে ঘটছে একের পর এক ঘটনা। কখনো প্রস্রাব করতে বাধা দেওয়া, আপ্যায়ন নিয়ে মনোমালিন্য কিংবা গরুতে খেত খাওয়া নিয়ে চট্টগ্রাম নগরী ও জেলায় ঘটছে একের পর এক ঘটনা। শুধু মে মাসেই ঘটেছে চারটি খুনের ঘটনা। তার আগের মাসগুলোতেও গড়ে খুন হয়েছেন একাধিক। সর্বশেষ ২৮ মে প্রস্রাব করতে নিষেধ করায় নগরীর পাহাড়তলী থানাধীন নয়াবাজার এলাকায় খুন করা হয় আজাদুর রহমান নামে এক নৈশপ্রহরীকে। ১৮ মে জেলার আনোয়ারা উপজেলায় কলাগাছের পাতা কাটায় চাচাতো ভাইয়ের হাতে খুন হন ফাতেমা বেগম নামে এক নারী। বান্ধবী নিয়ে কটূক্তি করায় ৮ মে নগরীর পাহাড়তলী থানার সাগরিকা জহুর আহমদ চৌধুরী স্টেডিয়াম এলাকায় খুন হন মাসুম এবং সজীব নামে দুই কিশোর। ২০ এপ্রিল জেলার রাঙ্গুনীয়া থানা এলাকায় কিস্তির টাকার জন্য চাপ প্রয়োগ করায় খুন করা হয় এনজিও কর্মকর্তা চম্পা চাকমাকে। ৫ এপ্রিল নগরীর বন্দরটিলা এলাকায় মামাকে আপ্যায়ন করা নিয়ে তর্কাতর্কির জের ধরে স্বামীর হাতে খুন হন পোশাক শ্রমিক সার্জিনা আকতার। মাদক ব্যবসায়ীর তথ্য দেওয়ায় গত ২১ জানুয়ারি নগরীর কর্ণফুলী থানাধীন সিডিএ আবাসিক এলাকায় খুন করা হয় মো. কায়েস নামে এক ব্যক্তিকে। ১৬ ডিসেম্বর রাঙ্গুনীয়া উপজেলার পদুয়া এলাকায় গরু খেতের সবজি খাওয়ায় পিটিয়ে হত্যা করা হয় জালাল উদ্দিন ও কামাল উদ্দিন নামে দুই সহোদরকে। গত বছরের ২ অক্টোবর পটিয়া উপজেলায় বাগবিতাণ্ডার জেরে বন্ধুর হাতে খুন হয় কিশোর মো. ফাহিম।

 

সর্বশেষ খবর