দেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তন হয়েছে। এর প্রভাবে স্থবির হয়ে পড়ে অফিসপাড়া। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে গত দুই দিন থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে অফিসগুলোয়। খোলা থাকলেও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সকালে এসেই চলে গেছেন। হয়নি কোনো কাজ। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললেও শিক্ষার্থী উপস্থিতি অনেক কম। থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে নগরের বিভিন্ন স্থানে। সড়কে যানবাহন নামলেও যাত্রীর সংখ্যা কম।
জানা যায়, সোমবার দুপুরে দেশে ক্ষমতার পালাবদল হয়। কার্যত এর পর থেকেই সব অফিসে স্থবিরতা দেখা দেয়। গত সোমবার রাতেই সরকারিভাবে অফিস খোলা রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়। তবে মঙ্গলবার ও গতকাল বুধবার চট্টগ্রামের সরকারি অফিসগুলো খোলা থাকলেও কোনো অফিসে দাপ্তরিক কাজ হয়নি। গতকাল দুপুর ১টায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে (চসিক) গিয়ে দেখা যায়, চসিক মেয়র নগর ভবনে আসেননি। তবে অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারী অফিসে আসেন। মেয়র বাসা থেকেই প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিচ্ছেন। সবাই একটা শঙ্কা নিয়ে সময় পার করছেন। কেউ কোনো বিষয় নিয়ে কথা বলছেন না। তবে চসিকের পরিচ্ছন্নতা বিভাগ, অর্থ বিভাগ, প্রকৌশল বিভাগসহ সেবাসম্পৃক্ত বিভাগগুলোর কার্যক্রম মোটামুটি চলছে। নিয়মিত অপসারণ করা হচ্ছে বর্জ্য। নেওয়া হচ্ছে ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক মেরামতের উদ্যোগ।
নাম প্রকাশ না করে চসিকের এক কর্মকর্তা বলেন, অফিস খোলা এবং বেশির ভাগ কর্মকর্তা-কর্মচারী আসছেন। তবে কার্যক্রম কম। অভিন্ন চিত্র চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) কার্যালয়ে। কার্যালয়ে আসেননি সিডিএ চেয়ারম্যান। সেখানে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপস্থিতি থাকলেও দাপ্তরিক কোনো কাজকর্ম হয়নি। চট্টগ্রামের প্রশাসনিক কার্যক্রমের কেন্দ্রবিন্দু জেলা প্রশাসন কার্যালয়। সে কার্যালয়েও চলেনি কোনো দাপ্তরিক কাজ। অনেক কর্মচারী খাতায় দৈনন্দিন হাজিরার স্বাক্ষর দিয়ে বাসায় চলে গেছেন।চট্টগ্রাম ওয়াসায় চলেনি কোনো কাজ। উপস্থিত ছিলেন না শীর্ষ কর্মকর্তারা।
সংস্থাগুলোর কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দেশে এখন সরকারি নির্দিষ্ট নির্দেশনা না থাকায় অনেকে অফিসে আসছেন না। তবে অনেকে নিরাপত্তার কারণেও অফিসে আসছেন না বলে জানা যায়।
গতকাল সড়কে যান চলাচল করেছে স্বাভাবিক নিয়মে। সড়কে ছিল বাস, মিনিবাস ও অটোরিকশা। কিন্তু যাত্রী ছিল কম। অটোরিকশা চালক মো. ইমরান বলেন, ‘গত মঙ্গলবার গাড়ি চালাইনি। গতকাল সকালে গাড়ি নিয়ে বের হয়েছি। কিন্তু যাত্রী কম থাকায় ভাড়াও কম। এখনো দিনের গাড়ির মালিকের টাকাও আয় করতে পারি নাই।’