ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে লাশ খালাসের ক্ষেত্রে ‘পুলিশ কেস’ দেখিয়ে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মেডিকেল টিম। গতকাল রাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মাহিন সরকার ও মেডিকেল টিমের সদস্য নাহিদা বুশরাসহ উপস্থিত নেতারা এ অভিযোগ করেন।
তারা জানান, মেডিকেলের নতুন ভবনের মর্গের ক্লিনার মো. খোকন লাশ খালাসের ক্ষেত্রে মৃত্যু সনদের ওপর ‘পুলিশ কেস’ দেখিয়ে মৃতের আত্মীয়দের কাছে জনপ্রতি ১০ হাজার টাকা দাবি করছেন। টাকা না দিলে থানা থেকে অনুমোদন নিয়ে আসার কথা বলে হয়রানি করা হয় বলেও জানান তারা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মাহিন সরকার জানান, এখন দেশে কোনো পুলিশের কার্যক্রম নেই। তবুও কেন পুলিশের নামে স্বাক্ষর করা হলো? তারা এভাবে লাশ আটকে রেখে ব্যবসা করছে।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার দেয়াল থেকে পড়ে আহত হন শাহজালাল নামে মিরপুরের এক বাসিন্দা। গতকাল ঢাকা মেডিকেলের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তবে তার লাশ নিতে গেলে খোকন ১০ হাজার টাকা দাবি করেন বলে অভিযোগ করেন মৃতের আত্মীয় মো. ফারুক। পরে এক ডাক্তারের মাধ্যমে যোগাযোগ করলে খোকন ৮ হাজার টাকায় রাজি হন বলেও জানান তিনি।
এদিকে ৫ আগস্ট যশোরে আন্দোলনের সময় একটি ভবনে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। ভবনে আটকা পড়ে দগ্ধ হন সাকিব (১৭) নামে এক শিক্ষার্থী। গতকাল ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে তিনি মারা যান। সাকিবের বাবা আলাউদ্দিন জানান, তার কাছ থেকেও লাশ খালাসের জন্য ১০ হাজার টাকা চেয়েছেন খোকন। তবে তিনি দিতে রাজি হননি। এ দুটি লাশের মৃত্যসনদে ‘পুলিশ কেইস’ উল্লেখ করে একটি সিল মারা হয়েছে। কোনো কারণ ছাড়াই মৃত্যুসনদে এমন সিল মারা হয়েছে বলে দাবি করেছেন মৃতের আত্মীয়রা।
তবে ক্লিনার খোকন এসব কথা অস্বীকার করে বলেন, মর্গের বাইরের কেউ এভাবে টাকা চাইতে পারে না।
তাতক্ষণিক বিষয়টি হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল আসাদুজ্জামানকে অবহিত করেন শিক্ষার্থীরা। এদিকে শিক্ষার্থীরা সেনাবাহিনীকে ঘটনাটি অবহিত করলে সেনাবাহিনীর সদস্যরা এসে খোকন ও মর্গের সর্দারকে আটক করেন এবং আনসারের হেফাজতে দেন।