টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশের আহ্বায়ক ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, যে শিক্ষাব্যবস্থার ভিতর দিয়ে আমলা এবং শাসকগোষ্ঠী গড়ে উঠেছে, এদের ভিতরে যারা কারিগরি এবং বৃত্তিমূলক শিক্ষা নিয়ে আসছে তাদের প্রতিনিধিত্ব অনেক কম। তারা কিন্তু সেই ক্ষমতার লড়াইয়ে হেরে যাচ্ছে। সেহেতু এখানে ক্ষমতার একটা লড়াই চলছে। কোন ধরনের শিক্ষা পাব এটা হলো শেষ বিচারে। কিন্তু দেশের ভিতরে ক্ষমতার ভারসাম্যের একটা লড়াই প্রকাশ পাচ্ছে। কারিগরি শিক্ষার্থীদের পক্ষে আমাদের দাঁড়াতে হবে। গতকাল বাংলাদেশে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা, বর্তমান পরিস্থিতি ও সংস্কার চিন্তা শীর্ষক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন। রাজধানীর ধানমন্ডিতে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ কার্যালয়ে এ ব্রিফিংয়ের আয়োজন করে এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্লাটফর্ম, বাংলাদেশ। এতে বক্তব্য দেন সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান। উপস্থিত ছিলেন সিপিডির তারান্নুম জিনান, গবেষণা সহযোগী শৌর্য তালুকদার ও নাইমা জাহান তৃষা, সংলাপ সহযোগী রিফাত বিন আওলাদ এবং রিসার্চ ইন্টার্ন মালিহা রহমান। দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, শ্বেতপত্র ও টাস্কফোর্সের সুপারিশ আমলে না নেওয়াটা কষ্টদায়ক। সরকারকে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার প্রতি যথাযথ মনোযোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, দেশে বৈষম্যবৃদ্ধির সূতিকাগার প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থা। অথচ ছাত্র আন্দোলনে ক্ষমতায় আসা এই সরকার এখন পর্যন্ত একটি শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠন করতে পারেনি, যা বড় ব্যর্থতা। কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার প্রতি বৈষম্যমূলক নীতির পরিবর্তন করা উচিত। এই ক্ষেত্রগুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত। ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, সংস্কার আসলে কতটুকু হচ্ছে তার চেয়ে বড় ব্যাপার হলো আগামীর রাজনৈতিক ইশতেহারে কারিগরি শিক্ষার ব্যাপারে স্পষ্ট আলাপ থাকতে হবে। শুধু শিক্ষাক্ষেত্রে মোট জিডিপির ৩ থেকে ৫ শতাংশ বরাদ্দ থাকবে এমন নয়। কারিগরি শিক্ষার বৃত্তি, যন্ত্রাংশ ক্রয় ও অবকাঠামো উন্নয়নে কত টাকা ব্যয় করা হবে সেটি স্পষ্টভাবে জানাতে হবে। তিনি বলেন, পাঠ্যসূচি থেকে শুরু করে শিক্ষকদের আধুনিকায়ন করতে হবে। প্রয়োজনে নতুন শিক্ষক নিয়োগ করতে হবে। পুরোনো শিক্ষকদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য প্রশিক্ষণ দিতে হবে। ২০৩০ সালের মধ্যে মানসম্পন্ন কারিগরি শিক্ষা ও বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণে বৃহত্তর এবং অধিক ন্যায়সঙ্গত প্রবেশাধিকার সুনিশ্চিত করা টেকসই উন্নয়নের আওতায় অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সূচক। কিন্তু এ ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে আমরা অনেক পিছিয়ে আছি।