বাংলাদেশের আন্দোলন-সংগ্রামের সময় সহিংসতা ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনা তদন্তে সহায়তা করতে জাতিসংঘ প্রস্তুত বলে জানিয়েছে। গতকাল জাতিসংঘের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের ডেপুটি মুখপাত্র ফারহান হক এসব কথা বলেন। এ ছাড়া বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর ও ধর্মীয় উপাসনালয়ে হামলার রিপোর্টের বিষয়েও নিজেদের অবস্থান জানিয়েছে জাতিসংঘ। ফারহান হক বলেছেন, জাতিসংঘ যে কোনো ধরনের জাতিভিত্তিক আক্রমণ বা বর্ণভিত্তিক উসকানির বিরুদ্ধে। ব্রিফিংয়ে এক সাংবাদিক অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের শপথ নেওয়ার বিষয়ে জানতে চান। তিনি বলেন, বাংলাদেশে মুহাম্মদ ইউনূস অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নিয়েছেন। এ বিষয়ে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের কোনো মন্তব্য আছে? জবাবে মহাসচিবের উপ-মুখপাত্র বলেন, আপনি শুনেছেন, সরকার গঠনের অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রক্রিয়ার জন্য আমাদের আশা সম্পর্কে আমরা কথা বলেছি এবং অবশ্যই আমরা সেই আশা বজায় রেখেছি। জনসাধারণের মধ্যে সহিংসতা হ্রাস এবং বৃহত্তর সংযমের যে কোনা ইঙ্গিতও ভালো জিনিস। পরে এক সাংবাদিক বাংলাদেশে হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিষয়ে মহাসচিবের কোনো প্রতিক্রিয়া বা বক্তব্য আছে কি না জানতে চান। জবাবে ডেপুটি মুখপাত্র বলেন, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে বাংলাদেশে যে সহিংসতা ঘটছে তা বন্ধ করা হয়েছে বলে আমরা নিশ্চিত করতে চাই। অবশ্যই, আমরা যে কোনো জাতিভিত্তিক আক্রমণ বা সহিংসতার জন্য বর্ণভিত্তিক উসকানির বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছি।
বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেওয়ার পর মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস কি মুহাম্মদ ইউনূসকে অভিনন্দন জানিয়েছেন, বা তাঁর সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন কি না জানতে চাইলে ফারহান হক বলেন, তিনি তাঁর সঙ্গে কথা বলেননি, তবে বাংলাদেশের আবাসিক সমন্বয়কারী ওই শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এবং অবশ্যই তিনি ও তাঁর দল শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর নিশ্চিত করার প্রক্রিয়াটিকে এগিয়ে নিতে সক্রিয় ছিলেন। পৃথক প্রশ্নে আরেক সাংবাদিক জানতে চান, গত কয়েক সপ্তাহ বা তারও বেশি সময়ে সরকার পতনের আন্দোলনের সময় দমনপীড়নের কারণে বাংলাদেশে শত শত লোক নিহত হয়েছেন এবং গত কয়েক সপ্তাহে যারা আহত হয়েছেন তাদের মধ্যে কিছু ব্যক্তি জাতিসংঘকে তদন্তের অংশ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। এ বিষয়ে আপনার প্রতিক্রিয়া কী? জবাবে উপ-মুখপাত্র ফারহান হক বলেন, নতুন সরকার গঠিত হলে আমরা তাদের কাছ থেকে কী ধরনের আনুষ্ঠানিক অনুরোধ পাই সেটি আমরা দেখব। তবে আমরা অবশ্যই বাংলাদেশের সরকার ও জনগণকে যে কোনো উপায়ে সহায়তা ও সমর্থন করতে প্রস্তুত রয়েছি যা তারা প্রয়োজন মনে করবে।