ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) শেখ হাসিনা হলের এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ওই হলের এক আয়া ও তার মেয়েকে যৌন হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নারী ১৯ ডিসেম্বর বিচার চেয়ে হল প্রাধ্যক্ষ বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযুক্ত কর্মকর্তা আবদুর রাজ্জাক ওই হলের সহকারী রেজিস্ট্রার। ভুক্তভোগী রোজিনা খাতুন অভিযুক্তের অফিসে দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে আয়ার কাজ করেন। ভুক্তভোগী লিখিত অভিযোগে বলেন, স্বামীর মৃত্যুর পর তিনি ২০১৪ সাল থেকে দুই মেয়েকে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ হাসিনা হলে কাজ করছেন। এরপর থেকে বিভিন্ন সময়ে অভিযুক্ত আবদুর রাজ্জাক তাকে কুপ্রস্তাবসহ তার মেয়েদের সঙ্গে অবৈধ মেলামেশার জন্য বাড়িতে যাওয়ার প্রস্তাব দেন। তার প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তিনি ভুক্তভোগীকে কাজ থেকে বের করে দেওয়াসহ প্রাণনাশের হুমকি দেন।
২০২১ সালে হলে তার ছোট মেয়েকে একা পেয়ে অভিযুক্ত রাজ্জাক তার শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর জায়গায় হাত দেওয়ার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ করেন রোজিনা। তবে লোকলজ্জার ভয়ে এবং অভিযুক্ত প্রভাবশালী হওয়ায় প্রতিবাদ না করে বিষয়টি গোপন রাখেন তিনি। সর্বশেষ গত ১১ ডিসেম্বর দুপুরে হলে কাজ করার সময় সুযোগ পেয়ে তাকে অবৈধ মেলামেশা করার জন্য কুপ্রস্তাব দেন রাজ্জাক। এ সময় রোজিনা কৌশলে তার কবল থেকে বের হয়ে এসে বিষয়টি তার আস্থাভাজন ছাত্রীদের জানান।
ভুক্তভোগী রোজিনা খাতুন বলেন, ‘হলে কাজ করার সময় থেকেই তিনি আমাকে ও আমার মেয়েদের দিয়ে তার অবৈধ যৌন লালসা পূরণের চেষ্টা করেন। তার প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় সব সময় আমার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করতেন। একপর্যায়ে আমার মেয়ের প্রতিও তার কুনজর পড়লে আমার মেয়ে ভয়ে তার সামনে যেত না। আমি মেয়েদের নিয়ে অস্বস্তিকর অবস্থায় দিনাতিপাত করছি। আমি তার বিচার চাই।’ এ বিষয়ে অভিযুক্ত আবদুর রাজ্জাক বলেন, এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন অভিযোগ। আমি একসময় জাসদ ছাত্রলীগ করতাম। আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে কেউ এটা করে থাকতে পারে। এ বিষয়ে শেখ হাসিনা হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. এ কে এম শামছুল হক ছিদ্দিকী বলেন, ‘আমি গতকাল লাস্ট আওয়ারে অভিযোগটা পেয়েছি। এজন্য বিষয়টি নিয়ে কোনো কাজ করার সুযোগ পাইনি। আমরা হল বডি বসে বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত নেব। প্রয়োজনে তদন্ত কমিটি করা হবে।’