হঠাৎ করেই চট্টগ্রামের হাসপাতালগুলোতে রোগীর চাপ বৃদ্ধি পেয়েছে। রোগীরা জ্বর, ঘাম থেকে ঠান্ডাজনিত, সর্দি-কাশি, ডায়রিয়া, চর্মসহ নানা রোগ নিয়ে ভর্তি হচ্ছেন। চিকিৎসকরা বলছেন, হঠাৎ করে তীব্র গরম বাড়ায় মৌসুমি নানা রোগ বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধরা আক্রান্ত হচ্ছেন বেশি
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কয়েকদিন ধরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল, চট্টগ্রাম ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের মেডিসিন, শিশু, হৃদরোগ বিভাগে রোগীর ভিড় বাড়ছে। চমেক হাসপাতালের ১৩, ১৪ ও ১৬ নম্বর মেডিসিন রোগীর চাপ বৃদ্ধি হওয়ায় বারান্দায় থাকতে হচ্ছে রোগীদের। হাসপাতালে হিট স্ট্রোক, ডিহাইড্রেশন এবং উচ্চ রক্তচাপজনিত রোগী বেশি ভর্তি হচ্ছেন। চমেক হাসপাতালের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে গত সপ্তাহে দুজন শ্রমিক হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছিলেন। তবে তীব্র তাপদাহে শিশু ও বয়স্করা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে আছেন বলে জানিয়েছে চিকিৎসকরা।
পতেঙ্গার আবহাওয়া অফিস জানায়, গত রবিবার চট্টগ্রামে তাপমাত্রা ছিল ৩৫ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৮২-৮৪ শতাংশ, যা স্বাভাবিক থাকে ৬০-৭০ শতাংশ। বাতাসের গতিবেগ ছিল ৮ থেকে ১০ নটিক্যাল মাইল। গতকাল তাপমাত্রা ছিল ৩৪ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল সন্ধ্যায় আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৬৮ শতাংশ। তবে গতকাল বিকালে আকাশে মেঘের উপস্থিতি দেখা গেছে। ফলে বৃষ্টির পূর্বাভাস মিলেছে।
চট্টগ্রাম ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপাধ্যক্ষ শিশু বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. মুসলিম উদ্দিন সবুজ বলেন, গরমে শিশুদের জ্বর বেশি হচ্ছে। সঙ্গে আছে পানিবাহিত নানা রোগ, ডায়রিয়া, অতিরিক্ত ঘামের কারণে চর্ম রোগ, শিশুদের হঠাৎ প্রস্রাব বন্ধ হয়ে যাওয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। বিশেষত অনেক স্কুল টিনশেডের। আবার অনেকে বাইরে রোদে খেলাও করছে। এতে পানিশূন্যতা দেখা দেয়। তাই এখন শিশুদের বেশি করে পানি খাওয়ানো, ঘাম মুচে দেওয়া, বাইরের খাবার সম্পূর্ণ বন্ধ রাখা এবং নিয়মিত গোসল করাতে হবে।
মা ও শিশু হাসপাতালের শিশু স্বাস্থ্য বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. ফাহিম হাসান রেজা বলেন, বর্তমানে জ্বর, সর্দি, ডায়রিয়ার রোগী বাড়ছে। গতকাল শিশুস্বাস্থ্য বিভাগে ২১৫ জন রোগী ভর্তি ছিল। আউটডোরেও বাড়ছে রোগী। এমনিতে প্রতিদিন ১৫০ জন চিকিৎসা নিলেও কয়েকদিন ধরে ২০০ পর্যন্ত শিশু রোগী চিকিৎসা নিচ্ছে।
এক সপ্তাহ আগেও আমি বহির্বিভাগে দুই ঘণ্টায় ৮-১০ জন রোগী দেখলেও গতকাল দেখেছি ১৮ জন। তাই শিশুদের অবশ্যই বুকের দুধ পান করানো, আরামদায়ক পাতলা কাপড় পড়ানো ও ডাবের পানি পান করাতে হবে।
চমেক হাসপাতালের শিশু বিভাগের কনসালটেন্ট ডা. খোকন চৌধুরী বলেন, শিশুদের এখন গরমের কারণে শরীরে ফোসকা ওঠা, নানা ধরনের চর্ম রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। সঙ্গে ভাইরাসজনিত জ্বর-ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। তাই এখন শিশুদের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।